আপনারা কথা রাখেননি, এ লড়াই চলবে : সারজিস আলম

কোটা সংস্কার অন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়কারী সারজিস আলম সরকারকে উদ্দেশ্য করে এক ফেসবুক পোস্টে বলেছেন, ‘কথা দিয়েছিলেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের থেকে কাউকে গ্রেপ্তার করবেন না, মামলা দিয়ে হয়রানি করবেন না৷ আপনারা কথা রাখেননি৷ এ লড়াই চলবে।’

আজ বৃহস্পতিবার (১ আগস্ট) বিকেলে সারজিস আলম তার ফেসবুক পোস্টে একথা বলেন। এক ঘণ্টায় তার এই পোস্টটিতে ৫৯ হাজার লাইক, ১০ হাজার শেয়ার ও চার হাজার ২০০ মন্তব্য পড়ে।

সারজিস আলমের ফেসবুক পোস্টটি হুবহু তুলে দেওয়া হলো।

সারজিস বলেন, “কথা দিয়েছিলেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের থেকে কাউকে গ্রেফতার করবেন না, মামলা দিয়ে হয়রানি করবেন না৷ আপনারা কথা রাখেননি৷
আপনারা আমার বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের উপর আঘাত করেছেন৷ সারাদেশে আমার স্কুল কলেজের ভাইবোনদের উপর লাঠিচার্জ করেছেন৷ যাকে ইচ্ছা তাকে জেলে পাঠিয়েছেন৷ আন্দোলনকারীকে খুঁজে না পেলে বাসা থেকে ভাইকে তুলে নিয়েছেন, বাবাকে হুমকি দিয়েছেন! মাশরুর তার উদাহরণ৷

যারা একটিবারের জন্যও এই আন্দোলনে এসেছে তারা শান্তিতে ঘুমাতে পারে না, গ্রেফতারের ভয়ে থাকে৷ এমন অনেকে আছে যাদের পরিবার এখনো তাদের খোঁজ পায়নি৷ এমন তো হওয়া উচিৎ ছিল না!

কোথায় মহাখালীর সেতু ভবন আর কোথায় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়! অথচ আপনারা জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সমন্বয়ক আরিফ সোহেলকে মহাখালীর সেতুভবনে হামলার জন্য গ্রেফতার করে রিমান্ডে নিলেন৷ সাথে আছে আসিফ মাহতাব স্যার, মাশরুর সহ আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী অসংখ্য শিক্ষার্থী৷

রিক্সা থেকে নামিয়ে প্রিজন ভ্যানে তুলছেন, বাসা থেকে তুলে নিয়ে মামলা দিয়ে কারাগারে পাঠিয়েছেন৷ আমার বোনদের রাস্তায় ফেলে পিটিয়েছেন৷ কি ভাবছেন? এভাবেই সবকিছু শেষ হয়ে যাবে?

৬ দিনের ডিবি হেফাজত দিয়ে ৬ জনকে আটকে রাখা যায় কিন্তু এই বাংলাদেশের পুরো তরুণ প্রজন্মকে কিভাবে আটকে রাখবেন? দুর্নীতি, লুটপাট, অর্থপাচার, ক্ষমতার অপব্যবহার করে যে ক্ষোভ সৃষ্টি করেছেন প্রতিনিয়ত সেগুলো কিভাবে নিবৃত করবেন?

পুলিশ ভাইদের উদ্দেশ্যে একটা বলি৷ এ দেশের মানুষের ক্ষোভ আপনাদের উপর নয়, পুলিশের উপর নয়৷ এই ক্ষোভ আপনার গায়ের ওই পোশাকটার উপর৷ যে পোশাকটাকে ইউজ করে বছরের পর বছর আপনাদের দিয়ে এ দেশের অসংখ্য মানুষকে দমন-পীড়ন করা হয়েছে, অত্যাচার-নির্যাতন করা হয়েছে, জেল আর আদালতের প্রাঙ্গণে চক্কর কাটানো হয়েছে, সেই পোশাকটার উপর৷ ওই পোশাকটা ছেড়ে আসুন আমাদের সাথে, বুকে টেনে নিব৷

এ পথ যেহেতু সত্যের পথ, ন্যায়ের পথ, তাই যেকোনো কিছু মোকাবেলা করতে আমরা বিন্দুমাত্র বিচলিত নই৷ যতদিন না এ বাংলাদেশ আন্দোলনকারীদের নিরাপদ আশ্রয়স্থল হয়ে উঠছে; গণগ্রেফতার, জুলুম, নির্যাতন বন্ধ হচ্ছে ; ততদিন এ লড়াই চলবে৷”

Share this news on:

সর্বশেষ

img
সমুদ্রে পাওয়া গেল ৮ ধরনের ভারী খনিজ Sep 18, 2025
img
‘ডাইরেক্ট থ্রোতে’ মাথায় বল লেগে মাঠের বাইরে আম্পায়ার Sep 18, 2025
img

বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে দিল্লিতে আলোচনা সভা

‘বাংলাদেশের এখনকার পরিস্থিতি আমাদের মানতে হবে, বুঝতে হবে’ Sep 18, 2025
img
ঢাবির পরিবহনে ডিজিটাল রূপান্তর, চালু হচ্ছে বাস ট্র্যাকিং অ্যাপ Sep 18, 2025
img
অস্কারের সমালোচনায় এমি পোলার Sep 18, 2025
img
আলভারেজ বিতর্কের পর ফুটবলে পেনাল্টির নিয়মে বড় পরিবর্তন Sep 18, 2025
img
৩ বছর পরে হাবিবের জন্য নতুন গান লিখলেন অলিক Sep 18, 2025
img
বায়ার্নকে জেতানো ম্যাচে রেকর্ড গড়লেন কেইন Sep 18, 2025
img
কানাডায় খালিস্তানপন্থিদের ভারতীয় দূতাবাস দখলের হুমকি Sep 18, 2025
img
কলকাতায় বাধ্যতামূলক করা হলো বাংলা সাইনবোর্ড Sep 18, 2025
img
বায়ুদূষণে শীর্ষে লাহোর, ঢাকার অবস্থান কত? Sep 18, 2025
img
রোনালদোকে ছাড়াই আল-নাসরের দুর্দান্ত জয় Sep 18, 2025
img
‘নারী সালমান খান’ হতে চান ধনশ্রী ভার্মা Sep 18, 2025
img
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তায় যুগান্তকারী সমঝোতা যুক্তরাষ্ট্র-যুক্তরাজ্যের Sep 18, 2025
img
নাসুমের প্রতি সহানুভূতি প্রকাশ করলেন বুলবুল Sep 18, 2025
img
হিফজুল কোরআন প্রতিযোগিতায় লিবিয়া যাচ্ছেন বাংলাদেশি প্রতিনিধি Sep 18, 2025
img
রাইস ব্রান অয়েল রফতানিতে নতুন শুল্ক, ২০% হারে নিয়ন্ত্রণ Sep 18, 2025
img
নিজের বিরুদ্ধে অভিযোগ নিয়ে মুখ খুললেন আশিস কাপুর Sep 18, 2025
img
ভোলায় পুলিশের নামে চাঁদাবাজি, ২ যুবক গ্রেপ্তার Sep 18, 2025
img
হানিয়ার সঙ্গে দেখা করার স্বপ্ন এখন হাতের নাগালে! Sep 18, 2025