লড়াই করা হলো না নুসরাতের

মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফি দুর্বৃত্তদের আগুনে দগ্ধ হওয়ার আগে অধ্যক্ষের যৌন নিপীড়নের কথা উল্লেখ করে বান্ধবীদের উদ্দেশে একটি চিঠি লিখেছিলেন। চিঠির শিরোনাম তিনি লিখেছিলেন ‘আমি লড়ব শেষ নিশ্বাস পর্যন্ত’। কিন্তু তার আর লড়াই করা হলো না।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে চারদিন চিকিৎসাধীন থাকার পর বুধবার রাতে না ফেরার দেশে চলে যান নুসরাত।

৬ এপ্রিল ফেনীর সোনাগাজী পৌর এলাকার ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসা পরীক্ষাকেন্দ্রের ভেতর নুসরাতের গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে হত্যার চেষ্টা চালায় দুর্বৃত্তরা।

ওই মাদ্রাসা থেকেই আলিম পরীক্ষা দিচ্ছিলেন নুসরাত। মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওলানা সিরাজ উদ দৌলার বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগে দায়ের করা মামলা তুলে না নেয়ায় দুর্বৃত্তরা তার গায়ে আগুন ধরিয়ে দেয়।

দগ্ধ হওয়ার আগে অধ্যক্ষের যৌন নিপীড়নের কথা উল্লেখ করে নুসরাত তার বান্ধবীদের উদ্দেশে একটি চিঠি লিখেছিলেন। পুলিশ সেই চিঠিও উদ্ধার করেছে।

চিঠিতে দিন-তারিখ লেখা নেই। তবে তদন্তকারী কর্মকর্তারা বলছেন, বিষয়বস্তু বিবেচনায় এটি কয়েকদিন আগের লেখা বলে মনে হচ্ছে। ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসায় অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলার যৌন নিপীড়নের শিকার হয়েই ওই ছাত্রী চিঠিটি লিখেন।

চিঠিতে অধ্যক্ষের যৌন নিপীড়নের ঘটনার বর্ণনা দিয়ে নুসরাত তার বান্ধবীদের উদ্দেশে বলেছিলেন, আমি লড়ব শেষ নিঃশ্বাস পর্যন্ত। আমি প্রথমে যে ভুলটা করেছি আত্মহত্যা করতে গিয়ে। সেই ভুলটা দ্বিতীয়বার করব না। মরে যাওয়া মানে তো হেরে যাওয়া। আমি মরব না, আমি বাঁচব। আমি তাকে শাস্তি দেবো। যে আমায় কষ্ট দিয়েছে। আমি তাকে এমন শাস্তি দেবো যে তাকে দেখে অন্যরা শিক্ষা নেবে। আমি তাকে কঠিন থেকে কঠিনতম শাস্তি দেবো। ইনশাআল্লাহ।’

 

টাইমস/জেডটি

Share this news on: