প্রবাসী আয়ে ডলারের দাম নিয়ে এক ধরনের অস্থিরতা চলছে। এই অস্থিতিশীলতা রোধে ডলার কেনার ক্ষেত্রে বিভিন্ন বিদেশি এক্সচেঞ্জ হাউসকে ডলারের দাম ১২০ টাকার বেশি না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দেশের সরকারি-বেসরকারি ব্যাংকগুলো।
গত বৃহস্পতিবার (২৯ আগস্ট) অনলাইনে অনুষ্ঠিত সরকারি–বেসরকারি ব্যাংকের কোষাগার প্রধানদের এক সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
ব্যাংক সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, গত বৃহস্পতিবার বিকেলে অনুষ্ঠিত এই সংক্রান্ত সভায় সরকারি–বেসরকারি ব্যাংকের ৪২ জন কোষাগার প্রধানেরা অংশ নিয়েছেন। সভাটির মূল লক্ষ্য ছিলো–দেশে ডলার মূল্যের অস্থিরতা কমিয়ে স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনতে করণীয় ঠিক করা।
সভায় উপস্থিত সব ব্যাংকের কোষাগার প্রধানেরা প্রবাসী আয়ের জন্য প্রতি ডলারের দাম সর্বোচ্চ ১২০ টাকা দেওয়ার বিষয়ে একমত হন। সভায় যাঁরা অনুপস্থিত ছিলেন, তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করে এই সিদ্ধান্তের বিষয়টি জানা গেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের এক প্রতিবেদন অনুসারে, গত বুধবার (২৮ আগস্ট) আন্তব্যাংক লেনদেনের ক্ষেত্রে গ্রাহকের কাছে প্রতি ডলার বেচা হয় ১২০ টাকায়।
কোষাগার প্রধানদের গৃহীত নতুন সিদ্ধান্ত কার্যকর হলে প্রবাসী আয় ও আন্তব্যাংক লেনদেনের ক্ষেত্রে ডলারের দাম একই হবে।
জানা যায়, এতদিন বিদেশি বিভিন্ন এক্সচেঞ্জ হাউস থেকে প্রবাসী আয় সংগ্রহ করার ক্ষেত্রে একেক ব্যাংক একেক দামে প্রবাসী আয়ের ডলার কিনে আসছিল।
এই সুযোগ নিয়ে বেশি লাভের আশায় এক্সচেঞ্জ হাউসগুলো প্রবাসী বাংলাদেশিদের কাছ থেকে ডলার কিনে তা ধরে রাখত। বেশি আয় করতে ব্যাংক তাদের কাছ থেকে উচ্চ দামে ডলার সংগ্রহ করত। এর ফলে কোনো কোনো ব্যাংক প্রচুর প্রবাসী আয় পাচ্ছিল। আবার কেউ একেবারেই প্রবাসী আয় পাচ্ছিল না। এতে বিদেশি এক্সচেঞ্জ হাউসগুলো প্রবাসী আয়ের ক্ষেত্রে এক ধরনের মনোপলি বাজার গড়ে তোলে। এসব কারণে এদের হাতে জিম্মি হয়ে পড়ে অধিকাংশ ব্যাংক। এমন পরিস্থিতিতে এসব প্রতিষ্ঠানগুলোর এই মনোপলি ব্যবসা বন্ধ করতে নতুন এই উদ্যোগ নিয়েছেন দেশের সরকারি–বেসরকারি ব্যাংকের কোষাগার প্রধানেরা।
চলতি আগস্টের প্রথম ২৮ দিনে দেশে প্রবাসী আয় এসেছে ২০৭ কোটি ১০ লাখ ডলার। ২০২৩ সালের আগস্ট মাসের একই সময়ে প্রবাসী আয় এসেছিল ১৪৩ কোটি ১০ লাখ ডলার।