নুসরাত হত্যার অন্যতম আসামি নুর উদ্দিন গ্রেপ্তার

ফেনীর সোনাগাজী উপজেলায় অগ্নিদগ্ধ মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফি হত্যা মামলার অন্যতম আসামি নুর উদ্দিনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। শুক্রবার তাকে ময়মনসিংহের ভালুকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।

শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে ভালুকার সিডস্টোর এলাকা থেকে ভালুকা মডেল থানা পুলিশের সহযোগিতায় তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) ময়মনসিংহ ব্রাঞ্চ।

থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফিরোজ তালুকদার জানান, নুর উদ্দিনকে গ্রেপ্তার করে পিবিআই কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

নুসরাত জাহানকে পুড়িয়ে মারার ঘটনায় অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলার ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত নুর উদ্দিন ও অপর আসামি শাহাদাত হোসেন ওরফে শামীম সরাসরি জড়িত বলে বিভিন্ন মাধ্যম থেকে অভিযোগ পাওয়া গেছে। তারা দুজনই রয়েছেন সন্দেহের কেন্দ্রবিন্দুতে। তাদের ধরতে পারলেই মূল রহস্য বের হবে বলে এলাকার মানুষ ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের ধারণা। মামলাটির তদন্তের দায়িত্ব নিয়ে সন্দেহভাজনদের ধরতে বুধবার রাত থেকে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) অভিযান শুরু করেছে। আজ ময়মনসিংহের ভালুকা থেকে নুর উদ্দিনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তবে শামীম এখনো পলাতক।

মাদ্রাসার শিক্ষক-কর্মচারী এবং স্থানীয় লোকজনের জোর ধারণা, এ দুজন ধরা পড়লেই নুসরাত জাহানের খুনিদের শনাক্ত করা সহজ হবে। ৫ এপ্রিল রাতে দুজনকে ও ৬ এপ্রিল ঘটনার দিন সকালে নুর উদ্দিনকে মাদ্রাসার মূল ফটকে দেখা গেছে বলে একাধিক প্রত্যক্ষদর্শী জানিয়েছেন। তারা দুজনই এ মামলার দ্বিতীয় ও তৃতীয় নম্বর আসামি।

নুসরাতের শ্লীলতাহানির মামলায় ২৭ মার্চ অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলা গ্রেপ্তার হলে তার মুক্তির দাবিতে ‘মুক্তি পরিষদ’ নামে একটি কমিটি গঠন করা হয়। এ কমিটির আহ্বায়ক হন নুর উদ্দিন এবং যুগ্ম-আহ্বায়ক হন শাহাদাত হোসেন। তাদের নেতৃত্বেই সিরাজ উদ দৌলার মুক্তির দাবিতে ২৮ ও ৩০ মার্চ উপজেলা সদরে দুই দফা মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচি হয়। অভিযোগ রয়েছে যৌন হয়রানির মামলার পরিপ্রেক্ষিতে এরাই নুসরাত ও তার স্বজনদের হুমকি দিয়ে আসছিলেন।

থানায় নুসরাতের কান্নার ভিডিও ভাইরাল 

অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলার মুক্তির দাবিতে মানববন্ধনে নূর ঊদ্দিন

৬ এপ্রিল ফেনীর সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসার ছাত্রী নুসরাত জাহান রাফি পরীক্ষা দিতে গেলে দুর্বৃত্তরা তার গায়ে আগুন লাগিয়ে দেয়। গুরুতর আহত অবস্থায় ওই দিন রাতে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। ১০ এপ্রিল রাত সাড়ে নয়টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে নুসরাত জাহান রাফি মারা যান।

এর আগে গত ২৭ মার্চ মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলার বিরুদ্ধে যৌন নিপীড়নের অভিযোগে মামলা করেন নুসরাতের মা। এ মামলা তুলে নেয়া এবং অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে নুসরাত যা অভিযোগ করেছিলেন তা সব মিথ্যা— বলার জন্য চাপ দিতে থাকে দুর্বৃত্তরা। এতে নুসরাত ও তার পরিবার রাজি হয়নি। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে লাইফ সাপোর্টে যাওয়ার আগে নুসরাত চিকিৎসকদের কাছেও জবানবন্দি দেন।

 

 

টাইমস/এসআই

Share this news on: