জাতিসংঘের মহাসচিবকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করল ইসরায়েল

ইরানের হামলার নিন্দা না জানানোয় জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসকে ইসরায়েলে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ আজ বুধবার (২ অক্টোবর) গুতেরেসকে ‘পারসনা নন গ্রাটা’ ঘোষণা করেছে। অর্থাৎ জাতিসংঘ মহাসচিব হিসেবে তিনি যে কূটনৈতিক সুবিধা পান, সেটা দেবে না ইসরায়েল। ইসরায়েলি সরকার বলেছে, জাতিসংঘের ইতিহাসে ‘একটি কলঙ্ক’ হিসেবে স্মরণীয় হয়ে থাকবেন আন্তোনিও গুতেরেস।

আজ দ্য গার্ডিয়ান ও বিবিসিসহ বিভিন্ন গণমাধ্যম এমন খবর প্রকাশ করেছে।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ঘোষণা দিয়ে ইসরায়েলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসরায়েল কাটৎস বলেন, ‘আজ আমি জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসকে ইসরায়েলে পারসনা নন গ্রাটা ঘোষণা করছি এবং তাঁর ইসরায়েলে প্রবেশ নিষিদ্ধ করলাম। কোনো ব্যক্তি ইসরায়েলে ইরানের ঘৃণ্য হামলার দ্ব্যর্থহীনভাবে সমালোচনা করতে না পারলে, যেটা বিশ্বের বেশির ভাগ দেশ করেছে, তিনি ইসরায়েলের মাটিতে পা রাখতে পারেন না।’

গেল বছর ৭ অক্টোবর হামাসের আক্রমণের প্রতিক্রিয়ায় ইসরায়েল গাজায় একটি সামরিক অভিযান শুরু করে, তখন প্রায় ১২০০ জন নিহত হয় এবং ২৫১ জনকে জিম্মি করা হয়।

ইসরায়েলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘জাতিসংঘের এই মহাসচিব এখন পর্যন্ত হামাস ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে যে হত্যাকাণ্ড ও যৌন নৃশংসতা চালিয়েছে, তার নিন্দা করেননি। তা ছাড়া হামাসকে সন্ত্রাসী সংগঠন ঘোষণারও কোনো পদক্ষেপ তিনি নেননি। আন্তোনিও গুতেরেস তাঁদের সঙ্গে থাকুক বা না থাকুক ইসরায়েল নিজেদের নাগরিকদের সুরক্ষা ও জাতীয় মর্যাদা সমুন্নত রাখতে কার্যক্রম অব্যাহত রাখবে।’

গত বছরের অক্টোবরে গুতেরেস বলেছিলেন, ‘আমি দ্ব্যর্থহীনভাবে ইসরায়েলে হামাসের ৭ অক্টোবরের ভয়াবহ ও নজিরবিহীন হামলার নিন্দা জানাচ্ছি।

কোনোভাবেই বেসামরিক নাগরিকদের বেপরোয়াভাবে হত্যা, আহত করা ও জিম্মি করার ন্যায্যতা প্রমাণ করা যায় না। সব জিম্মির সঙ্গে মানবিক আচরণ করতে হবে এবং অতি সত্বর তাঁদের নিঃশর্ত মুক্তি দিতে হবে।’

একই বক্তৃতায় গুতেরেস আরও বলেছেন, ‘এটা স্বীকার করা গুরুত্বপূর্ণ যে হামাসের হামলা শূন্য থেকে হয়নি। ফিলিস্তিনের মানুষ ৫৬ বছর ধরে দম বন্ধ হয়ে আসার মতো ইসরায়েলি দখলদারিতে রয়েছে।’ গুতেরেসের এই বক্তব্যে অনেক ইসরায়েলি ক্ষুব্ধ হন।

অপরদিকে হামাস পরিচালিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মতে, হামলার পর থেকে গাজায় ইসরায়েলের সামরিক অভিযানে এখন পর্যন্ত মোট ৪১,৬৮৯ জন নিহত হয়েছে। ফিলিস্তিনি শরণার্থীদের জন্য ইউএনআরডব্লিউএ-এর ভূমিকা নিয়েও ইসরায়েল ও জাতিসংঘের মধ্যে বিরোধ দেখা দিয়েছে। যদিও গত মাসে ফিলিস্তিনের পশ্চিম তীরে ইসরায়েলের প্রায় ছয় দশকের দখলদারির অবসান চেয়ে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের একটি প্রস্তাব গৃহীত হয়। প্রায় সব দেশ প্রস্তাবটির পক্ষে সমর্থন দেন।

Share this news on:

সর্বশেষ

img
‘পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি’ অবিলম্বে বাতিলের দাবি Dec 02, 2025
img
মরিসন-ওয়াকার থাকছেন ধারাভাষ্যে, শুরু হচ্ছে জাঁকজমকপূর্ণ বিপিএল Dec 02, 2025
img
কঠিন সময়েও সৎ থাকা জরুরি: দেব Dec 02, 2025
img
শ্রেয়াস আইয়ারকে ঘিরে প্রেমের গুঞ্জন উড়িয়ে দিলেন অভিনেত্রী ম্রুণাল ঠাকুর Dec 02, 2025
img
৮ থেকে ১২ ফেব্রুয়ারির মধ্যে জাতীয় নির্বাচন ও গণভোট Dec 02, 2025
img
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে বাধা দেওয়ার অভিযোগে জাককানইবির ১৬ শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা বহিষ্কার Dec 02, 2025
img
মায়ের মৃত্যুর পর অনধিকারচর্চায় ভেঙে পড়েছিলেন জাহ্নবী Dec 02, 2025
img
সাংবাদিক পরিচয় নয়, আচরণ দেখুন: জয়া বচ্চন Dec 02, 2025
img
খালেদা জিয়ার পরিস্থিতি অপরিবর্তিত থাকলে শিগগিরই দেশে ফিরবেন তারেক Dec 02, 2025
img
টি-টোয়েন্টিতে বিশ্বরেকর্ড গড়লেন তানজিদ তামিম Dec 02, 2025
img
সন্তানদের নয়, ধর্মেন্দ্র যাদের দিয়ে গেলেন কোটি টাকার সম্পত্তি! Dec 02, 2025
img
আধুনিক সমরাস্ত্রে সজ্জিত পেশাদার বাহিনী গড়ার প্রতিশ্রুতি সেনাপ্রধানের Dec 02, 2025
img
আয়ারল্যান্ডকে ১১৭ রানে অলআউট করল বাংলাদেশ Dec 02, 2025
img

জয়া আহসান

ঘুম থেকে উঠে মুখ না ধুয়ে চলে এসেছি Dec 02, 2025
img
এলপিজি গ্যাসের দাম বাড়ল ৩৮ টাকা Dec 02, 2025
img
৭ ডিসেম্বরের পর যেকোনো দিন তফসিল ঘোষণা : ইসি আনোয়ারুল Dec 02, 2025
img
রাশিয়া ও ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধের চুক্তি করবে, খুবই আশাবাদী যুক্তরাষ্ট্র Dec 02, 2025
img
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে আবারও ভুয়া শিক্ষার্থী আটক Dec 02, 2025
img
বাড়িভাড়া নির্ধারণে সুনির্দিষ্ট নীতিমালা করতে হাইকোর্টের রুল Dec 02, 2025
img
ফিফা আরব কাপে কাতারকে ১–০ গোলে হারিয়েছে ফিলিস্তিন Dec 02, 2025