প্রধান উপদেষ্টার কাছে বিএনপির পক্ষ থেকে নির্বাচনী রোড ম্যাপ চাওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
শনিবার (৫ অক্টোবর) অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সরকারি বাসভবন যমুনায় অনুষ্ঠিত সংলাপ শেষে বেরিয়ে সাংবাদিকদের এ কথা জানান তিনি।
মির্জা ফখরুল বলেন, প্রধান উপদেষ্টার কাছে নির্বাচনী রোড ম্যাপ চেয়েছি। এনআইডি কার্ড স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে নেওয়া বিষয়ক আইন বাতিল করতে বলেছি। এছাড়া সকল ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন বাতিল করতে বলেছি।
সকল ভুয়া নির্বাচনে জড়িতদের আইনের আওতায় আনার দাবিও প্রধান উপদেষ্টার সামনে তোলা হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, আগামী ৮ তারিখে অন্তর্বর্তী সরকারের দুই মাস হবে। এখন পর্যন্ত গত সরকারের আমলে, অর্থাৎ ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে তাদের দোসর হিসেবে যারা কাজ করেছে, লুটপাট, অনাচার, অত্যাচার, নির্যাতন ও গুম-খুনে যারা সহায়তা করেছে, তাদের বেশিরভাগই এখনও স্ব-স্ব পদে বহাল তবিয়তে আছে। অবিলম্বে তাদেরকে সরিয়ে নিরপেক্ষ কাউকে আনার কথা আমরা বলেছি। ৫৯ জেলা প্রশাসক কীভাবে নিয়োগ পেয়েছে এবং কীভাবে নিয়োগ হয়েছে তা জানতে চেয়েছি। একইসঙ্গে যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে, তাদের নিয়োগ বাতিল করে দিতে বলেছি।
তিনি বলেন, বিচারবিভাগের বিষয়ে খু্ব স্পষ্ট করে বলেছি, বিচার বিভাগের যে হাইকোর্ট বিভাগ, যেখানে এখন পর্যন্ত খুব একটা পরিবর্তন হয়নি। অথচ সেখানকার বেশিরভাগ নিয়োগই ছিল দলীয় ভিত্তিতে। এমন প্রায় ৩০ জন বিচারক বহাল তবিয়তে কাজ করছেন। এদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য আমরা বলেছি। দলকানা বিচারকদের অপসারণের কথা বলেছি।
মির্জা ফখরুল বলেন, প্রধান উপদেষ্টাকে বলা হয়েছে, যাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও হত্যার সুনির্দিষ্ট অভিযোগ আছে তাদেরকে যেন জামিন দেওয়া না হয়। সব গায়েবি ও মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের কথাও তোলা হয়েছে।
সাবেক মন্ত্রী-এমপিদের দেশত্যাগের ব্যাপারেও প্রধান উপদেষ্টাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়েছে জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, কিছু আমলা, সাবেক মন্ত্রী-এমপি দেশ থেকে পালিয়ে যাচ্ছে। কীভাবে পালিয়ে যাচ্ছে সেটা খতিয়ে দেখার কথা বলেছি। শেখ হাসিনা ভারতে আছেন। তাকে ফিরিয়ে আনার বিষয়টি নিয়ে ভারতের সঙ্গে আলোচনার তাগিদ দেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের মধ্যেও দুই-একজন আছেন, যারা গণঅভ্যুত্থান বিপ্লবের যে মূল স্পিরিট ব্যাহত করছে, তাদেরকে সরানোর কথা বলেছি।
বিএনপি মহাসচিব জানান, নির্বাচন অনুষ্ঠানেই অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছে বলে বিএনপিকে আশ্বস্ত করেছেন প্রধান উপদেষ্টা।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ছাড়াও বিএনপি প্রতিনিধি দলে ছিলেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মির্জা আব্বাস, ড. আব্দুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান ও সালাহউদ্দিন আহমেদ।