বর্তমান সময়ে প্রায় সবাই কোনো না কোনো কারণে অসুখী বোধ কিংবা অবসাদে ভোগেন। যা মাত্র কয়েকদিন স্থায়ী হয়ে আবার আপনা আপনিই দূর হয়। তবে ডিপ্রেশন বা বিষণ্নতা ভিন্ন। এটি আপনার দৈনন্দিন জীবনের সঙ্গে জুড়ে থাকে এবং আপনার পছন্দের জিনিস ও স্বাভাবিক কাজকেও কঠিন করে তোলে।
বিষন্নতায় ভোগা থেকে অনেক সময় মানসিকভাবে বড় ধরনের আঘাত পাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। এ জন্য বিষণ্নতা পেয়ে বসলে তা থেকে পরিত্রাণ প্রয়োজন। এ অবস্থায় অনেকেই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের দ্বারস্থ হয়ে থাকেন। তবে কেউ কেউ আবার বিষণ্নতা বোধ করলেও সহজেই তা বুঝতে পারেন না। এ সমস্যার কয়েকটি লক্ষণ জানিয়েছে স্বাস্থ্যবিষয়ক পরামর্শ প্রদানকারী ওয়েবসাইট ওয়েব এমডি। এবার তাহলে বিষণ্নতার লক্ষণ সম্পর্কে জেনে নেয়া যাক।
দুঃখ বোধ, উদ্বিগ্ন ও শূন্যতা অনুভব: সময় অসময়ে মন খারাপ হওয়া স্বাভাবিক। কিন্তু দুঃখ অনুভব করা মোটেও স্বাভাবিক নয়। বিষণ্নতা সম্পর্কিত দুঃখগুলো সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ভালো না হয়ে বরং এগিয়ে যেতে থাকে।
অসহায়ত্ব, মূল্যহীন ও নিজেকে অপরাধী ভাবা: নিজের জীবন সম্পর্কে অকারণেই খারাপ বোধ হতে পারে। আবার এমনটাও বিশ্বাস করেন যে আপনার মধ্যে পরিবর্তনের কোনো ক্ষমতা নেই। এই বিষণ্নতা থেকে ভাবতে পারেন পৃথিবীতে আপনার কোনো মূল্য নেই। ফলে শুধু ক্ষতি বা ব্যর্থতা নিয়ে ভাবতে থাকেন।
আশা হারানো: হতাশার আরেকটি লক্ষণ হচ্ছে আশা হারিয়ে ফেলা। নিজেকে মূল্যহীন ভাবা এবং ভবিষ্যৎ সম্পর্কে হতাশা বোধ করেন অনেকে। অবার কেউ কেউ মনে করেন তার সঙ্গে ভালো কিছুই হবে না। অনেক সময় সাধারণভাবেও ভবিষ্যৎ নিয়ে আশাহীন হয়ে পড়েন। এ ধরনের ভাবনা কখনো কখনো মৃত্যু বা আত্মহত্যা পর্যায়ে নিয়ে যেয়ে থাকে।
মেজাজ খিটখিটে হওয়া: কিছু কিছু সময় বিষণ্নতা বা মেজাজ খারাপ না হয়ে বিরক্তিভাব এসে থাকে। কখনো কখনো তো রাগান্বিত হওয়া এবং অস্থির বোধ হয়। এ সমস্যা মূলত শিশু এবং কিশোর-কিশোরীদের বিষণ্নতার বিশেষ লক্ষণ।
কর্মকাণ্ডে আগ্রহ কম: সাধারণত যেসব অ্যাক্টিভিটি যেমন শখ বা গেমগুলো উপভোগ করেন, বিষণ্নতায় ভুগলে তখন সেই সব পছন্দের বিষয়গুলো আকর্ষণীয় মনে হবে না। পছন্দের খাবার খাওয়ারও কোনো আগ্রহ থাকবে না।
মনোযোগ হারানো: কোনো কাজ করলে তাতে মনোযোগ দিতে সমস্যা হবে। টেলিভিশন দেখা কিংবা পত্রিকা পড়ার মতো কাজও তখন আপনার পক্ষে কঠিন হয়ে পড়বে। কোনো কিছু মনে রাখতেও সমস্যা হবে। যা ছোট থেকে শুরু করে প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
ঘুমের ধরন পরিবর্তন: বিষণ্ননা ও ঘুম, উভয়ের মধ্যেই সংযোগ রয়েছে। সাধারণত অনিদ্রায় ভোগা মানুষদের মধ্যে বিষণ্নতা হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। আবার যারা বিষণ্নতায় রয়েছেন তাদের অধিকাংশই রাতে ঘুমাতে পারেন না। বিষণ্নতা নানাভাবে প্রভাব ফেলে থাকে ঘুমে। যেমন খুব তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে পড়া বা অনেক আগে ঘুম থেকে উঠে পড়ার মতোও সমস্যাও হতে পারে।
ক্ষুধা পরিবর্তন: বিষণ্নতা যদি আপনাকে গ্রাস করে তাহলে ক্ষুধা পরিবর্তন হতে পারে। হতে পারে স্বাভাবিকের থেকে অনেক বেশি ক্ষুধা অনুভব হবে কিংবা ক্ষুধাভাব হারিয়ে ফেলতে পারেন। এর ওপর নির্ভর করে আপনার ওজন বৃদ্ধি বা হ্রাস পেতে পারে। তবে কোনো কারণে যদি বিষণ্নতা অনুভব করছেন বলে মনে হয়, তাহলে সময় নষ্ট না করে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের দ্বারস্থ হওয়ার পরামর্শ রইল।