সরকারি-বেসরকারি স্কুলে ভর্তি আবেদনের শেষ দিন আজ

দেশের সব সরকারি ও বেসরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ২০২৫ শিক্ষাবর্ষে প্রথম থেকে নবম শ্রেণিতে লটারির মাধ্যমে শিক্ষার্থী ভর্তি করা হবে। শনিবার (৩০ নভেম্বর) বিকেল ৫টায় এই আবেদন শেষ হচ্ছে। স্কুলে ভর্তির লটারি ডিসেম্বর মাসে অনুষ্ঠিত হবে। ২০২৫ শিক্ষাবর্ষে ১ম থেকে ৯ম শ্রেণিতে শিক্ষার্থী ভর্তির ক্ষেত্রে ডিজিটাল লটারি ছাড়া অন্য কোনো পদ্ধতিতে শিক্ষার্থী ভর্তি করা যাবে না।

এ বছর ভর্তির আবেদন ফি নির্ধারণ করা হয়েছে ১১০ টাকা। টেলিটক সিম ব্যবহার করে এই ফি পরিশোধ করতে হবে। অনলাইনে https://gsa.teletalk.com.bd লিংকে সরকারি ও বেসরকারি স্কুলের জন্য আলাদাভাবে আবেদন করা যাবে। আবেদনের সময় সরকারি স্কুলের ক্ষেত্রে থানাভিত্তিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও বেসরকারি স্কুলের ক্ষেত্রে মহানগর এলাকা ও জেলার সদর উপজেলা পর্যায়ের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের তালিকা পাওয়া যাবে। ডিজিটাল লটারির পর আগামী ১৭ ডিসেম্বর থেকে শুরু হবে ভর্তি প্রক্রিয়া, চলবে ২১ ডিসেম্বর পর্যন্ত।

শিক্ষার্থীর বয়স:

‘জাতীয় শিক্ষানীতি ২০১০’ অনুযায়ী প্রথম শ্রেণিতে ভর্তির জন্য শিক্ষার্থীর বয়স ৬ বছরের বেশি হতে হবে। পরবর্তী শ্রেণিতে বয়স নির্ধারণের বিষয়টি প্রথম শ্রেণিতে ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে ধারাবাহিকভাবে প্রযোজ্য হবে। শিক্ষার্থীর বয়স নির্ধারণের জন্য ভর্তির আবেদন ফরমের সঙ্গে অনলাইন জন্ম নিবন্ধন সনদের সত্যায়িত কপি জমা দিতে হবে। বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিক্ষার্থীদের বয়স নির্ধারণে সর্বোচ্চ ৫ (পাঁচ) বছরের অতিরিক্ত সুবিধা দেওয়া যাবে। 

সংরক্ষিত কোটা, পোষ্য কোটা ও যমজ ভর্তি:

► ঢাকা মহানগরের সরকারি বিদ্যালয়সংলগ্ন ক্যাচমেন্ট এরিয়ার শিক্ষার্থীদের জন্য ৪০ শতাংশ কোটা সংরক্ষণ করতে হবে। মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি) ঢাকা মহানগরের সব সরকারি বিদ্যালয়ের আওতাধীন ক্যাচমেন্ট এরিয়া নির্ধারণ করে সংশ্লিষ্টদের অবহিত করবে।

► এবার কোটায় ভর্তির ক্ষেত্রে কিছুটা পরিবর্তন আনা হয়েছে। যেমন এত দিন মুক্তিযোদ্ধা বা শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের পুত্র-কন্যা এবং পুত্র-কন্যা পাওয়া না গেলে নাতি-নাতনিদের ভর্তির জন্য ৫ শতাংশ কোটা সংরক্ষিত রাখার নিয়ম ছিল। নতুন সিদ্ধান্ত হলো মুক্তিযোদ্ধা বা শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের পুত্র-কন্যার ৫ শতাংশ কোটা সংরক্ষিত থাকবে। না পাওয়া গেলে মেধাতালিকা থেকে এই আসনে ভর্তি করতে হবে।

► ষষ্ঠ শ্রেণিতে ভর্তির ক্ষেত্রে বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণির মোট আসনের ১০ শতাংশ কোটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণি উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের জন্য সংরক্ষিত থাকবে।

► বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিক্ষার্থীদের শিক্ষার মূল ধারায় সম্পৃক্ত করার লক্ষ্যে ন্যূনতম যোগ্যতা থাকার শর্তে ভর্তির ক্ষেত্রে ২ শতাংশ কোটা সংরক্ষিত থাকবে। কোনো আসন শূন্য থাকলে তা অপেক্ষমান তালিকা থেকে পূরণ করতে হবে।

► মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ ও অধীনস্থ দপ্তর/সংস্থায় কর্মরত কর্মকর্তা/কর্মচারীদের সন্তানদের ক্ষেত্রে মহানগর, বিভাগীয় ও জেলা সদরের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তির জন্য ন্যূনতম যোগ্যতা থাকা সাপেক্ষ্য ২ শতাংশ কোটা সংরক্ষিত থাকবে। যদি আবেদনকারীর সংখ্যা বেশি হয়, সেক্ষেত্রে তাদের নিজেদের মধ্যে লটারি অনুষ্ঠিত হবে।

► কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আবেদনকারী শিক্ষার্থীর সহোদর/সহোদরা বা যমজ ভাই/বোন যদি আগে থেকে অধ্যয়নরত থাকে, সেসব সহোদর/সহোদরা বা যমজ ভাই/বোনের জন্য ৩ শতাংশ কোটা সংরক্ষিত থাকবে। তবে এ সুবিধা কোনো দম্পতির সর্বোচ্চ ২ সন্তানের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে।

স্কুল চয়েজ বা পছন্দক্রম যেভাবে:

সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে আবেদনের ক্ষেত্রে একজন শিক্ষার্থী সর্বোচ্চ ৫টি বিদ্যালয়ে ভর্তির পছন্দক্রম দিতে পারবে। তবে ডাবল শিফট স্কুলে উভয় শিফট পছন্দ করলে ২টি পছন্দক্রম (২টি বিদ্যালয় পছন্দক্রম) সম্পাদন হয়েছে বলে গণ্য হবে। বিদ্যমান অনলাইন ভর্তি আবেদন প্রক্রিয়ায় আরও স্বচ্ছতা আনার লক্ষ্যে ভর্তির জন্য শিক্ষার্থীর পছন্দের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো থেকে যে কোনো একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান চূড়ান্ত করে নিশ্চিত করতে হবে। বিষয়টি সফটওয়ারে অন্তর্ভুক্ত থাকবে।

মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি) সূত্রে জানা যায়, এ বার সরকারি-বেসরকারি ৫ হাজার ৬২৫টি বিদ্যালয়ে মোট আসন আছে ১১ লাখ ১৬ হাজার ৬৩৩টি। ৬৮০টি সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ১ লাখ ৮ হাজার ৭১৬টি আসনের বিপরীতে আবেদন করেছেন ৫ লাখ ৭১ হাজার ৩৯২ জন। সরকারিতে স্কুল পছন্দ দিয়েছেন ৮ লাখ ৬৫ হাজার ৫৪৬টি। 

আর ৪ হাজার ৯৪৫টি বেসরকারি বিদ্যালয়ে রয়েছে মোট ১০ লাখ ৭ হাজার ৬৭৩টি আসন। এর বিপরীতে আবেদন করেছেন ২ লাখ ৯১ হাজার ৯৮ জন শিক্ষার্থী। তারা স্কুল পছন্দ দিয়েছেন ৫ লাখ ২৭ হাজার ৮১৭টি। বৃহস্পতিবার পর্যন্ত সরকারি ও বেসরকারি স্কুলে মোট আবেদন করেছেন ৮ লাখ ৬২ হাজার ৪৯০ জন ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থী।

Share this news on:

সর্বশেষ

img
৩ ম্যাচ সিরিজের একটিতেও জেতা হলো না ক্যারিবিয়ানদের Nov 22, 2025
img
আ.লীগকে আর রাজনীতি করতে দেওয়া হবে না : ইশরাক Nov 22, 2025
img
ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ে অবরোধ, যান চলাচল বন্ধ Nov 22, 2025
img
বিচার বিভাগ ব্যর্থ হলে রাষ্ট্র ও গণতন্ত্র ব্যর্থ হয় : প্রধান বিচারপতি Nov 22, 2025
img
যেকোনো চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সর্বদা প্রস্তুত: বিমানবাহিনী প্রধান Nov 22, 2025
img
আমার রূহটা ইন্ডিয়ায়, আমি আমেরিকায়: মাহি Nov 22, 2025
img
শেখ হাসিনার মৃত্যুদণ্ডের রায় বাস্তবায়ন হবে ইনশাআল্লাহ : সালাউদ্দিন Nov 22, 2025
img
বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে প্রাণ হারালেন ছাত্রদল নেতা Nov 22, 2025
img
ভুটানের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে পররাষ্ট্র উপদেষ্টার সাক্ষাৎ Nov 22, 2025
img
সোলজার সিনেমার বিরুদ্ধে নকলের অভিযোগ উড়িয়ে দিলেন পরিচালক Nov 22, 2025
img
গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার লড়াইয়ে আমাদের জিততেই হবে: আমীর খসরু Nov 22, 2025
img
মাহফুজ আলম ও এনসিপি নেতাদের দুর্নীতির প্রমাণ ফাঁস করব: মুনতাসির Nov 22, 2025
img
আ.লীগ কখনও রাজনৈতিক দল নয়, ছিল মাফিয়া সংগঠন : সালাহউদ্দিন Nov 22, 2025
img
ছেলের সঙ্গে শুটিংয়ে রেগে যান অমিতাভ, কারণ জানালেন নির্মাতা Nov 22, 2025
img
নাগরিকরা পরিবর্তন না করলে পরিবর্তন সম্ভব নয় : পরিবেশ উপদেষ্টা Nov 22, 2025
img

রুকাইয়া জাহান চমক

‘মেয়েদের জীবনের থেকে একটা ওড়না বেশি গুরুত্বপূর্ণ’ Nov 22, 2025
img
সেটে গুরুতর চোট পেলেন শ্রদ্ধা কাপুর, নাচতে গিয়ে বিপত্তি! বন্ধ শুটিং Nov 22, 2025
img
জীতুর বিরুদ্ধে এবার মহিলা কমিশনের দ্বারস্থ দিতিপ্রিয়া Nov 22, 2025
img
নির্বাচনি এলাকা ঘুরে নিজের অভিজ্ঞতা প্রকাশ ওসমান হাদির Nov 22, 2025
img
বিশ্বকাপের আগে মুখোমুখি হচ্ছে ব্রাজিল-ফ্রান্স Nov 22, 2025