সকালে হলুদ খাওয়ার উপকারিতা

হলুদ হলো এমন একটি মসলা যা নানাভাবে আমাদের শরীরের জন্য উপকার নিয়ে আসে। হাজার বছর ধরে এটি মসলা এবং ঔষধি ভেষজ হিসাবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। ন্যাশনাল লাইব্রেরি অফ মেডিসিন রিসার্চ অনুসারে, হলুদের মধ্যে এমন রাসায়নিক রয়েছে যা থেরাপিউটিক সুবিধা রয়েছে। এই পদার্থগুলোকে কার্কিউমিনয়েড হিসাবে উল্লেখ করা হয়। হলুদের প্রাথমিক সক্রিয় উপাদান কারকিউমিন সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য। হলুদের সর্বাধিক ব্যবহার করার সর্বোত্তম উপায় হলো প্রতিদিন সকালে হলুদ পানি পান করা।

কিভাবে হলুদ পানি তৈরি করবেন

এক ইঞ্চি কাঁচা হলুদ ৫০ মিলি পানি দিয়ে ব্লেন্ড করে হলুদ পানি তৈরি করতে পারেন। যদি আপনার বাড়িতে কাঁচা হলুদ না থাকে তবে হলুদের গুঁড়াও ব্যবহার করতে পারেন। স্বাদ এবং স্বাস্থ্যের সুবিধা বাড়াতে এর সঙ্গে আদা, লেবুর রস, গোল মরিচ বা মধু যোগ করতে পারেন। চলুন এবার জেনে নেওয়া যাক প্রতিদিন সকালে হলুদ পানি পান করার উপকারিতা-

প্রদাহের বিরুদ্ধে লড়াই করুন

কারকিউমিন হলো একটি বায়োঅ্যাকটিভ অণু যা প্রদাহের বিরুদ্ধে লড়াই করতে সাহায্য করে। ফলে অনেক ধরনের অসুস্থতা দূরে থাকে। নিয়মিত হলুদ পানি পান করলে তা দীর্ঘস্থায়ী প্রদাহের বিরুদ্ধে লড়াই করতে আপনাকে সাহায্য করবে।

ক্যান্সার বিরোধী ক্ষমতা

যদিও সুনির্দিষ্ট প্রমাণের জন্য অতিরিক্ত গবেষণার প্রয়োজন, তবে কিছু ছোট গবেষণা যেমন পাবমেড সেন্ট্রাল এর এক গবেষণা ইঙ্গিত দেয় যে, হলুদে পাওয়া কারকিউমিন ক্যান্সার কোষের বৃদ্ধি এবং বিস্তার রোধ করতে পারে।

আর্থ্রাইটিস এবং জয়েন্টের ব্যথা কমায়

পাবমেড সেন্ট্রাল-এ প্রকাশিত একটি সমীক্ষায় দেখা গেছে, আর্থ্রাইটিসে আক্রান্ত ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে হলুদ উপকারী হিসেবে কাজ করে। কারকিউমিন জয়েন্টের অস্বস্তি কমাতে কাজ করে। আর্থ্রাইটিস রোগীদের জন্য কারকিউমিনের কার্যকারিতা নিশ্চিত করার জন্য নিয়মিত হলুদ খাওয়ার অভ্যাস করতে হবে।

অন্ত্রের গতি উন্নত করে

নিয়মিত হলুদ পানি পান করলে তা গলব্লাডারের পিত্ত এবং অন্যান্য পাচক এনজাইমের উৎপাদন বৃদ্ধি করে হজমের উন্নতি করে। বিপাক উন্নতি এবং পেটের সমস্যা দূর করার পাশাপাশি হলুদ অন্ত্রের গতি উন্নত করতেও সহায়তা করে। জার্নাল অফ গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল অ্যান্ড লিভার ডিজিজেস-এ প্রকাশিত একটি সমীক্ষা অনুসারে, কারকিউমিনের সঙ্গে মৌরি এসেনশিয়াল অয়েল একত্রিত করলে আইবিএসের সমস্যা কমে যায়।

স্মৃতিশক্তি বাড়াতে সাহায্য করে

ন্যাশনাল লাইব্রেরি অফ মেডিসিনের প্রাণিদের উপর গবেষণা অনুসারে, কারকিউমিন মস্তিষ্ক থেকে প্রাপ্ত নিউরোট্রফিক ফ্যাক্টর (বিডিএনএফ) নামক হরমোনের পরিমাণ বাড়ায়। এটি স্মৃতিশক্তি এবং শেখার ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে এবং স্নায়ু কোষের দীর্ঘায়ুকে সহায়তা করে। যদিও এই সুবিধাগুলো পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে পরীক্ষা করার জন্য আরও মানব গবেষণার প্রয়োজন, তবে প্রাথমিক ফলাফলগুলো উৎসাহজনক।

Share this news on:

সর্বশেষ

img
পদত্যাগ করলেন কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো Jan 06, 2025
img
খালেদা জিয়ার জন্য কাতারের আমিরের এয়ার অ্যাম্বুলেন্স ঢাকায় Jan 06, 2025
img
সুপ্রিম কোর্টের কয়েকজন বিচারপতির বিরুদ্ধে তদন্তের নির্দেশ রাষ্ট্রপতির Jan 06, 2025
img
৭৬৪ কর্মকর্তাকে ক্ষতিপূরণ দিতে বরাদ্দ ৭৫ কোটি টাকা Jan 06, 2025
img
দেশে বর্তমানে বেকার ২৬ লাখ ৬০ হাজার মানুষ Jan 06, 2025
img
সাইফ ও হেলস ঝড়ে বিধ্বস্ত সিলেট, চতুর্থ জয় রংপুরের Jan 06, 2025
img
বাংলাদেশকে বিশ্বের কাছে তুলে ধরতে বেপজাকে প্রধান উপদেষ্টার আহ্বান Jan 06, 2025
img
মেট্রোরেলের সেবায় ভ্যাট অব্যাহতি Jan 06, 2025
img
খালেদা জিয়াকে এয়ারপোর্ট থেকে সরাসরি লন্ডন ক্লিনিকে নেওয়া হবে:জাহিদ Jan 06, 2025
img
রাতে স্থায়ী কমিটির বৈঠক ডেকেছেন তারেক রহমান Jan 06, 2025