জীবনের নিয়ন্ত্রণ নিতে বিষন্নতাকে হারানো জরুরি

বিষন্নতা আমাদের জীবনের অদৃশ্য এক বোঝা। যা আমাদের মানসিক শান্তি, শক্তি এবং সুখের অনুভূতি দূরে সরিয়ে রাখে। কিন্তু সঠিক পদক্ষেপ নিলে এই অন্ধকার থেকে বের হয়ে আসার পথও রয়েছে।
মন বিষন্ন লাগলে ব্যায়াম আমাদের শরীর এবং মনকে তাজা করে তোলে। ব্যায়াম এমন হরমোন নিঃসরণ করে, যা আমাদের সুখানুভূতি এনে দেয়। প্রতিদিন হাঁটা, দৌড়ানো, যোগব্যায়াম বা পাইলেটস প্র্যাকটিস করলে মনের শান্তি ফিরে আসবে।

মন ভালো রাখতে খাবার নির্বাচনও জরুরি। যে খাদ্য আমাদের শরীরকে পুষ্টি দেয়, তা আমাদের মনেরও শক্তি বাড়ায়। ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড, ভিটামিন-বি সমৃদ্ধ খাবার প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় রাখতে হবে। এর পাশাপাশি অতিরিক্ত চিনি বা কফির ব্যবহার কমাতে হবে কারণ এগুলি মানসিক চাপ ও উদ্বেগ বাড়াতে পারে।

মন যখন অস্থির থাকে, ধ্যান বা মেডিটেশন শান্তি ফিরে আনে। প্রতিদিন ১০-১৫ মিনিটের জন্য নিজেকে কিছু সময় দিলে মনের শান্তি ফিরতে পারে।

বিষন্নতার সময়ে একা থাকা খুবই কঠিন হতে পারে। বন্ধু বা পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে সময় কাটানোর মাধ্যমে মনের জোর বাড়ে। আলাপ আলোচনা ও অনুভূতির শেয়ারিং একটি মুক্তির পথ তৈরি করে। কখনো কখনো শুধু মনের কথা গুলো বলতে পারলেও মনে শান্তি আসে।

ঘুমের অভ্যাস মানসিক শান্তি রক্ষা করতে সহায়ক। যথেষ্ট বিশ্রাম না নিলে মনের চাপ বাড়তে থাকে। তাই প্রতিদিন নির্দিষ্ট সময়ে ঘুমানোর চেষ্টা করা এবং ঘুমের পরিবেশকে শান্তিপূর্ণ রাখা জরুরি। ভালো ঘুম মন ও শরীর দুইকেই চনমনে রাখে।

সৃজনশীলতা মনের জন্য পথ্য হিসাবে কাজ করে। গান শোনা, আঁকা বা লেখা এই ধরনের কাজ মনোযোগ ধরে রাখতে সাহায্য করে এবং বিষন্নতা কাটাতে সাহায্য করে। শখগুলোর প্রতি আগ্রহী হলে খারাপ চিন্তাকে দূরে রাখা যায়।

যদি বিষন্নতা অত্যন্ত বাড়ে, তাহলে থেরাপি বা মানসিক পরামর্শ নেওয়া অপরিহার্য হয়ে ওঠে। একজন মানসিক পরামর্শদাতা বা থেরাপিস্ট চিন্তা-ভাবনা পরিবর্তন করতে এবং মনের চাপ কমাতে সাহায্য করতে পারেন। কখনো কখনো, একটুখানি পেশাদার সহায়তা আলোর পথ দেখায়।

বিষন্নতা কাটানোর জন্য কখনো দ্রুত ফলাফল আশা করা উচিত নয়, কিন্তু সময়, ধৈর্য্য এবং প্রচেষ্টা দিয়ে একে মোকাবিলা করা সম্ভব। সচেতনতা, শারীরিক কার্যকলাপ, সঠিক খাদ্যাভ্যাস, সামাজিক সমর্থন এবং ধ্যানের মাধ্যমে মানসিক শান্তি এবং সুস্থতা অর্জন করা সম্ভব।

টিএ/

Share this news on:

সর্বশেষ

img
রাকসু নির্বাচনের আগে শিক্ষক-কর্মচারীদের কর্মবিরতি ঘোষণা Sep 17, 2025
img
পূজায় এলো ভালোবাসার গান Sep 17, 2025
img
মুখে হাসি থাকলেও বুকে শুরু হয় ভাঙচুর ঝড় : সাদিয়া জাহান প্রভা Sep 17, 2025
img
দেশ অস্থিতিশীলকারীদের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করবে জনগণ : আমীর খসরু Sep 17, 2025
img
দুর্গাপূজা নিরাপদে উদযাপিত হবে : আইজিপি Sep 17, 2025
img
টি-টোয়েন্টির এক নম্বর বোলার এখন বরুণ চক্রবর্তী Sep 17, 2025
img
আফগানিস্তানকে হারানোর পরদিনই সুখবর পেলো বাংলাদেশ Sep 17, 2025
img
অভিনয় ছেড়ে ধর্মের পথে, রিজিকের প্রশ্নে যা বললেন তামিম মৃধা Sep 17, 2025
img
শেখ হাসিনা ও তার পরিবার ভোট দিতে পারবেন না Sep 17, 2025
img
জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যানসহ ১০ জন জেলহাজতে Sep 17, 2025
img
নির্বাচন পেছালে দেশের বাইরে সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হবে : রুমিন ফারহানা Sep 17, 2025
img
কন্টেন্ট ক্রিয়েটর থেকে পাকিস্তানের শীর্ষ জনপ্রিয় অভিনেত্রী হানিয়া আমির! Sep 17, 2025
img
আমার অকাল বিদায়ই ছিল ম্যাচের টার্নিং পয়েন্ট : রশিদ Sep 17, 2025
img
অগ্রণী ব্যাংকে রাখা শেখ হাসিনার দুই লকার জব্দ Sep 17, 2025
img
এশিয়া কাপ জিতলেও ট্রফি হাতে নেবে না ভারত, নেপথ্যে যে কারণ Sep 17, 2025
img
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রধানদের জন্য মাউশির নতুন নির্দেশনা Sep 17, 2025
img
দুর্গাপূজা নির্বিঘ্ন করতে অ্যাপ খোলা হয়েছে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা Sep 17, 2025
img
জামায়াত তার কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী রাখতে চাইছে না : মোস্তফা ফিরোজ Sep 17, 2025
img
অন্তবর্তীকালীন সরকার উৎখাতে ষড়যন্ত্র : এনায়েত করিম চৌধুরী ৫ দিনের রিমান্ডে Sep 17, 2025
img
রংপুরে আত্মগোপনে থাকা আ. লীগ নেতা গ্রেপ্তার Sep 17, 2025