বিগত কয়েকদিন ধরে দেশের সোশ্যাল মিডিয়াতে ভেসে বেড়াচ্ছিলো একটি মেয়ের নিখোঁজ বিজ্ঞপ্তি। মোহাম্মদপুর থেকে হারিয়ে যাওয়া ফুটফুটে শিশু আরাবি ইসলাম সুবাকে খুঁজে পেতে অনেকেই শেয়ার করেছেন সেই বিজ্ঞপ্তি। কিন্ত এই ঘটনার মোড় ঘুরিয়ে দিয়েছে একটি সিসি ক্যামেরার ফুটেজ। সুবার নিখোঁজ কান্ডে ভাইরাল হওয়া ফুটেজের পর ৪ ফেব্রুয়ারিতে খোঁজ মিললো শিশুটির। নিখোঁজ শিশুটি এক বন্ধুর সাথে অবস্থান করছেন নওগাঁতে।
মঙ্গলবার (৪ ফেব্রুয়ারি) বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ডিএমপির তেজগাঁও বিভাগের উপ কমিশনার ইবনে মিজান।
পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে বন্ধুর সাথে থাকা শিশুটি বদলে ফেলে অবস্থান। এ বিষয়ে উপ কমিশনার ইবনে মিজান বলেন, আমরা সুবার অবস্থান শনাক্ত করেছি। সে বর্তমানে রাজশাহী বিভাগে নওগাঁ জেলায় অবস্থান করছে। সেখান থেকে তাকে উদ্ধারে পুলিশ কাজ করছে। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে তারা অবস্থান পরিবর্তন করেছে। তবে দ্রুতই তাদের পুলিশ হেফাজতে আনতে পারব বলে আশা করছি।
এতোসব ঘটনার মাঝে ৪ ফেব্রুয়ারিতে সোশ্যাল মিডিয়াতে ভাইরাল শিশুটির আরেক ভিডিও। সেখানে দেখা যায় সুবার সাথে কথা বলছেন এক ব্যক্তি। সেই ভিডিওতে হাসতে দেখা যায় মেয়েটিকে। সুবা জানায় সে ভালো আছে এবং বাবার কাছে যেতে চায়।
এদিকে ৩ ফেব্রুয়ারিতে ভাইরাল হওয়া মোহাম্মদপুরের টোকিও স্কয়ারের সিসি ক্যামেরার ফুটেজে দেখা মেলে শিশুটির। ফুটেজে দেখা যায়, সুবা, তার ফুফাতো ভাই এবং আরও একটি ছেলে মার্কেটে ঢুকছে। সুবা ছেলেটির হাত ধরে ছিল এবং ছেলেটির আরেক হাতে শপিং ব্যাগ ছিল। তারা কথা বলতে বলতে শপিং মলে ঢোকে। পরে সেখান থেকে তাদেরকে বের হয়ে যেতেও দেখা যায়।
আরেকটি ক্যামেরার ফুটেজে দেখা যায়, মোহাম্মদপুরের টোকিও স্কয়ারের সামনে সুবা, তার ভাই ও সঙ্গের ছেলেটি হেঁটে যাচ্ছে। সুবার ফুফাতো ভাই পরবর্তীতে ফুটেজে তাদেরকেই দেখা যাচ্ছে বলে নিশ্চিত করে।
আরাবি ইসলাম সুবা বরিশাল ঢাকায় এসেছিলো দুইমাস আগে। ফুসফুসের ক্যানসারে আক্রান্ত মায়ের চিকিৎসা ছিলো ঢাকায় আসার কারণ। কিন্ত সিসিটিভির ফুটেজে দেখা ছেলেটির সাথে তার পরিচয় কিভাবে হয় বা তাদের সম্পর্ক কি এ ব্যাপারে কিছু জানা যায়নি। পরিবারসূত্রে জানা যায়, আরাবি ইসলাম সুবা বরিশালের একটি স্কুলে ষষ্ঠ শ্রেণীতে পড়ে। তার বাবা ইমরান রাজিব বলেন স্ত্রীর ক্যানসারের চিকিৎসার জন্য দুই মাস ধরে ঢাকায় বোনের বাড়িতে আছি।
এদিকে সোশ্যাল মিডিয়াতে সুবার ঘটনায় প্রকাশিত সিসিফুটেজ দেখে নেটিজেনরা ধারণা করছেন বিষয়টি প্রেমঘটিত। অনেকেই ইঙ্গিত করছেন শিশুপ্রেম হিসেবে। তবে সুবার পরিবারের পক্ষ থেকে নিশ্চিত করে এখনো ছেলেটির ব্যাপারে কিছু জানানো হয়নি। যদিও সুবার পরিবারের বরাত দিয়ে আদাবর থানার ওসি এস এম জাকারিয়া বলেছিলেন, যে ছেলেটির সঙ্গে দেখা গেছে সেই ছেলের সঙ্গে সুবার সম্পর্ক ছিল। সেই সম্পর্কের সূত্র ধরে চলে যায়। ছেলেটির মোবাইল নম্বর দিয়েছে মেয়েটির পরিবার। মোবাইল নম্বরের সূত্র ধরে তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে মেয়েটির অবস্থান শনাক্ত করা হয় বলেন জানান তিনি।
তবে এখন পর্যন্ত শিশু সুবার ঘটনাটির অনেককিছুই অজানা। সিসিটিভি ফুটেজে দেখতে পাওয়া ছেলেটির পরিচয় নিয়েও সুনির্দিষ্ট তথ্য মেলেনি। মায়ের চিকিৎসার জন্য ঢাকায় এসে কিভাবে শিশুটির পরিচয় হয় ওই ছেলেটির সাথে তাও অজানা। আলোচিত এই ঘটনার এসব প্রশ্নের উত্তর পেতে তাই করতে হচ্ছে অপেক্ষা।
টিএ/