সহায়তার প্রতিদানে ইউক্রেন থেকে খনিজ সম্পদের ভাগ চান ট্রাম্প!

যুদ্ধে সহায়তার বদলে খনিজ সম্পদে ভাগ চাইছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। ইউক্রেনকে যুদ্ধ পরিচালনায় সামরিক সহায়তা দিয়ে এবার দেশটির বিরল খনিজ সম্পদে ভাগ দাবি করছেন তিনি। এসময় রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে জেলেনস্কি বাহিনীকে সহায়তা হিসেবে প্রায় ৩০০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার সহায়তার কথাও উল্লেখ করেন তিনি।

রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধে ইউক্রেনকে এতদিন নানাভাবে সহায়তা দিয়ে এসেছে যুক্তরাষ্ট্র। তবে সেই সহায়তার বিনিময় হিসেবে এবং নতুন করে সহায়তা পাওয়ার শর্ত রেখে দেশটির ‘দুর্লভ খনিজ’ পদার্থের অংশ দাবি করেছেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প।

এ প্রসঙ্গে ট্রাম্প বলেন, অর্থনৈতিকভাবে তারা আমাদের চেয়ে অনেক পিছিয়ে আছে। তাই অন্য কোনো উপায়ে আমাদের ঋণ তাদের পরিশোধ করা উচিত। ইউক্রেনের সঙ্গে চুক্তির বিষয়ে ভাবছি। যাতে করে আমরা তাদেরকে যে আর্থিক সহায়তা দিচ্ছি, তার সমপরিমাণ বিরল খনিজ পদার্থ ও অন্যান্য সম্পদ আমরা যেন পাই।

এছাড়াও পানামা খাল বিষয়েও আলোচনা এগোচ্ছে বলে দাবি করেন ট্রাম্প। তার দাবি, মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও তার পানামা সফরে প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। যাতে আশার আলো দেখতে পাচ্ছেন বর্তমান মার্কিন প্রেসিডেন্ট। এ অবস্থায় পানামা খালের ওপর আর চীনের আধিপত্য থাকবে না বলেও মনে করেন তিনি।

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে বৈঠকে এই প্রস্তাব দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। বিষয়টি নিশ্চিত করেছে বার্তা সংস্থা দ্য গার্ডিয়ান। সংবাদ মাধ্যমটির প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, ‘ইউক্রেনে অনেক মূল্যবান খনিজ সম্পদ মজুদ রয়েছে যেখানে ভাগ চাইছে যুক্তরাষ্ট্র। দেশটির দেওয়া অর্থ ও সামরিক সহায়তার বিনিময়ে এই খনিজ সম্পদ চাওয়া যেতেই পারে বলে মনে করছেন ডনাল্ড ট্রাম্প।

তবে এই প্রস্তাবের পর সমালোচনা ছড়িয়ে পড়ে আন্তর্জাতিক মহলে। জার্মান চ্যাঞ্চেলর ওলাফ স্কলজ এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘যুদ্ধ পরবর্তী রাষ্ট্র সংস্কারের লক্ষ্যে দেশে মজুদ খনিজ সংরক্ষণ করা উচিত কিয়েভের।’ নিউ ইয়র্ক টাইমসের বরাতে জানা গেছে, সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের শাসনামলেই ইউক্রেনের খনিজ সম্পদ আহরণ প্রক্রিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চুক্তিতে রাজি হয় কিয়েভ।

তবে এই চুক্তির কৃতিত্ব ডোনাল্ড ট্রাম্পকে দেওয়ার লক্ষ্যে দুই দফায় চুক্তি স্বাক্ষর পেছায় ইউক্রেন প্রশাসন। এদিকে পূর্ব ইউক্রেনের পোকরোভস্ক অঞ্চলে রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধরত কিয়েভ সামরিক সহায়তার জন্য উদগ্রীব।

জানা গেছে, অঞ্চলটিতে রুশ সেনারা আধিপত্য কায়েমে বিভিন্ন কৌশল খাটাচ্ছেন। এরই ধারাবাহিকতায় আটকে দেওয়া হয়েছে ইউক্রেনের জ্বালানী সরবরাহ লাইন। এছাড়া যুদ্ধবন্দি ইউক্রেনীয় সেনারা অত্যাচারের পর হত্যার শিকার হচ্ছেন বলে জানা গেছে। এ পরিস্থিতিতে শঙ্কিত আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডল।

এ পরিস্থিতিতে ইউক্রেনের পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র সচল রাখতে কিয়েভ সফরের ঘোষণা দিয়েছেন আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি বিষয়ক জোটের প্রধান রাফায়েল মারিয়ানো গ্রোসি। ভূরাজনৈতিক মারপ্যাঁচে জড়িয়ে ইউক্রেনের পরিস্থিতি বেশ নাজুক। এ অবস্থায় মার্কিন প্রেসিডেন্টের প্রস্তাব রক্ষার পর ইউক্রেনের খনিজ সম্পদ খাতে কী ধরণের প্রভাব পড়ে এটাই এখন দেখার বিষয়।

টিএ/

Share this news on:

সর্বশেষ

img
ধর্মেন্দ্রের স্মৃতিতে আবেগে ভেঙে পড়লেন অমিতাভ বচ্চন Dec 31, 2025
img
'ফ্যাসিবাদের দোসর' সিলেট ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি ভিসি এখনো বহাল তবিয়তে ! আন্দোলনে নামবে শিক্ষার্থীরা Dec 31, 2025
img
২৫ লাখ টাকার মালিক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী, স্বামী-স্ত্রীর মিলে আছে ২২ লাখ টাকার গহনা Dec 31, 2025
img

রয়টার্সকে সাক্ষাৎকার

আমরা সবাই মিলে সরকার চালাবো: জামায়াত আমির Dec 31, 2025
img
পাকিস্তানি ২ তারকার বিয়ের গুঞ্জন Dec 31, 2025
img
নববর্ষ উপলক্ষে বাংলাদেশিসহ বিশ্ববাসীকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা Dec 31, 2025
img
তারেক রহমানের সম্পদ ২ কোটি টাকার, স্ত্রীর দেড় কোটি Dec 31, 2025
img
বেগম খালেদা জিয়ার কফিন বহন করলেন কোন ৩ আলেম? Dec 31, 2025
img
নতুন বছরের শুভেচ্ছা বিনিময় পুতিন-জিনপিংয়ের Dec 31, 2025
img
৫০৭ কোটি টাকার সম্পদের মালিক ফেনী-৩ আসনের মিন্টু, বছরে আয় দেড় কোটি Dec 31, 2025
img
ইডেনের পিচকে সন্তোষজনক রেটিং আইসিসির Dec 31, 2025
img
মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন থাকলে ‘জামায়াত’ অস্বস্তি বোধ করবে: রয়টার্সকে জামায়াত আমির Dec 31, 2025
img
জানুয়ারির ১ তারিখকেই কেন বছরের প্রথম দিন ধরা হয়? Dec 31, 2025
img
ঢাকা ত্যাগ করেছেন এস জয়শঙ্কর Dec 31, 2025
img
‘মৃত্যুর আগপর্যন্ত ভালোবেসে যাব’ বিচ্ছেদের পর সংগীতশিল্পী সালমা Dec 31, 2025
img
ভারতের এক কূটনীতিকের সঙ্গে গোপনে বৈঠক হয় ডা. শফিকুর রহমানের Dec 31, 2025
img
‘ক্ষমতার বাইরে থেকেও মানুষের হৃদয়ে জায়গা করে নেওয়ার প্রমাণ এই জনসমুদ্র’ Dec 31, 2025
img
হাসপাতালে ভর্তি ব্রাজিলের কিংবদন্তি ডিফেন্ডার Dec 31, 2025
img
রুমিন ফারহানার নামে ধানমন্ডিতে ৫ ফ্ল্যাট ও ৫ কাঠা জমি, হাতে নগদ ৩২ লাখ টাকা Dec 31, 2025
img
গম্ভীরকে নিয়ে মুখ খুলল বিসিসিআই Dec 31, 2025