ঝাল খাবার অনেকেরই পছন্দের হলেও অতিরিক্ত মরিচ খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। বিশেষজ্ঞদের মতে, অতিরিক্ত ঝাল খাওয়ার ফলে বিভিন্ন পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে, যা স্বাস্থ্যের জন্য ভীষণ ক্ষতিকর।
বিশেষজ্ঞরা জানান, মরিচে থাকা ক্যাপসাইসিন উপাদান ঝাল স্বাদের জন্য দায়ী। এটি অতিরিক্ত পরিমাণে গ্রহণ করলে হজমের সমস্যা, পেটের আলসার, অ্যাসিডিটি, এবং অন্ত্রের জ্বালাপোড়া দেখা দিতে পারে। তাছাড়া, অতিরিক্ত ঝাল খেলে ত্বকে অ্যালার্জির সমস্যা, ফুসকুড়ি ও লালচে দাগ দেখা দিতে পারে।
তীব্র বিষক্রিয়ার ঝুঁকি থাকায় গত বছর দক্ষিণ কোরিয়ান ব্র্যান্ড ইনস্ট্যান্ট রামেন নুডলস নিষিদ্ধও করে ডেনমার্কের খাদ্য কর্তৃপক্ষ। যদিও অনুসন্ধান এবং পরীক্ষা নিরীক্ষা শেষে কিছু নিষেধাজ্ঞা তুলে নিয়েছে দেশটির কর্তৃপক্ষ।
এমন আরেকটি ঘটনাও সংবাদের শিরোনাম হয়েছে, যেখানে বলা হয়েছে, সম্প্রতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এক কিশোরী মশলাদার খাবার খাওয়ার চ্যালেঞ্জে অংশ নেয়ার পর অর্ন্তনিহিত স্বাস্থ্যগত সমস্যায় ভোগেন এবং পরে মারাও যান।
মশলাদার খাবার নিয়ে উদ্বেগের কারণ হলো ক্যাপসাইসিন। এটি মরিচের একটি সক্রিয় উপাদান, যা খাবারে ঝাল স্বাদ দিয়ে থাকে। ক্যাপসাইসিন হলো মরিচে থাকা একটি মিশ্র পদার্থ যা গরম বা ঝালের অনুভূতি দেয়। ফলে আমরা যখন মরিচ খাই তখন আমাদের ঝাল বা জ্বলন্ত স্বাদ লাগে। এটি কাপসাইসিন ক্যাপসাইসিনয়েড নামক যৌগের একটি অংশ। যদিও মরিচের মধ্যে প্রায় ২৩টি ভিন্ন ভিন্ন ক্যাপসাইসিনয়েড পাওয়া গেছে, এর মধ্যে সবচেয়ে শক্তিশালী হলো ক্যাপসাইসিন।
যুক্তরাজ্যের ফুড স্ট্যান্ডার্ড এজেন্সি খাদ্য উৎপাদকদের খাবারে খাঁটি ক্যাপসাইসিন যুক্ত করতে অনুমতি দেয় না। কেননা, দেশটির খাদ্য কর্তৃপক্ষ খাঁটি ক্যাপসাইসিনকে অনিরাপদ বলে মনে করে। কিন্তু মরিচের নির্যাসে প্রাকৃতিকভাবে ক্যাপসাইসিন উপস্থিত থাকলে সেটি কতখানি ব্যবহার করা যাবে তা নির্ধারিত করে দেয়নি দেশটির খাদ্য কর্তৃপক্ষ।
উচ্চ মাত্রায় ক্যাপসাইসিন ব্যবহারের বিরুদ্ধে সতর্ককারী দেশ হিসেবে ডেনমার্কই প্রথম দেশ নয়। এর আগে ফেডারেল ইনস্টিটিউট ফর রিস্ক অ্যাসেসমেন্ট ইন জার্মানি মাত্রাতিরিক্ত ক্যাপসাইসিন খাওয়ার ব্যাপারে সতর্ক করেছে।
এ ছাড়া বেশি ঝাল খাওয়ার ফলে ঘুমের সমস্যা, উচ্চরক্তচাপ এবং হৃদরোগের ঝুঁকি বেড়ে যায়। শিশুরা ও প্রবীণ ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে ঝাল খাবার মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করতে পারে।
পুষ্টিবিদরা পরামর্শ দেন, প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় পরিমিত ঝাল রাখা উচিত এবং শরীরের সহনশীলতা অনুযায়ী মরিচ খাওয়া উচিত। কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
আরএ/টিএ