গাজার শিফা হাসপাতাল প্রাঙ্গণে সমাহিত ৬১ ফিলিস্তিনির লাশ উদ্ধার

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডের শিফা হাসপাতাল প্রাঙ্গণ থেকে ৬১ ফিলিস্তিনির লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। ভূখণ্ডটিতে ইসরায়েলি আগ্রাসনের সময় তাদের ওই হাসপাতাল প্রাঙ্গণে সমাহিত করা হয়েছিল।

গত কয়েক দিনে ফিলিস্তিনি সিভিল ডিফেন্স দলগুলোর প্রচেষ্টায় এসব লাশ উদ্ধার করা হয়। রোববার (১৬ মার্চ) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা আনাদোলু।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, যথাযথভাবে সমাহিত করার জন্য এসব দেহাবশেষ উদ্ধার করার হচ্ছে এবং ফিলিস্তিনি সিভিল ডিফেন্স দলগুলো গত ১৩ মার্চ থেকে কবর থেকে এসব লাশ উত্তোলন প্রক্রিয়া শুরু করেছিল।

আনাদোলু বরছে, প্রথম দিনে ফিলিস্তিনের সিভিল ডিফেন্স কর্মীরা ১০ জন অজ্ঞাত ব্যক্তিসহ ৪৮টি লাশ উদ্ধার করে। দ্বিতীয় দিনে, তারা আরও ১৩টি লাশ উদ্ধার করে, যার মধ্যে তিনটি এখনও অজ্ঞাত। পরিচয় শনাক্ত হওয়া লাশগুলো তাদের পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে, অন্যদের ফরেনসিক কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হয়েছে।

কর্তৃপক্ষের ধারণা, যুদ্ধের সময় হাসপাতালের উঠোনে প্রায় ১৬০টি লাশ সমাহিত করা হয়েছিল। আর তাই লাশ উদ্ধার প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে আরও কয়েক দিন সময় লেগে যেতে পারে।

বার্তাসংস্থাটি বলছে, একসময় গাজার বৃহত্তম চিকিৎসা কেন্দ্র শিফা হাসপাতাল যুদ্ধের আগে বার্ষিক ৪ লাখ ৬০ হাজার মানুষকে সেবা প্রদান করত। জরুরি সেবার পাশাপাশি এখানে অস্ত্রোপচার, ডায়ালাইসিস চিকিৎসা এবং মাতৃস্বাস্থ্য পরিষেবাও প্রদান করত হাসপাতালটি।

তবে গাজায় বর্বর আগ্রাসনের সময় ইসরায়েলি বাহিনী বারবার শিফা হাসপাতালে হামলা চালায় এবং হাসপাতালটি ধ্বংস করে দেয়। ২০২৩ সালের ১৬ নভেম্বর এখানে প্রথম বড় অভিযান চালায় ইসরায়েল। সেই অভিযান ১০ দিন স্থায়ী ছিল। এরপর ২০২৪ সালের ১৮ মার্চ দ্বিতীয় দফায় হাসপাতালটিতে আক্রমণ চালায় ইসরায়েল, যা ১ এপ্রিল পর্যন্ত অব্যাহত ছিল। এসময় ইসরায়েলি সেনারা হাসপাতালের কিছু অংশ ভেঙে ফেলে, ভবন পুড়িয়ে দেয় এবং কেন্দ্রের ভেতরে এবং আশপাশে হত্যাকাণ্ড চালায়, যার ফলে এটি সম্পূর্ণরূপে অকার্যকর হয়ে পড়ে।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক মুনির আল-বারশ চলতি বছরের জানুয়ারিতে আনাদোলুকে বলেছিলেন, ইসরায়েলের গণহত্যামূলক এই যুদ্ধের সময় হাসপাতালের ৯৫ শতাংশেরও বেশি ভবন এবং সরঞ্জাম ধ্বংস হয়ে গেছে।

উল্লেখ্য, চলতি বছরের ১৯ জানুয়ারি গাজায় যুদ্ধবিরতি এবং বন্দি বিনিময় চুক্তি কার্যকর হয়েছে, যার ফলে ইসরায়েলের নৃশংস আক্রমণ বন্ধ হয়েছে। তবে দীর্ঘ ১৫ মাসেরও বেশি সময় ধরে চলা আগ্রাসনে ৪৮ হাজার ৫০০ জনেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু। বর্বর এই আগ্রাসনে গাজা ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে।

এফপি/ এস এন 

Share this news on:

সর্বশেষ

ঐকমত্য কমিশনে মতামত দিয়েছে ১৩ টি দল, বাকি দলগুলোর ব্যাপারে কি বললেন আলী রীয়াজ Mar 17, 2025
দেশের বাজারে স্বর্ণের দামে রেকর্ড Mar 17, 2025
img
২০১৪ সালে আ.লীগ ও বিএনপি-জামায়াতের কী সমঝোতা হয়েছিল, জানালেন সাবেক সেনাপ্রধান Mar 17, 2025
img
যুক্তরাষ্ট্রের কাছে স্ট্যাচু অব লিবার্টি ফেরত চাইলেন ফরাসি এমপি Mar 17, 2025
img
ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে আওয়ামী লীগের রাজনীতি ছাড়লেন এসি মিজান Mar 17, 2025
img
৯৫ দিন ধরে সাগরে ভাসছিলেন, অবশেষে উদ্ধার Mar 17, 2025
img
ভারতে বিশ্ববিদ্যালয়ের খোলা জায়গায় নামাজ পড়ায় শিক্ষার্থী গ্রেফতার Mar 17, 2025
ঈদ যাত্রায় রাস্তায় ডা'কা'ত''দের নিয়ে যা বললেন হাইওয়ে পুলিশ কর্মকর্তা Mar 17, 2025
ডিবি হারুনের সম্পদের খোঁজে দুদক কর্মকর্তাদের নাভিশ্বাস Mar 17, 2025
হাসিমুখে আদালতে শাহজাহান খান Mar 17, 2025