খাওয়াদাওয়ার বৈচিত্র্যে নজির রয়েছে বাংলাদেশে। আর খাওয়াদাওয়ার পরে একটু মুখশুদ্ধি না হলে অনেকেরই আবার চলে না। মৌরি থেকে মিছরি, এলাচ থেকে পান বা সুপারি, খাওয়ার পরে নানা মুখশুদ্ধিতে মুখের স্বাদ বদলান খাদ্যরসিকরা। কিছু মুখশুদ্ধি তো এমন রয়েছে, যা খাওয়ার পিছনে রয়েছে বৈজ্ঞানিক ও আয়ুর্বেদিক কিছু কারণ।
মুখশুদ্ধি হিসেবে লবঙ্গকে একদম ওপরের সারিতে রেখেছে আয়ুর্বেদ। লবঙ্গকে খাওয়ার পরে চিবিয়ে খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। লবঙ্গ যে কেবল মুখের স্বাস্থ্য ভালো রাখে তাই নয়, হজমের প্রক্রিয়াকে মজবুত করতে এর জুড়ি মেলা ভার।
এ ছাড়া শরীরের অন্যান্য নানা খাতে উপকারও রয়েছে। ভারতের ন্যাশনাল লাইব্রেরি অব মেডিসিনের ২০২৪- সালের এক গবেষণা বলছে, লবঙ্গে ব্যাকটেরিয়া রোধী, ফাঙ্গাস রোধী ও প্রদাহ রোধী বিশেষ গুণাবলি রয়েছে। পাশাপাশি এতে পাওয়া যায় ইউজেনল নামে এক বিশেষ উপাদান, যা হজমকে আরো ভালো করে এবং মুখের দুর্গন্ধ রোধ করতে সহায়তা করে।লবঙ্গ যে শুধু এক ঘরোয়া দারুণ মশলা তাই নয়, এটির মধ্যে রয়েছে বিশেষ ঔষধিগুণও।
যা খাওয়ার পরে গ্যাস, এসিডিটি, বদহজমের মতো সমস্যা থেকে রেহাই দেয় শরীরকে। লবঙ্গের গুণ বিশেষ পাচনরসকে সক্রিয় করে যাতে খাবার তাড়াতাড়ি ও সহজে হজম হয়।
লবঙ্গকে বলা হয় প্রাকৃতিক মাউথ ফ্রেশনার। দাঁতের যন্ত্রণা, মাড়ির ফোলাভাব কমাতে কার্যকরী ভূমিকা নিয়ে থাকে লবঙ্গ। বহুদিন ধরেই লবঙ্গ তেলকে দাঁতের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে ব্যবহার করা হয়।
ঠাণ্ডা লাগলে লবঙ্গ চিবালে গলার জমা কফ সহজে বেরিয়ে আসতে পারে। এর ব্যাকটেরিয়ারোধী গুণ সর্দি ও কাশি থেকে রেহাই দেয়। বিভিন্ন গবেষণায় ওঠে এসেছে, ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণে রাখতে লবঙ্গের ভূমিকা উল্লেখযোগ্য।
লবঙ্গের বিশেষ উপাদান শরীরে ইনসুলিনের কার্যকারিতা বাড়িয়ে তোলে, যাতে ডায়াবেটিক রোগীদের উপকার হয়। লবঙ্গে উপযুক্ত মাত্রায় রয়েছে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট। যা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে আরো শক্তিশালী করতে সাহায্য করে।লবঙ্গের গুণে শরীর থাকে সুস্থ, নীরোগ। শরীরের নানা সংক্রমণ থেকে লড়ার ক্ষমতা তৈরি হয় লবঙ্গের বিশেষ উপাদানের ফলে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, খাওয়ার পরে ১ থেকে ২টি লবঙ্গ চিবিয়ে খাওয়ার উপকার অনেক। ধীরে ধীরে চিবিয়ে খেতে হবে, যাতে এর রস মুখে ভালোভাবে মিশ্রিত হতে পারে।
এমআর/টিএ