দারিদ্র্য নিরসনে যাকাত সর্বশ্রেষ্ঠ পন্থা: ধর্ম উপদেষ্টা

দারিদ্র্য নিরসনে যাকাত সর্বশ্রেষ্ঠ পন্থা বলে জানান, ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন। ইসলামী শরিয়তের বিধান অনুসরণ ব্যতীত যাকাত ব্যবস্থার সুফল পাওয়া সম্ভব নয়। এর সুফল পেতে কুরআন-সুন্নাহর বিধান অনুসারে যাকাত আদায় ও বিতরণ করতে হবে।

রোববার (২৩ মার্চ) বিকেলে রাজধানী বায়তুল মোকাররম ইসলামী ফাউন্ডেশন (ইফা) মিলনায়তনে ‘দারিদ্র্য বিমোচনে যাকাতের ভূমিকা’ শীর্ষক সেমিনারে তিনি এসব কথা বলেন। ইসলামিক ফাউন্ডেশন এ সেমিনারের আয়োজন করে।

ধর্ম উপদেষ্টা বলেন, যাকাত আদায় করা ফরজ। কিন্তু আমাদের দেশে যাকাত আদায়কে অনেকেই ঐচ্ছিকভাবে নিয়েছেন। যার মন চায় সে যাকাত দিলো আবার যার মন চাইলো না সে দিলো না। এ কারণে আমরা যাকাতের শতভাগ সুফল পাচ্ছি না।

খালিদ হোসেন বলেন, পৃথিবীতে ৫৭টি মুসলিম দেশের মধ্যে মাত্র ছয়টি দেশে বাধ্যতামূলক যাকাত আদায় করা হয়ে থাকে। সৌদি আরব, লিবিয়া, মালয়েশিয়া, পাকিস্তান, সুদান ও ইয়েমেনে কুরআন-সুন্নাহর বিধান অনুসারে যাকাত আদায় ও বিতরণ করা হয়ে থাকে।

তিনি বলেন, আমাদের দেশে তিন থেকে চার কোটি মানুষ দরিদ্র। এ সব মানুষের দারিদ্র্য নিরসনে যথাযথভাবে যাকাত আদায় ও তা বিতরণ করতে হবে।

একটি সমীক্ষা প্রতিবেদনের উদ্ধৃতি দিয়ে ড. খালিদ বলেন, এ দেশে বছরে লাখ কোটি টাকা যাকাত আদায় করা সম্ভব। যথাযথভাবে এটা আদায় ও বিতরণ করা গেলে ১০ বছরের মধ্যে এ দেশের রাস্তায় ভিক্ষা করার লোক খুঁজে পাওয়া যাবে না।
সেমিনারে তিনি কুরআন এবং সুন্নাহর বিধান অনুসারে যাকাত আদায় ও বিতরণের ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন।

ইফা মহাপরিচালক আ. ছালাম খানের সভাপতিত্বে সেমিনারে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন ইফা বোর্ড অব গভর্নরসের গভর্নর মাওলানা সৈয়দ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল মাদানী, ড. খলিলুর রহমান মাদানী, ধর্ম মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মু. আ. আউয়াল হাওলাদার।

যাকাত আদায়ের ফজিলত তুলে ধরে ধর্ম উপদেষ্টা বলেন, আমরা যাকাত আদায়ের মাধ্যমে আল্লাহর হুকুম পালনের পাশাপাশি তার রহমত লাভ করে থাকি। যাকাতের মাধ্যমে বাজারে অর্থের সঞ্চালন বৃদ্ধি পায়, কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয়। এছাড়া, যাকাতের মাধ্যমে দরিদ্র মানুষের মুখে হাসি ফোটে।

সরকারি যাকাত বোর্ডের কার্যক্রম তুলে ধরে খালিদ হোসেন বলেন, এ বছর যাকাত বোর্ডের মাধ্যমে ১১ কোটি টাকা বিতরণ করা হবে এবং আগামী বছর ২৫ কোটি টাকা বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। তিনি সবার সরকারি যাকাত ফান্ডে যাকাতের অর্থ জমা দেওয়ার অনুরোধ জানান।

যাকাত আদায়ের গুরুত্ব তুলে ধরে ইফার মহাসচিব বলেন, নামাজ, রোজা ও হজ পালনের পরও যাকাত আদায় না করলে আখিরাতে মুক্তি পাওয়া যাবে না।

সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির অর্থনীতি বিভাগের প্রফেসর ড. মোহাম্মদ ওমর ফারুক। অন্যান্যের মধ্যে যাকাত বোর্ডের সদস্য মুফতি মোহাম্মদ জসীম উদ্দিন আল আজহারী ও যাকাত তহবিল বিভাগের পরিচালক মো. আব্দুল হামিদ খান বক্তব্য রাখেন।

ইমাম, খতিব, মাদরাসার শিক্ষক, সাংবাদিক ও আলেম-ওলামাসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার তিন শতাধিক লোক সেমিনারে অংশগ্রহণ করেন।

আরএইচ/এসএন

Share this news on: