সুন্দরবনে মুক্তিপণ পরিশোধেও বাড়ি ফেরেনি দুই জেলে

মুক্তিপণের টাকা পরিশোধ করেও সুন্দরবনে জলদস্যুদেরর হাত থেকে মুক্তি পাননি অপহরণের শিকার দুই জেলে। গত সপ্তাহে সুন্দরবনের ফিরিঙ্গি ও ডিঙিমারী এলাকা থেকে তাদের অপহরণ করা হয় বলে জানা গেছে।
মফিজুর রহমান (৪৫) ও আব্দুর রহিম (২৮) নামের ওই দুই জেলে শ্যামনগর উপজেলার মুন্সিগঞ্জ ইউনিয়নের হরিনগর গ্রামের মৃত নেছার শেখ ও আশরাফ আলী গাজীর ছলে।

এদিকে মুক্তিপণ পরিশোধের চারদিন অতিবাহিত হলেও অপহৃতরা ফিরে না আসায় উৎকণ্ঠায় রয়েছেন স্বজনরা। আগুনজ্বালা নামের এলাকা থেকে একই বাহিনীর হাতে অপহরণের শিকার রবিউল ইসলাম তিনদিন পর রোববার বাড়িতে ফিরেছেন বলে জানা গেছে।

জলদস্যুদের হাতে জিম্মি দুই জেলের স্বজনসহ তাদের সহযোগী জেলেরা জানান, গত সপ্তাহে মাছ শিকারে যাওয়ার পর দুলাভাই বাহিনীর পরিচয়ে একদল জলদস্যু মফিজুর ও আব্দুর রহিমকে অপহরণ করে। পরবর্তীতে উভয়ের মুক্তিপণ বাবদ ৩৫ ও ৪০ হাজার টাকা দাবি করা হয়। একপর্যায়ে চারদিন আগে জলদস্যুদের দাবি করা টাকা বিকাশে পরিশোধের পরও জিম্মি দুই জেলেকে ছাড়া হয়নি।

ফিরে আসা জেলেরা জানান, নয় সদস্যের জলদস্যু দলটি নিজেদের দুলাভাই বাহিনী হিসেবে দাবি করে। তবে ইতোপূর্বে গাজী বাহিনী পরিচয়দানকারী জলদস্যুদের আটজনকে নতুন পরিচয়ে দেখা গেছে।

জেলেদের দাবি, দলনেতা পরিবর্তন করে একই দল নতুন বাহিনীর পরিচয়ে দস্যুতা করছে। কয়রা উপজেলার মহেশ্বরীপুর এলাকার আবজাল ও তার শ্যালক একই উপজেলার রবিউল এই বাহিনীর নেতৃত্বে রয়েছে। এসব দস্যুরা বিগত ২০১৮ সালে র‌্যাবের হাতে অস্ত্র সমপর্ণ করে স্বাভাবিক জীবনে ফিরলেও আবারও তারা সুন্দরবনে সক্রিয় হয়ে উঠেছে। বাহিনীর নয় সদস্যের প্রত্যেকে একটি করে অস্ত্র বহন করছে বলে জানান জেলেরা।

এ বিষয়ে সুন্দরবন সাতক্ষীরা রেঞ্জের সহকারী বন সংরক্ষক মশিউর রহমান জানান, অপহরণের শিকার জেলেদের স্বজনরা এসব বিষয় তাদের কাছ গোপন করেন। বরং কাউকে কিছু না জানিয়ে জলদস্যুদের সঙ্গে আপস করে টাকার বিনিময়ে স্বজনদের ফিরে পাওয়ার চেষ্টা চালান।

শ্যামনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. হুমায়ুন কবীর মোল্যা জানান, অপরাপর বাহিনীর সহায়তা ছাড়া সুন্দরবনের ভিতরে অভিযান চালানো দুরূহ ব্যাপার। অপহরণের শিকার জেলেদের স্বজনরা তাদের কাছে কোনো ধরনের অভিযোগ করেননি। নিরাপত্তার কথা বিবেচনায় নিয়ে তারা গোপন সমঝোতায় স্বজনদের মুক্তির চেষ্টা চলান বলে তিনি জানান।

এফপি/এসএন 

Share this news on:

সর্বশেষ

img
সংসদের মেয়াদ হোক পাঁচ বছর, বিএনপি Mar 26, 2025
img
ইসরায়েলি হামলার মধ্যেই গাজায় বিক্ষোভ ফিলিস্তিনিদের Mar 26, 2025
img
রেলওয়েতে এক টাকা আয়ের জন্য আড়াই টাকা খরচ হয়: ফাওজুল কবির Mar 26, 2025
img
মার্কিন নিরাপত্তার সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ চীন! Mar 26, 2025
img
রেড ওয়াইনেও রয়েছে ক্যানসারের বীজ! কি বলছেন গবেষকরা? Mar 26, 2025
img
চীনের উদ্দেশে ঢাকা ছেড়েছেন প্রধান উপদেষ্টা Mar 26, 2025
img
হার্দিকের নতুন প্রেমের গুঞ্জন! Mar 26, 2025
img
পাঁচ বছরের জন্য হোম ভেন্যু হিসেবে আবু ধাবিকে বেছে নিল আফগানিস্তান Mar 26, 2025
img
দ্বিতীয় স্বাধীনতা বলে বাংলাদেশে কিছু নেই : মির্জা আব্বাস Mar 26, 2025
img
নিউজিল্যান্ড সিরিজের শেষ ম্যাচে জামাই শাহিনকে বিশ্রামে পাঠানোর পরামর্শ আফ্রিদির Mar 26, 2025