ঈদের ছুটিতে রাজধানীর নিরাপত্তায় বসবে সাত শতাধিক চেকপোস্ট

ঈদের ৯ দিনের ছুটি শুরু হচ্ছে শুক্রবার থেকে। ইতিমধ্যে রাজধানী ফাঁকা হতে শুরু করেছে। ফলে চুরি, ডাকাতি ও ছিনতাই বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এছাড়া ঘরমুখো মানুষ নানা প্রতারণা ও অপরাধের শিকার হওয়ার আশঙ্কা থাকে। গত বুধবার ধানমন্ডি এলাকায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয় দিয়ে ডাকাতির ঘটনা রাজধানীর মানুষকে ভাবিয়ে তুলছে। এ কারণে ঈদে রাজধানীতে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিতে প্রস্তুত আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

পুলিশ সদর দপ্তরে আইজিপি বাহারুল আলমের সভাপতিত্বে এক সভায় ঈদের ছুটিতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় সর্বোচ্চ সংখ্যক পুলিশ সদস্য নিয়োজিত করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। নিশ্চিত নিরাপত্তার জন্য করণীয় বিষয়ে নানা দিকনির্দেশনা দেন আইজিপি। এই নির্দেশনার পর সারাদেশে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

পুলিশ, র‍্যাব, বিজিবি ছাড়াও আনসার সদস্যরা এসময় মাঠে থাকবে। ইতোমধ্যে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় পুলিশ সদর দপ্তর থেকে বেশকিছু নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। রাজধানীসহ সারাদেশে নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে ঢেলে সাজানো হয়েছে। সিসি ক্যামেরাও স্থাপন করা হয়েছে। সর্বাধিক সংখ্যক টহলেরও ব্যবস্থা করা হয়েছে।
 
বসবে সাত শতাধিক চেকপোস্ট: মহানগর পুলিশ কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাদ আলী সভাপতিত্বে এক সভায় ঈদকে কেন্দ্র করে রাজধানী ঢাকার নিরাপত্তার সর্বোচ্চ ব্যবস্থা নেওয়া হয়। থানা পুলিশের পাশাপাশি গোয়েন্দা পুলিশ, বিজিবি থাকবে মাঠে। টহল ছাড়াও সকল অলি গলিতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা থাকবে।

পুলিশ কমিশনার বলেন, পুলিশ দায়িত্ব পালন করলেও ঈদে বাড়ি যাওয়ার সময় বাড়ি, ফ্ল্যাট, দোকান ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তা নিজ দায়িত্বে নিশ্চিত করতে হবে। আমরা আপনাদের সঙ্গে আছি। আমাদের ব্যবস্থাপনাটা আমরা করবো।

মহানগর গোয়েন্দা বিভাগের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার রেজাউল মল্লিক বলেন, ডিবির পক্ষ থেকে সমগ্র মহানগরকে নিরাপত্তার চাদরে ডেকে দেওয়া হবে। সব জায়গাতে গোয়েন্দা পুলিশের সদস্যরা থাকবে। মহানগর উপপুলিশ কমিশনার মুহাম্মদ তালেবুর রহমান বলেন, সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে চুরি, ছিনতাই, ডাকাতি প্রতিরোধে পুলিশ টহল ও চেক পোস্ট বৃদ্ধি করা হবে। সাত শতাধিক চেকপোস্ট পরিচালনা করা হবে।

মাঠে নামছে ৪৩১ জন অক্সিলারি পুলিশ: এবার প্রথমবারের মতো ঢাকা মহানগরীর নিরাপত্তায় পুলিশের সঙ্গে মাঠে থাকছে ৪৩১ জন অক্সিলারি পুলিশ। বিভিন্ন বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ও এলাকার নিরাপত্তাকর্মীদের মধ্যে থেকে তাদের নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। তাদের গ্রেফতারের ক্ষমতাও দেওয়া হয়েছে। তবে তারা কোন তদন্ত করতে পারবেন না। কাউকে গ্রেফতারের পর দ্রুত পুলিশের কাছে হস্তান্তর করবেন।

র‍্যাবের পক্ষ থেকে নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখা থেকে জানানো হয়েছে, ঈদে মানুষের নিরাপত্তায় গোয়েন্দা কার্যক্রম ও টহল জোরদার করা হয়েছে। এ সময় ইউনিফর্মের পাশাপাশি সাদা পোশাকে র্যাব ও গোয়েন্দা বিভাগের সদস্যরা তত্পর থাকবে।
র‍্যাবের মহাপরিচালক অতিরিক্ত আইজিপি শহিদুর রহমান বলেন, কোন ধরনের অপরাধ সংঘঠিত হওয়ার সুযোগ দেওয়া হবে না। পাশাপাশি থাকবে গোয়েন্দা তত্পরতা।

পুলিশ সদর দপ্তরের এআইজি (মিডিয়া) ইনামুল হক বলেন, ঈদকে সামনে রেখে পুলিশের বিশেষায়িত ইউনিট হাইওয়ে শিল্প পুলিশ, রেলওয়ে পুলিশকে বিশেষভাবে সক্রিয় করা হয়েছে। মহাসড়কে ডাকাতি প্রতিরোধেও বিশেষ নজরদারি থাকবে। প্রশাসনকে সহযোগিতা করতে সেনাবাহিনী সার্বক্ষণিক পাশে থাকবে।

হাইওয়ে পুলিশের অতিরিক্ত আইজিপি দেলোয়ার হোসেন বলেন, আগামীকাল শনিবার থেকে গার্মেন্টস ছুটি হবে। তখন সড়কে একটি বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়। গাজীপুর থেকে শুরু করে উত্তর বঙ্গ, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক এবং ঢাকা সিলেট মহাসড়কের যেসব জায়গায় যানজট হয়, সেসব স্থান চিহ্নিত করা হয়েছে। ওইসব জায়গায় এখন থেকেই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। হাইওয়ের নিরাপত্তা নিশ্চিত ও যানজটমুক্ত করতে হাইওয়ে পুলিশের সঙ্গে জেলা পুলিশও কাজ করবে।

এদিকে প্রিয় মানুষদের সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করতে বাড়ি ছুটছেন মানুষ। ঘরমুখো মানুষেরা যেন স্বাচ্ছন্দ্যে বাড়ি ফিরতে পারেন সেজন্য মহাসড়কে দায়িত্ব পালন করছেন সেনাবাহিনীর সদস্যরা। এতে নির্বিঘ্নে, কোনো রকম যানজট ও ভোগান্তি ছাড়াই গন্তব্যে যাচ্ছেন সাধারণ মানুষ। এছাড়াও যে কোনো পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ-প্রশাসনের পাশাপাশি মাঠে থাকবে সেনাবাহিনী।



এমআর/টিএ


Share this news on:

সর্বশেষ

img
মাদারীপুরে বজ্রপাতে প্রাণ গেল ১ জনের Jul 14, 2025
img
ফরিদপুরে পাসপোর্ট করতে এসে আটক ৩ রোহিঙ্গা নাগরিক Jul 14, 2025
img
মাছ ব্যবসায়ীদের সঙ্গে শেকৃবি শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ, আহত ৩ Jul 14, 2025
img
গাজীপুরে অপহরণ ও ধর্ষণ মামলায় বিএনপি নেতা কারাগারে Jul 14, 2025
img
ঐশ্বরিয়ার গুণের প্রশংসা করেছিলেন শাশুড়ি জয়া বচ্চন Jul 14, 2025
img
দিলজিতের ‘পাঞ্জাব ৯৫’ ছবি ঘিরে নতুন বিতর্ক! Jul 14, 2025
img
আরও ২ দিনের কর্মবিরতি ঘোষণা দিলেন মিটফোর্ডের ইন্টার্ন চিকিৎসকরা Jul 14, 2025
img
পিএসজিকে ৩-০ গোলে হারিয়ে শিরোপা জিতল চেলসি Jul 14, 2025
img
ক্যারিয়ার বাঁচাতে অনৈতিক কাজে অভিনেত্রী! গ্রেফতার হয়েছিলেন হোটেল থেকে Jul 14, 2025
img
উইম্বলডনে প্রথমবারের মতো শিরোপার স্বাদ পেলেন সিনার Jul 14, 2025
img
পুলিশের পরিচয় দিয়ে খাদ্য কর্মকর্তাকে অপহরণ, ৫ ঘণ্টা পর উদ্ধার Jul 14, 2025
img
নড়াইলে আওয়ামী লীগের ৩৫ নেতাকর্মী কারাগারে Jul 14, 2025
img
জমে উঠেছে লর্ডস টেস্ট, শেষ দিনে কে হাসবে বিজয়ের হাসি? Jul 14, 2025
img
'খারাপ ব্যাটিং ও বাংলাদেশের দারুণ ফিল্ডিংয়ের কারণে আমরা হেরেছি' Jul 14, 2025
img
তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠন নিয়ে বিএনপির নতুন প্রস্তাব Jul 14, 2025
img
ভারতের বিরুদ্ধে পরমাণু অস্ত্র ব্যবহারের পরিকল্পনা করা হচ্ছিল কি না, জানালেন শেহবাজ Jul 14, 2025
img
বাংলাদেশের সামষ্টিক অর্থনীতি আগের চেয়ে ভালো অবস্থানে রয়েছে: বিশ্বব্যাংক Jul 14, 2025
img
আমি সবসময় ইতিবাচক থাকার চেষ্টা করি: শামীম Jul 14, 2025
img
বর্তমান সরকারের সময়ে এখন পর্যন্ত সবকিছু ঠিকঠাক চলছে: মির্জা ফখরুল Jul 14, 2025
img
প্রতীক হিসেবে থাকছে ‘নৌকা’, তালিকায় যুক্ত হচ্ছে না ‘শাপলা’ Jul 14, 2025