জয়পুরহাটের কালাইয়ে পুলিশের বিরুদ্ধে ‘চোর মুক্তি’র অভিযোগ উঠেছে। রবিবার (৩০ মার্চ) এমন অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী মালিক আবু ইউসুফ।
ইউসুফ হতাশা প্রকাশ করে বলেন, 'চোর ধরলাম, পুলিশের হাতে তুলে দিলাম, আর তারাই টাকার বিনিময়ে তাকে ছেড়ে দিল! তাহলে ন্যায়বিচার কোথায়? পুলিশের কাজ কি অপরাধীদের রক্ষা করা?'
তিনি জানান, ১১ মার্চ বিকেলে তার মোটরসাইকেলটি বাড়ির সামনে রেখে ঘরে ঢোকেন। কিছুক্ষণ পর বারান্দায় এসে দেখেন, দুইজন অপরিচিত ব্যক্তি তার মোটরসাইকেলের আশপাশে সন্দেহজনকভাবে ঘোরাফেরা করছে।
তিনি দ্রুত পিছনের গেট দিয়ে বের হন, ঠিক তখনই তারা মোটরসাইকেলটি নিয়ে পালিয়ে যায়।
তিনি আরো জানান, তাদের পিছু ধাওয়া করলেও ধরতে পারেননি তিনি। পরে পাশের একটি অফিসের সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে তা ফেসবুকে পোস্ট এবং কালাই থানায় একটি মোটরসাইকেল চুরির অভিযোগ করেন ইউসুফ।
ফেসবুকে পোস্টের জের ধরে ২৯ মার্চ স্থানীয়রা চোরকে শনাক্ত করে এবং বিষয়টি ইউসুফকে জানায়।
তিনি কালাই থানায় গিয়ে ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহিদ হোসেন উপপরিদর্শক (এসআই) এস এম কামাল হোসাইনকে বিষয়টি জানান। এরপর পুলিশ অভিযান চালিয়ে অভিযুক্ত মনোয়ার হোসেনকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে।
মোটরসাইকেল মালিক আবু ইউসুফ বলেন, 'আমি নিজেই চোর ধরতে সহযোগিতা করেছি। রাতেই থানায় গেলে ওসি সাহেব আমাকে বলেন, ‘রাত অনেক হয়েছে, সকালে আসেন, মামলা হবে, চোরকে জেলহাজতে পাঠানো হবে।
কিন্তু সকালে গিয়ে দেখি, চোরকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে! টাকা ছাড়া কি চোরদের মুক্তি দেওয়া হয়? তাহলে পুলিশের ভূমিকা কী? তারা কি জনগণের সেবক, নাকি অপরাধীদের রক্ষাকর্তা?'
কালাই থানা ওসি বলেন, অভিযোগকারীর দেওয়া ছবির ভিত্তিতে একজনকে থানায় আনা হয়েছিল, পরে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে তদন্ত চলছে।
ইউসুফের বাবা আব্দুল খালেক বলেন, 'পুলিশের এই ব্যাখ্যা মোটেও গ্রহণযোগ্য নয়। একটি সিসিটিভি ফুটেজের মাধ্যমে চোর চিহ্নিত করা হয়েছে, তাকে রাতভর থানায় আটকে রাখার পরও কেনো কোনো মামলা করা হলো না? কার স্বার্থে তাকে ছেড়ে দেওয়া হলো?'
স্থানীয় ইউপি সদস্য মিনহাজুল ইসলাম চৌধুরী টোপন বলেন, 'সিসিটিভি ফুটেজে যে ছবি দেখা যাচ্ছে, সেই ব্যক্তিই মনোয়ার হোসেন, এতে কোনো সন্দেহ নেই। ছবি দেখেই গত রাতে পুলিশ তাকে বাড়ি থেকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়।
সকালে শুনি, রাতেই নাকি তাকে ছেড়ে দিয়েছে।'
জয়পুরহাটের পুলিশ সুপার মুহম্মদ আবদুল ওয়াহাব জানান, এ ঘটনায় তদন্ত সাপেক্ষে দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এসএন