ঢাকা থেকে বরগুনাগামী এমভি রয়েলক্রুজ-২ লঞ্চে হামলা, ভাঙচুর ও টাকা লুটের অভিযোগে ঘরমুখো ১৩ যাত্রীকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত।
রোববার সন্ধ্যায় বরগুনার বেতাগী সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক অভিজিৎ সরকার সুব্রত এ আদেশ দেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আদালতের জিআরও অশোক হাওলাদার।
এর আগে সকালে বেতাগী লঞ্চ ঘাট থেকে এমভি রয়েলক্রুজ-২ লঞ্চে হামলা ও লুটপাটের অভিযোগে ১৮ জন যাত্রীকে আটক করে পুলিশ। পরে বিকেলে লঞ্চের সুপারভাইজার এস এম খাইরুল হাসান শাহীন ১৩ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আরও ২৫-২৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। এজাহারভুক্ত ১৩ জনকে আদালতে হাজির করলে তাদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়। কারাগারে যাওয়া ১৩ যাত্রীদের বাড়ি বরগুনা জেলার বিভিন্ন উপজেলায়।
এদিকে আটক যাত্রীদের মুক্তির দাবিতে সকাল থেকে বেতাগী থানার সামনে বিক্ষোভ করেন স্বজনরা। পরে বরগুনা থেকে অতিরিক্ত পুলিশ ও নৌবাহিনী সদস্যরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
ঘটনার সূত্রপাত সম্পর্কে জানা যায়, শনিবার বিকেল সাড়ে ৫টায় ঢাকা সদরঘাট থেকে বরগুনাগামী এমভি রয়েলক্রুজ-২ ছেড়ে আসে। রাতে যাত্রীদের কাছ থেকে নির্ধারিত ৪০০ টাকার পরিবর্তে ৮০০ থেকে ১০০০ টাকা পর্যন্ত ভাড়া আদায়ের চেষ্টা করা হয়। যাত্রীরা এর প্রতিবাদ করলে লঞ্চের কর্মচারীদের সঙ্গে তাদের সংঘর্ষ হয়। এতে উভয় পক্ষের অন্তত ২০-২৫ জন আহত হয়। পরে সকালে বেতাগী ঘাটে লঞ্চ ভিড়লে বেতাগী থানা পুলিশ ১৮ জনকে আটক করে নিয়ে আসে।
বেতাগী সদর ইউনিয়নের আটক পারভেজ (২০) এর মা শিউলি আক্তার বলেন, ‘আমার ছেলে পারভেজ ঘুমন্ত অবস্থায় ছিল, পুলিশ তুলে নিয়ে যায়। আগামীকাল ঈদ, অথচ ছেলে থাকবে কারাগারে, মুক্তি না দিলে আমাদের কোনো ঈদ হবে না।’
এ বিষয়ে এমভি রয়েল ক্রুজ-২ লঞ্চের সুপারভাইজার খাইরুল হাসান শাহীন বলেন, ‘বরিশাল অতিক্রমের পর লঞ্চটি নিরাপত্তার কারণে ধীরে চালানো হচ্ছিল। এতে উচ্ছৃঙ্খল কিছু যাত্রী ক্ষুব্ধ হয়ে লঞ্চে ভাঙচুর শুরু করেন এবং বিভিন্ন ধরনের শ্লোগান দিতে থাকেন। এতে ভয়ে লঞ্চের কর্মী ও আনসার সদস্যরা জীবন বাঁচাতে পালিয়ে থাকেন। এসময় লঞ্চের ক্যাশ কাউন্টারে থাকা আড়াই লাখ টাকাসহ বাক্সটি নদীতে ফেলে দেয় যাত্রীরা। তারা আমাকে বেদম মারধর করে। পরে তাৎক্ষণিক বিষয়টি পুলিশকে অবগত করি আমরা। এরপর বেতাগী লঞ্চঘাটে পৌঁছালে পুলিশ গিয়ে কয়েকজনকে গ্রেফতার করে।’
এ বিষয়ে বেতাগী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মনিরুজ্জামান বলেন, লঞ্চ কর্তৃপক্ষের অভিযোগের ভিত্তিতে আমরা ১৮ জনকে গ্রেপ্তার করি। পরে লঞ্চ কর্তৃপক্ষ ১৩ জনের নামে মামলা দায়ের করলে তাদের আদালতে পাঠানো হয়। বাকি ৬ জনের কাছ থেকে মুচলেকা রেখে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
এসএন