২০০৮ সালের ২৬ নভেম্বর মুম্বইয়ে নেমে আসা রক্তাক্ত বিভীষিকার নেপথ্যে ছিলেন তাহাউর রানা। দীর্ঘ ১৬ বছর পর অবশেষে সেই মূল চক্রীর প্রত্যর্পণ সম্ভব হলো—প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে সরকারের কূটনৈতিক তৎপরতায়।
প্রত্যর্পণের পর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বলেন, “তাহাউর রানার প্রত্যর্পণ মোদী সরকারের কূটনীতির জয়। ভারতীয় ভূখণ্ড ও জনগণের বিরুদ্ধে যারা ষড়যন্ত্র করে, তাদের শাস্তি নিশ্চিত করাই আমাদের অঙ্গীকার।”
২০০৮ সালের মুম্বই হামলায় প্রাণ হারিয়েছিলেন ১৬৬ জন। লস্কর-ই-তৈবার ১০ জঙ্গি সেদিন ছড়িয়ে পড়েছিল শহরের একাধিক স্থানে। সেই হামলার মূল পরিকল্পনাকারী রানা এতদিন ছিলেন আমেরিকায়। দীর্ঘ বিচার ও আইনি প্রক্রিয়ার পর এবার তাঁকে ভারতের হাতে তুলে দিল যুক্তরাষ্ট্র। বিচার হবে এবার ভারতের মাটিতেই।
প্রত্যর্পণের খবরে কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন মহারাষ্ট্রের উপমুখ্যমন্ত্রী একনাথ শিন্ডে ও মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়নবীস। প্রধানমন্ত্রী মোদীকে ধন্যবাদ জানিয়ে তাঁরা বলেন, “এটি শুধু মুম্বইবাসীর জন্য নয়, গোটা ভারতের জন্য গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত।”
এদিকে, বিজেপি বলছে, মোদী সরকারের নিরলস চেষ্টায়ই এ সাফল্য, যা অতীতে ইউপিএ সরকার পারেনি। তবে কংগ্রেস পাল্টা দাবি করেছে, প্রত্যর্পণের প্রক্রিয়া তাদের সময়েই শুরু হয়েছিল।
প্রবীণ আইনজীবী কপিল সিব্বল ও প্রাক্তন মন্ত্রী অশ্বিনী কুমার উভয়েই বলেন, এটা নিয়ে রাজনীতি না করে বর্তমান ও পূর্ববর্তী সরকার, তদন্তকারী সংস্থা—সবাইকে কৃতিত্ব দেওয়া উচিত।
বিশ্লেষকরা বলছেন, সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে ভারতের অবস্থান এই ঘটনার মাধ্যমে আরও জোরালো হলো। আন্তর্জাতিক মঞ্চে পাকিস্তানের মুখোশও খুলে যাবে বলে মত তাঁদের।
তবে এটাও সত্যি, এক্ষেত্রে কূটনীতিতে যে জয় এসেছে, তা রাজনৈতিক ক্ষেত্রেও মোদী সরকারের শক্তি বাড়াবে—বিশেষ করে আগামী দিনের ভোটের প্রেক্ষাপটে।