প্রবল ঝড়ের কারণে বেইজিংসহ উত্তর চীনের বাসিন্দাদের ঘরে থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। বাতিল করা হয়েছে শত শত ফ্লাইট, স্থগিত রেল চলাচল।
চীন আবহাওয়া প্রশাসন (সিএমএ) জানায়, এই সম্ভাব্য রেকর্ড ভাঙা বাতাস মূলত একটি ‘ঠাণ্ডা ঘূর্ণিঝড় ব্যবস্থা’ থেকে সৃষ্টি হয়েছে, যা মঙ্গোলিয়ার ওপর গঠিত হয়ে গত শুক্রবার থেকে সপ্তাহান্তজুড়ে উত্তর চীনজুড়ে ছড়িয়ে পড়ছে।
এ ছাড়া ঝুঁকিপূর্ণ অঞ্চলের বাসিন্দাদের ‘অত্যাবশ্যক না হলে’ বাইরে না যাওয়ার আহ্বান জানিয়ে সিএমএর বিবৃতিতে আরো বলা হয়েছে, ‘১২ এপ্রিল দিনের বেলা সবচেয়ে শক্তিশালী বাতাস বইতে পারে, কিছু পর্যবেক্ষণকেন্দ্রের বাতাসের গতিবেগ ১৯৫১ সালের পর একই সময়কালের জন্য রেকর্ড ছাড়িয়ে যেতে পারে।’
বেইজিং ১০ বছরের মধ্যে প্রথমবারের মতো দ্বিতীয় সর্বোচ্চ স্তরের কমলা সতর্কতা জারি করেছে এই ঝোড়ো বাতাসের কারণে। স্থানীয় সময় শনিবার দুপুর নাগাদ বেইজিংয়ের দুটি প্রধান বিমানবন্দরে ৬৯৯টি ফ্লাইট বাতিল করা হয়েছে বলে জানিয়েছে রাষ্ট্রীয় সম্প্রচারমাধ্যম সিসিটিভি। একাধিক উচ্চগতির রেললাইনসহ বিভিন্ন ট্রেন চলাচলও স্থগিত করা হয়েছে।
বেইজিংয়ের সামার প্যালেস, টেম্পল অব হেভেন, বেইজিং চিড়িয়াখানা, ইউনিভার্সাল স্টুডিওস থিম পার্কসহ বেশ কয়েকটি দর্শনীয় স্থানও সাময়িকভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
এ ছাড়া রবিবার যেসব অর্ধ ম্যারাথন প্রতিযোগিতায় মানবসদৃশ রোবট প্রতিযোগী থাকার কথা ছিল, সেগুলোর সময়ও পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে।
সিসিটিভি আরো জানায়, বেইজিংয়ে প্রায় ৩০০টি গাছ উপড়ে পড়েছে এবং ১৯টি যানবাহন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে রাজধানীতে এখন পর্যন্ত ঝোড়ো বাতাসের কারণে কেউ আহত হওয়ার খবর পাওয়া যায়নি।
চীন বৈশ্বিকভাবে সবচেয়ে বেশি গ্রিনহাউস গ্যাস নিঃসরণকারী দেশ, যা জলবায়ু পরিবর্তনকে ত্বরান্বিত করে এবং চরম আবহাওয়ার ঘটনাকে আরো ঘন ঘন ও তীব্র করে তোলে বলে বিজ্ঞানীরা সতর্ক করছেন।
গত বছর দেশটির বিভিন্ন অঞ্চলে ঘূর্ণিঝড় ও প্রবল বৃষ্টিপাতের ফলে ব্যাপক বন্যা দেখা দেয়, যাতে বহু মানুষ নিহত ও হাজার হাজার লোককে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিতে হয়। এপ্রিলের টানা বৃষ্টির পর মে মাসে দক্ষিণ চীনে একটি মহাসড়ক ধসে পড়ে, যাতে ৪৮ জন নিহত হয়।
আরএ