স্যার চার্লস স্পেনসার চ্যাপলিন জুনিয়র (১৮৮৯-১৯৭৭) বিশ্বখ্যাত চলচ্চিত্র অভিনেতা, পরিচালক ও সুরকার। চ্যাপলিনকে বড় পর্দার শ্রেষ্ঠতম মূকাভিনেতা ও পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ কৌতুকাভিনেতা হিসেবে গণ্য করা হয়। তার কর্মজীবনের ব্যাপ্তি প্রায় ৭৫ বছর। এ সময় তার বর্ণময় ব্যক্তিজীবন ও সমাজজীবনে খ্যাতি ও বিতর্ক-দুইই নিম্ন থেকে শীর্ষবিন্দু ছুঁয়ে গেছে।
চার্লি চ্যাপলিন ১৮৮৯ সালের ১৬ এপ্রিল লন্ডনে জন্মগ্রহণ করেন। চ্যাপলিন শৈশব থেকেই শিশুশিল্পী হিসেবে ইংল্যান্ডের বিভিন্ন রঙ্গশালায় সফর করেন এবং পরে একজন মঞ্চ ও কৌতুকাভিনেতা হিসেবে অভিনয় শুরু করেন। তিনি শুরু থেকে তার চলচ্চিত্রগুলো নিজেই পরিচালনা করতেন। ১৯১৮ সালের মধ্যে তিনি বিশ্বের অন্যতম বিখ্যাত ব্যক্তিত্বের মর্যাদা লাভ করেন।
তার নির্মিত প্রথম পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র হলো- দ্য কিড (১৯২১), পরে তিনি আ ওম্যান অব প্যারিস (১৯২৩), দ্য গোল্ড রাশ (১৯২৫) এবং দ্য সার্কাস (১৯২৮) চলচ্চিত্র নির্মাণ করেন এবং এসব চলচ্চিত্রে অভিনয়ও করেন। ১৯৩০-এর দশকে তিনি সবাক চলচ্চিত্র নির্মাণ করার প্রস্তাব ফিরিয়ে দেন এবং নির্বাক সিটি লাইটস (১৯৩১) ও মডার্ন টাইমস (১৯৩৬) নির্মাণ করে প্রশংসিত হন।
চ্যাপলিন তার পরবর্তী চলচ্চিত্র দ্য গ্রেট ডিক্টেটরে (১৯৪০) অতিমাত্রায় রাজনৈতিক হয়ে ওঠেন এবং অ্যাডলফ হিটলারকে ব্যঙ্গ করেন। ১৯৪০-এর দশকে চ্যাপলিনকে নিয়ে বিতর্ক শুরু হয় এবং তার জনপ্রিয়তা কমতে থাকে।
তিনি সমাজতান্ত্রিকদের প্রতি সহানুভূতিসম্পন্ন বলে অভিযোগ ওঠে।
জীবনের শেষ সময়ে তিনি ছিলেন সুইজারল্যান্ডে। ১৯৭৭ সালের বড়দিনে সেদেশেই মহাপ্রয়াণ ঘটে চার্লি চ্যাপলিনের। মৃত্যুর পর তার রেখে যাওয়া বিশাল সম্পত্তির লোভে চুরি হয় তার কফিনও। তবে তার কফিনটি নিরাপদেই উদ্ধার করে পুলিশ।
কিন্তু চ্যাপলিনের মৃত্যুর বহু বছর পরও মর্ডার্ন টাইমস, গোল্ড রাশ, সিটি লাইটের মত বেশকিছু চলচ্চিত্র আজো প্রেরণা যোগায় পৃথিবীর নানা অঞ্চলের চলচ্চিত্র প্রেমীদের।
আরএম/টিএ