অতি দ্রুত আমার বাবার ফাঁসি কার্যকর করার দাবি জানাচ্ছি, যা জানালেন ইলিয়াস

প্রবাসী সাংবাদিক ইলিয়াস হোসেন তার বাবার ফাঁসির দাবিতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি আবেগঘন পোস্ট দিয়েছেন।

শনিবার (১৯ এপ্রিল) নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে কুষ্টিয়া সদর উপজেলার বাসিন্দা ও বিডিআর বিদ্রোহে ক্ষতিগ্রস্ত সন্তান শফিকুল সোহেলের বক্তব্য উদ্ধৃত করে তিনি লিখেছেন, “আমার বাবার ফাঁসি চাই।”

ইলিয়াস লেখেন, “আমার বাবা ছিলেন বিডিআরের সদস্য। ২৪ বছর চাকরি করেছেন, অল্প সময়ের মধ্যেই অবসর নেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ২০০৯ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারির সেই ভয়াবহ ঘটনার দিন সবকিছু বদলে যায়। আমরা জানি, সেদিন কী ঘটেছিল এবং কারা দায়ী ছিল। তাই দ্রুততম সময়ের মধ্যে বাবার ফাঁসি কার্যকর করার দাবি জানাচ্ছি।”

২০০৯ সালের পিলখানা ট্র্যাজেডির প্রসঙ্গ টেনে তিনি লেখেন, সেই ঘটনা শুধুই একটি বিদ্রোহ নয়, বরং একটি সুপরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড, যা অনেক পরিবারকে নিঃস্ব করে দিয়েছে।

পোস্টটি ঘিরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক আলোচনা শুরু হয়েছে।

তিনি লিখেন, ঘটনার পরেও আমার আব্বু কর্মরত ছিল। শুধুমাত্র মিথ্যা সাক্ষী না দেবার কারনে আজ আমার আব্বু অপরাধী সাব্যস্ত হয়েছে।

তার সর্বোচ্চ সাজা হয়েছে উল্লেখ করে পোস্টে আরো বলা হয়, কিন্তু তার বিরুদ্ধে একটা ভিডিও ফুটেজ নেই, কেউ তাকে কোন‌ সেনা অফিসার বা তাদের পরিবারের উপর হা'ম'লা করতে দেখে নাই। তাকে কেউ অ'স্ত্র সহ ঘুরতে দেখে নাই। তার বিরুদ্ধে কোন প্রকার সুনির্দিষ্ট প্রমাণ নাই। সাজানো ও মিথ্যা সাক্ষী এবং প্রহসনমূলক রায় এর মাধ্যমে আমার বাবার ফাঁ'সি'র রায় হয়েছে। জানি না কোন আইনে এই রায় দিয়েছে!

আজ ১৫/১৬ বছর তিনি কারাগারে মানবেতর জীবনযাপন করছে। আর আমার পরিবার, আমার আম্মু পাচ্ছে আরও বড়ো শাস্তি। যেসকল বেইমান স্বার্থপর বিডিআর সদস্যরা নিজের স্বার্থের জন্য মিথ্যা সাক্ষী দিয়েছিল , আজ তারাই আবার জোর গলায় কথা বলে।

ভেবেছিলাম একদিন ন্যায়বিচার পাব। মূল অপরাধীরা শাস্তির আওতায় আসবে আর নিরপরাধ রা মুক্তি পাবে।কিন্তু এখন আর সহ্য হয়না।

তাই, যেহেতু আমার বাবার ফাঁ'সির রায় হয়েছে, তার ফাঁ'সি দিয়ে দেওয়া হোক। কেন তাকে ১৫/১৬ বছর কারাগারে বন্দী করে রাখা হয়েছে?কেন তাকে অসহায় মানবেতর জীবন-যাপন করতে হচ্ছে?দুই ধরনের সাজা কেন পাবে সে?কেন তিলে তিলে কষ্ট পাবে আমার মা, আমার ছোট দুই ভাই ?

আমার স্ত্রী-সন্তান, আমার ছোট ভাইয়েরা আমার বাবার আদর-স্নেহ থেকে বঞ্চিত উল্লেখ করে পোস্টে আরো বলা হয়, আমাদের বাবা বছরের পর বছর কারাগারে মানবেতর জীবনযাপন করছে। এমনটা দেখার চাইতে বাবা আর দুনিয়াতেই নেই জেনে জীবন অতিবাহিত করা উত্তম বলে মনে করি। একটি কামরার মধ্যে বছরের পর বছর বন্দী থাকা , কারাগারের খাবার, প্রয়োজনীয় চিকিৎসার অভাব, প্রতি মাসে পরিবার থেকে তাকে টাকে পাঠানো, আম্মুর মনের অশান্তি আর সহ্য হয়না। ঐ দিকে বাবার অসহায়ত্ব, এদিকে মায়ের মানসিক য'ন্ত্র'ণা। একজন সন্তান হিসেবে আর সহ্য করতে পারছি না। এই তত্বাবধায়ক সরকারের কাছে ২৫% ও ন্যায়বিচার প্রত্যাশা করা বোকামি হবে। তারা নতুন করে আ'সা'মি তৈরি করতে ব্যাস্ত।

অথচ নিরপরাধ জে'লবন্দি ও অন্যায় ভাবে চাকরিচ্যুত দের ক্ষতিপূরণ নিয়ে এই তত্বাবধায়ক সরকারের কোন মাথা ব্যাথা নেই। তারা ফ্যা'সি'স্ট স্বৈ'রা'চারী রা'ক্ষু'সী খু'নি সরকারের প্রহসনমূলক ও মিথ্যা রায় বাতিল করতে ভয় পায়। এটা শুধু বিডিআর ক্ষেত্রেই করছে। তা এই কয় মাসে হাড়ে হাড়ে টের পেলাম। এসব নিয়ে কিছু বলে লাভ নেই। আল্লাহ্ উত্তম পরিকল্পনাকারী। আল্লাহ্ আখেরাতে উত্তম বদলা দেবেন ইনশাআল্লাহ।

২০০৯ এর ঐ হত্যাকাণ্ডের পরিকল্পনাকারী, সহযোগিতা কারী, মিথ্যা সাক্ষী প্রদানকারী, মিথ্যা প্রচারকারী ও অন্যান্য সকল বে'ই'মান দের আল্লাহ্ অবশ্যই সঠিক বিচার করবেন।

আল্লাহ্ ছাড় দেয়, ছেড়ে দেয় না।যেহেতু ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা হচ্ছে না ও সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। তাই, আমার বাবার ফাঁ'সি কার্যকর করে তাকে ও আমাদের পরিবারকে মুক্তি দেবার জোর দাবী জানাচ্ছি। বাকি সকলের চাকরি পূনর্বহাল হোক এই দাবি জানাচ্ছি।

আবারো বলছি, আমার নিরপরাধ বাবা কে আমাদের মাঝে ফিরিয়ে দিন না হয় ফাঁ'সি কার্যকর করার জোর দাবি জানাচ্ছি।

শফিকুল সোহেল

ক্ষতিগ্রস্ত বিডিআর সন্তান

কুষ্টিয়া সদর।

আরএ

Share this news on:

সর্বশেষ

img
মরিচ গুঁড়া ছিটিয়ে ছুরিকাঘাত, হাসপাতালে কন্নড় অভিনেত্রী Jul 13, 2025
img
স্টারকিড নয়, অভিনেত্রী হয়ে উঠতে চান শানায়া কাপুর Jul 13, 2025
img
গাজায় ইসরায়েলি হামলায় একদিনে নিহত অন্তত ১১০ ফিলিস্তিনি Jul 13, 2025
img
তরুণ প্রজন্ম আর কোনো নির্বাচনী ভাগ-বাটোয়ারায় বিশ্বাস করে না: নাহিদ ইসলাম Jul 13, 2025
img
ঢাকায় হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টির সম্ভাবনা Jul 13, 2025
img
শঙ্কামুক্ত চাঁদপুরের সেই খতিব, আসামির জবানবন্দিতে যা জানা গেল Jul 13, 2025
img
ক্ষমতায় গেলে বিএনপি আরও বেপরোয়া হয়ে উঠবে: এনসিপি Jul 13, 2025
img
সংরক্ষিত নারী আসনে সরাসরি ভোটের দাবি মহিলা পরিষদের Jul 13, 2025
img
রংপুর মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা গ্রেফতার Jul 13, 2025
img
ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপের রোমাঞ্চকর ফাইনালে আজ মাঠে নামছে চেলসি-পিএসজি Jul 13, 2025
img
আরও পাঁচ দিন বজ্রসহ ভারি বৃষ্টির সম্ভাবনা Jul 13, 2025
img
বাংলাদেশে অপরাজনীতির কবর রচনা করতে হবে : নুরুল হক নুর Jul 13, 2025
img
মধ্যপ্রাচ্যে সন্তান জন্ম কমে অর্ধেকে, সমাজ বদলের ইঙ্গিত Jul 13, 2025
img
আর কেউ ব্যাকবেঞ্চার নয়, মালয়ালম সিনেমা বদলে দিল ক্লাসের চিত্র Jul 13, 2025
img
নড়াইলে পানিতে ডুবে প্রাণ গেল ২ জনের Jul 13, 2025
img
রাশিয়ার সঙ্গে পরমাণু চুক্তির বিষয়ে স্পষ্ট বার্তা ইরানের Jul 13, 2025
img
স্বর্ণের দাম ঊর্ধ্বমুখী, আগামীতে আরও বাড়ার সম্ভাবনা Jul 13, 2025
img
চেয়ারের মজা যদি নিতে হয়, চেয়ারের দায়িত্বও নিতে হবে : রুমিন ফারহানা Jul 13, 2025
img
অপকর্মকারীদের বেশিরভাগই ৫ আগস্টের পর দলে ঢুকেছে: সোহেল Jul 13, 2025
img
মিটফোর্ডের ঘটনার বিচার চেয়ে নওগাঁয় ছাত্র-জনতার মশাল মিছিল Jul 13, 2025