হল ভাড়া করতে গেলেও দিচ্ছে না, জি এম কাদেরের অভিযোগ

জাতীয় পার্টির বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র হচ্ছে অভিযোগ করেছেন দলের চেয়ারম্যান জিএম কাদের।বনানীতে চেয়ারম্যানের কার্যালয়ে শনিবার সকালে বর্ধিত সভার প্রথম দিন দেওয়া বক্তব্যে তিনি বলেন, “আমরা যাতে কাউন্সিল করতে না পারি তার বন্দোবস্ত হচ্ছে ষড়যন্ত্রমূলকভাবে। আমরা যখন হল ভাড়া করতে যাচ্ছি, কেউ আমাদের হল দিতে চাচ্ছে না।

“এই পথ দেখিয়ে লাঙল কেড়ে নেওয়া, আমাদের রাজনীতি থেকে দূরে রাখার একটা ষড়যন্ত্র হচ্ছে। এগুলোর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে। মাঠে থাকতে হবে, যুদ্ধক্ষেত্র ছাড়া যাবে না। আমরা মাঠে থাকব।”

আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর চাপে থাকার মধ্যে বর্ধিত সভা করছে জাতীয় পার্টি। শনি ও রবিবার এই সভা হবে।জাতীয় পার্টি সুবিধাভোগী, সুবিধাবাদী দল নয় দাবি করেন জি এম কাদের।

তিনি বলেন, “একটা কথা আমি পরিষ্কারভাবে বলতে চাই, আর কোনো সুবিধাভোগী, সুবিধাবাদী রাজনীতি জাতীয় পার্টি আমার নেতৃত্বে কখনো আর করবে না। কেউ যদি করতে চান, তাদেরকে দলে স্থান দেওয়া হবে না।”

২০০৮ সাল থেকে আওয়ামী লীগের সঙ্গে জোট বা সমঝোতা করে জাতীয় পার্টি মোট চারটি নির্বাচন করেছে। আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর অতীতের এই সিদ্ধান্তের কারণে এখন তারা চাপে আছে। সরকার পতনের পর বিভিন্ন মহল থেকে দলটিকে আওয়ামী লীগের দোসর বলা হচ্ছে।

যদিও জি এম কাদের বার বার এই অভিযোগ অস্বীকার করে শেখ হাসিনা সরকারের সমালোচনা করেছেন বলে বক্তব্য দিয়েছেন।শনিবারও সেই প্রসঙ্গ টানেন জাপা চেয়ারম্যান।

তিনি বলেন, “বিভিন্নভাবে আমাদের নামে অনেক ধরনের অপপ্রচার হচ্ছে৷ কিছু মানুষ আমাদেরকে নানাভাবে হেনস্তা করার চেষ্টা করছে। ফেইসবুকসহ অন্যান্য স্যোশাল মিডিয়ায় বিভিন্ন বক্তব্য, বিবৃতি দিয়ে জানাশোনা কথাকে বিভিন্নভাবে তুলে ধরছেন। বারেবারে আমাদেরকে দোষারোপ করার চেষ্টা করছেন এক শ্রেণির মানুষ।

“তাদের কথা হল, আমরা সুবিধাভোগী, সুবিধাবাদী। সে ধরনের রাজনৈতিক দল আমরা নই। হয়ত তারা কিছু উদাহরণ দেয়। তবে, সর্বত সময়ে আমরা একটা কথা বলেতে চাই, আমাদের জাতীয় পার্টির সিংহভাগ মানুষ সবসময় জনগণের সঙ্গে ছিল। সবসময় জনগণের স্বার্থে তারা সংগ্রাম করেছে এবং সবসময় জনগণের সঙ্গে তারা থাকবে।”

দেশে মানুষের জানমালের নিরাপত্তা নেই মন্তব্য করে জি এম কাদের তিনি বলেন, “মানুষের জান-মাল এবং ইজ্জতের কোনো নিরাপত্তা নেই। আপনি আজকে কোথাও যাচ্ছেন, কেউ আপনাকে পিটিয়ে মেরে ফেলবে না, গুলি করে মেরে ফেলবে না, তার কোনো নিশ্চয়তা কোথাও নেই। এখন দেশে একটা কঠিন সময় পার করছি আমরা। দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণ হতাশ এবং আতঙ্কগ্রস্ত; এটাই হল বাস্তবতা।

“বেশিরভাগ মানুষ বিভিন্নভাবে নির্যাতিত, নিপীড়িত, নিষ্পেষিত। স্বাভাবিকভাবে তাদের যে অধিকার, তারা সেটা ভোগ করতে পারছেন না এবং এ বিষয়ে তারা কোনো বিচারও কারো কাছে তারা দিতে পারছেন না।”

মানুষের সুস্থভাবে বেঁচে থাকার নিশ্চয়তা নেই মন্তব্য করে তিনি বলেন, “আপনার বাড়িঘর এবং ব্যবসাকেন্দ্র হঠাৎ করে কেউ এসে সরাসরি আক্রমণ করবে না, লুটতরাজ করবে না, এটার কোনো নিশ্চয়তা নেই। আপনাকে যেকোনো জায়গায় অপমানিত করার জন্য যেকোনো ঘটনা ঘটতে পারে। আপনার পরিবার নিয়ে আপনি সুস্থভাবে বেঁচে থাকতে পারবেন, তার নিশ্চয়তা আজ বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে নেই।”

তিনি বলেন, “এই প্রেক্ষিতে আমরা বিশ্বাস করি, নির্যাতিত, নিপীড়িত মানুষ আমাদের উপর ভরসা করতে চায়। এখন এই সিংহভাগ মানুষের পক্ষে দাঁড়ানোর মতো লোক, দল বাংলাদেশে দাঁড়িয়ে উঠতে পারছে না। অত্যাচার-নিপীড়ন তাদের উপর হচ্ছে। আমরা দাঁড়িয়ে আছি এবং দাঁড়িয়ে থাকব।”

দলের নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে জিএম কাদের বলেন, “আমি মনে করি এখনই সময়। আল্লাহ আমাদেরকে এই সুযোগ দিয়েছেন। আপনারা দাঁড়িয়ে যাবেন, নির্যাতিত, নিপীড়িত মানুষের পাশে। কোনোরকম ভয়-ভীতি, শঙ্কিত হবেন না। আপনারা যদি জনগণের কথা বলেন, জনগণ আপনাদের সমর্থন দেবে।”

জাতীয় পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু, দলটির প্রেসিডিয়াম সদস্য শেরিফা কাদের এ সময় উপস্থিত ছিলেন।


এমআর/টিএ



Share this news on:

সর্বশেষ

img
নির্বাচনের আগে যেকোনো মূল্যে পরিস্থিতির উত্তরণ ঘটানো হবে: উপ-প্রেস সচিব Jul 12, 2025
img
টলিউডে পুজার নতুন শুরু, সঙ্গী দুলকার Jul 12, 2025
img
মিটফোর্ডে হত্যার ঘটনায় জড়িত সবাইকে আইনের আওতায় আনা হবে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা Jul 12, 2025
img
ধাড়াক ২ ট্রেলারে নজর কাড়লেন সিদ্ধান্ত ও তৃপ্তি Jul 12, 2025
img
'জবাবদিহিতার একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে দেখছি', সায়মা ওয়াজেদকে বাধ্যতামূলক ছুটি নিয়ে প্রেস সচিব Jul 12, 2025
img
২৪ ঘণ্টায় তাপমাত্রা কিছুটা বাড়ার আভাস Jul 12, 2025
img
‘বাহুবলী ৩’ কি আসবে? দশ বছর পরেও প্রশ্ন অনড় Jul 12, 2025
img
‘সরকার বরাবরের মতোই নীরব’, মিটফোর্ডের ঘটনায় বাঁধন Jul 12, 2025
img
মিটফোর্ডের ঘটনায় আরও একজনসহ মোট গ্রেফতার ৫ Jul 12, 2025
img
কেবল পর্দার সামনে নয়, ক্যামেরার পেছনেও আসছেন এই অভিনেতারা Jul 12, 2025
তোমরা তো ১৩ মাসের নেতা; মুখ খুললেন সাংবাদিক নেতারা! Jul 12, 2025
img
'তারেক রহমানকে নিয়ে রাজপথে যে অশ্লীল অশ্রাব্য স্লোগান দেয়া হচ্ছে তার পরিণতি ভালো হবে না' Jul 12, 2025
img
নতুন বাংলাদেশের আকাঙ্ক্ষা ও বাস্তবতায় আসমান জমিন ফারাক: রিফাত রশিদ Jul 12, 2025
img
শ্রীলঙ্কাকে উড়িয়ে দিলেও ফিনিশিংয়ে ভরসা পাচ্ছেন না কোচ Jul 12, 2025
img
কুবি শিক্ষার্থীদের ৩টি বাস উপহার দেওয়ার ঘোষণা দিলেন উপদেষ্টা আসিফ Jul 12, 2025
img
ফেনীর বন্যা দুর্গত এলাকা পরিদর্শনে উপদেষ্টা ফারুক-ই-আজম Jul 12, 2025
img
মধ্যপ্রাচ্যে ট্রাম্পের ‘শান্তির তত্ত্ব’ ভেস্তে গেছে: ইরান Jul 12, 2025
img
আবারও একসঙ্গে রাজ–মন্দিরা, আসছে ‘প্রতিদ্বন্দ্বী’ Jul 12, 2025
img
জোতাকে সম্মান জানিয়ে চিরতরে অবসরে লিভারপুলের ২০ নম্বর জার্সি Jul 12, 2025
img
পাশবিক এই হত্যাকাণ্ডের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা নেয়া হবে: আসিফ নজরুল Jul 12, 2025