শতবর্ষী মায়ের সেবাযত্ন না করায় স্ত্রীকে শ্বাসরোধে হত্যা করেন মসজিদের ইমাম আব্দুল মোমিন (৬৮)। হত্যার পর লাশ ফেলে আসেন বাড়ির সেপটিক ট্যাংকে। এরপর নিয়মিতভাবেই চলে যান ফজরের নামাজ পড়াতে।
চাঞ্চল্যকর এই ঘটনা ঘটেছে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার ঘোলপাশা ইউনিয়নের ধনুসাড়া গ্রামে। গত ৩ ফেব্রুয়ারি সকালে ৬৫ বছর বয়সী শাহিদা বেগমের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) চৌদ্দগ্রাম থানায় আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ঘটনার বিস্তারিত তুলে ধরেন ওসি মোহাম্মদ হিলাল উদ্দীন আহমেদ।
প্রথমে শাহিদার ছেলে মাছুম বিল্লাহ অজ্ঞাতনামাদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলায় সাক্ষী করা হয় ইমাম মোমিনকে। তবে তদন্তে পুলিশের সন্দেহ ঘনীভূত হলে ২৭ মার্চ তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। রিমান্ড শেষে বুধবার (২৩ এপ্রিল) আদালতে ১৬৪ ধারায় দেওয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে স্ত্রীকে হত্যার কথা স্বীকার করেন তিনি।
জবানবন্দিতে মোমিন জানান, তাঁর মা আতর বানুর বয়স ১৩০ বছরের কাছাকাছি। চলাফেরা করতে না পারলেও তিনি সুস্থ। মায়ের সেবাযত্ন নিয়ে স্ত্রী শাহিদার সঙ্গে প্রায়ই ঝগড়া হতো। ঘটনার রাতে এমনই এক বাকবিতণ্ডার একপর্যায়ে তিনি পাশের বালিশ দিয়ে স্ত্রীর মুখ চেপে ধরেন। কিছুক্ষণের মধ্যেই তাঁর স্ত্রী নিস্তেজ হয়ে যান।
এরপর তিনি ভোররাতে স্ত্রীর লাশ কাঁধে করে বাড়ির পাশের শৌচাগারের সেপটিক ট্যাংকে ফেলে দেন। নিজের পোশাক খুলে রেখে গোসল সেরে মসজিদে গিয়ে ফজরের নামাজ পড়ান। বাসায় ফিরে ছেলেকে ফোন করে জানান, ‘তোমার মাকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।’
সকালে পরিবারের সদস্যদের খোঁজাখুঁজির একপর্যায়ে সেপটিক ট্যাংকের ঢাকনা খুলতেই বিবস্ত্র অবস্থায় শাহিদার লাশ দেখতে পান স্বজনেরা। পরে পুলিশ এসে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায়।
তদন্ত কর্মকর্তা এসআই হেশাম উদ্দিন বলেন, ‘আদালতে দেওয়া স্বীকারোক্তিতে মোমিন একাই স্ত্রীকে হত্যার কথা স্বীকার করেছেন। দ্রুততম সময়ের মধ্যে মামলার চার্জশিট দেওয়া হবে।’
এসএস