প্রশাসক নিয়োগ ইস্যুতে অ্যাসোসিয়েশন অব ট্রাভেল এজেন্টস অব বাংলাদেশ (আটাব)-এর সভাপতি ও মহাসচিবকে শোকজ (কারণ দর্শানো নোটিশ) দিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। মন্ত্রণালয়ের উপসচিব তাহসিনা বেগম সই করা এক নোটিশে এ আদেশ দেওয়া হয়।
এরপর সভাপতি ও মহাসচিবের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাৎ, অর্থ পাচার ও দুর্নীতির বিষয়ের অভিযোগ তুলে সংগঠনটির কার্যনির্বাহী সদস্যপদ থেকে স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করেছেন নড়িয়া ট্রাভেলস অ্যান্ড ট্যুরস’র স্বত্বাধিকারী সবুজ মুন্সী।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে গত মঙ্গলবার আটাব সভাপতি ও মহাসচিবকে পাঠানো কারণ দর্শানোর নোটিশে বলা হয়, অ্যাসোসিয়েশন অব ট্রাভেল এজেন্টস্ অব বাংলাদেশ (আটাব) এর পরিচালনা পর্ষদ বাতিলপূর্বক প্রশাসক নিয়োগের আবেদন পাওয়া গেছে।
এমতাবস্থায়, আটাব এ বাণিজ্য সংগঠন আইন, ২০২২ এর ১৭ ধারা মোতাবেক কেন প্রশাসক নিয়োগ করা হবে না, পত্র প্রাপ্তির ৭ কার্যদিবসের মধ্যে লিখিতভাবে জবাব দাখিলের জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হলো।
গতকাল বৃহস্পতিবার সংগঠনটির কার্যনির্বাহী সদস্যপদ থেকে স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করেন সবুজ মুন্সী। নিজ প্রতিষ্ঠান নড়িয়া ট্রাভেলস অ্যান্ড ট্যুরস’র প্যাডে পদত্যাগের কারণ হিসেবে জানিয়েছেন, আটাব কমিটির স্বেচ্ছাচারিতা ও অনিয়ম উল্লেখপূর্বক সাধারণ সদস্যদের কর্তৃক বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে অভিযোগ দায়ের হওয়ায় বিব্রতবোধ করছেন তিনি।
এর আগে আটাব সভাপতি ও মহাসচিবের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাৎ, অর্থ পাচার ও দুর্নীতির বিষয়ের অভিযোগ তুলে ধরে জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা’র মহাপরিচালক, আয়কর গোয়েন্দা ও তদন্ত ইউনিটের কর কমিশনার, দুদক চেয়ারম্যান, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সেন্ট্রাল ইন্টিলিজেন্স সেল’র মহাপরিচালক বরাবর চিঠি দিয়েছেন তিনি।
চিঠিতে তিনি উল্লেখ করেন, আটাব সদস্যদের বিদেশে ফেম ট্রিপের নামে বিভিন্ন সময়ে সায়মন ওভারসীজ ও সায়মন হলিডেজ’র মাধ্যমে বিদেশে অর্থপাচার করে আসছেন সংগঠনটির সভাপতি ও মহাসচিব। মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন তিনি।
অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে- আটাব সভাপতি আব্দুস সালাম আরেফের মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান এয়ার স্পীড প্রাইভেট লিমিটেডের নামে ভিন্ন ভিন্ন চেক ইস্যু করে মোট ৯৭ লাখ ৫৪ হাজার ৮৪৬ টাকা এবং মহা সচিব মিসেস আফসিয়া জান্নাত সালেহ এর মালিকাধীন প্রতিষ্ঠান সায়মন ওভারসীজ লিমিটেডের নামে মোট ৭৭ লাখ ২১ হাজার ১১৭ টাকার চেক ইস্যু করে আত্মসাৎ করে। এছাড়াও বিভিন্ন জাল ইনভয়েস এর মাধ্যমে আটাবের টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন।
নির্বাচন ও আটাব মেলাসহ বিভিন্ন খাতে অতিরিক্ত ব্যয় দেখানো হয়েছে যার স্বপক্ষে কোন বিল বা ইনভয়েস জমা দেওয়া হয়নি। বিগত ২০১৮ সাল থেকে আটাব মহাসচিব আফসিয়া জান্নাত সালেহ এমিরেটস হলিডেজের নামে যাত্রীদের কাছ থেকে সংযুক্ত আরব আমিরাতের ভিসা ফি ও প্যাকেজের টাকা সংগ্রহ করে অবৈধভাবে আরব আমিরাতে পাচার করছে। এছাড়াও বিভিন্ন অফিসের টাকা তারা অবৈধভাবে বিদেশে পাচার করে থাকে বলেও অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে।
এফপি/টিএ