দুর্নীতি, অর্থ পাচার ও ঋণ খেলাপির অভিযোগে দেশের অর্ধশতাধিক ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে মামলা করে ১৩ হাজার কোটি টাকারও বেশি সম্পদ ক্রোক ও অবরুদ্ধ করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। আদালতের নির্দেশে গত আট মাসে এসব সম্পদের বিরুদ্ধে এ পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
দুদক সূত্র বলছে, গত বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ব্যাপক জনচাপের মুখে দুদক অনুসন্ধান শুরু করে। এতে অর্থ পাচার ও দুর্নীতির স্পষ্ট প্রমাণ মেলে বেশ কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে। এরপরই মামলা করে কমিশন, যার প্রেক্ষিতে আদালত এই সম্পদ জব্দের আদেশ দেয়।
দুদকের মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন বলেন, “এত কম সময়ে এত বিপুল পরিমাণ সম্পদ জব্দের নজির আগে নেই। রক্ষণাবেক্ষণের বিষয়েও যথাযথ ব্যবস্থাপনা করা হয়েছে।”
জব্দকৃত সম্পদের মধ্যে রয়েছে—সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তার বোন শেখ রেহানা ও পরিবারের সদস্যদের সম্পত্তি, সিকদার গ্রুপ, এস আলম গ্রুপ, নাবিল গ্রুপ, সালমান এফ রহমান, সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদ, এনবিআরের সাবেক সদস্য মতিউর রহমান ও সাবেক প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপুসহ আরও অনেকের নাম।
দুদকের তথ্যমতে, দেশে গত আট মাসে ১২ হাজার ১৩৮ কোটি টাকার সম্পদ অবরুদ্ধ ও ৭৭৩ কোটি টাকার সম্পদ ক্রোক করা হয়েছে। বিদেশেও ১২০ কোটি টাকার সম্পদ ক্রোক এবং ৪৫ কোটি টাকার সম্পদ অবরুদ্ধ হয়েছে।
ক্রোক করা সম্পদের মধ্যে রয়েছে: ১৯১ একর জমি, ২৮টি বাড়ি ও ৩৮টি ফ্ল্যাট, বিদেশে ৫৮২টি ফ্ল্যাট, ২৩টি গাড়ি, ১৫টি প্লট, ৩টি জাহাজ, ২৩টি কোম্পানির কোটি টাকার বৈদেশিক মুদ্রা।
অবরুদ্ধ সম্পদের মধ্যে রয়েছে: ১,০১০টি ব্যাংক হিসাবে ৮১৭ কোটি টাকা, ৮,৭১৩ কোটি টাকার শেয়ার, ৬৬০ গ্রাম সোনা, নগদ ডলার ও ইউরো
৯টি বিও হিসাবের ৯ কোটি টাকার স্থিতি।
দুদকের সাবেক লিগ্যাল শাখার মহাপরিচালক মঈদুল ইসলাম বলেন, “এই বিপুল সম্পদ জব্দই প্রমাণ করে, দুদক চাইলে অনেক কিছু করতে পারে।”
এসএস/এসএন