আগামী সাত মাসেই বদলে যেতে পারে বাংলাদেশের ভাগ্য : প্রেসসচিব

বাংলাদেশ কি নতুন এক শিল্পবিপ্লবের দ্বারপ্রান্তে? এমন ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলমের একটি ফেসবুক স্ট্যাটাস থেকে। তার বক্তব্যে উঠে এসেছে দেশের শিল্প ও প্রযুক্তি খাতে সম্ভাবনার নতুন দিগন্তের ইঙ্গিত।  

বৃহস্পতিবার (১ মে) সকালে দেওয়া ওই পোস্টে শফিকুল জানান, তিনি আলোচনায় বসেছিলেন প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের চেয়ারম্যান ও সিইও আহসান খান চৌধুরীর সঙ্গে। আহসান খান সম্প্রতি তাইওয়ান সফর শেষে দেশে ফিরে এসেছেন এবং জানিয়েছেন,প্রাণ-আরএফএল এখন একাধিক চীনা কোম্পানির সঙ্গে যৌথ বিনিয়োগ নিয়ে আলোচনায় আছে। বিশ্ববাণিজ্যের চেহারা বদলাচ্ছে।

যুক্তরাষ্ট্রের নতুন নীতির কারণে উৎপাদন এখন পূর্ব এশিয়া থেকে সরছে দক্ষিণ এশিয়ার দিকে। সেই জায়গায় বাংলাদেশও উঠে আসার সুযোগ পেয়েছে।

প্রাণ-আরএফএল এখন আর নতুন জমিতে ফ্যাক্টরি করছে না। তারা পুরনো ও অব্যবহৃত সরকারি-বেসরকারি কারখানা নিয়ে সেগুলো রূপান্তর করছে আধুনিক রপ্তানিমুখী প্ল্যান্টে।

রংপুরের পুরনো তামাক কারখানা এখন জুতা তৈরির প্ল্যান্ট, রাজশাহীর পুরনো পাটকল এখন রপ্তানি ইউনিটে রূপান্তরিত।

এই ধরনের উদ্যোগ এখন আরো বিস্তৃত হচ্ছে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে। আহসান খান বলেন, "বিশ্ববাজারে পরিবর্তনের যে সুযোগ এসেছে, সেটা অনেক বড়। দরকার শুধু একটা অনুকূল পরিবেশ, যেখানে উৎপাদন আর রপ্তানি ঠিকভাবে চালানো যাবে।

শফিকুল আলম লিখেছেন, এখনকার নিউ ইয়র্ক টাইমস, ফাইনান্সিয়াল টাইমস বা ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল দেখলেই বোঝা যায়, ব্রেটন উডস বা ডব্লিউটিওর ওপর ভিত্তি করে গড়ে ওঠা পুরনো বাণিজ্যব্যবস্থা ভেঙে পড়ছে। এই ব্যবস্থায় চীন, ভিয়েতনাম, কোরিয়া, সিঙ্গাপুর সবাই রপ্তানি দিয়ে ধনী হয়েছে। অথচ দক্ষিণ এশিয়া পিছিয়ে থেকেছে।এখন নতুন সুযোগ এসেছে। বাংলাদেশ সেই সুযোগ নিতে পারবে কি না, এটাই বড় প্রশ্ন।

রাজনীতি এখানে বড় ভূমিকা রাখবে। ইতিবাচক দিক হলো, এখন দেশের প্রায় সব রাজনৈতিক দলই ব্যবসাবান্ধব মানসিকতা দেখাচ্ছে।তবে শফিকুল আলম মনে করেন, বড় চ্যালেঞ্জটা হবে পণ্য পরিবহন আর সরবরাহ ব্যবস্থায়। যদি আমরা দ্রুত রপ্তানি করতে না পারি, তাহলে এই সম্ভাবনাও শেষ হয়ে যেতে পারে।

চট্টগ্রাম বন্দর নিয়ে বড় পরিকল্পনা

সরকার এই বিষয়টা গুরুত্ব দিয়েই দেখছে। চট্টগ্রাম বন্দরের সক্ষমতা ছয় গুণ বাড়ানোর পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। এতে বছরে ৭.৮৬ মিলিয়ন কনটেইনার সামাল দেওয়া সম্ভব হবে। এই প্রকল্পে আন্তর্জাতিক মানের কোনো কোম্পানিকে যুক্ত করার পরিকল্পনাও আছে।এটা সফল হলে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যজগতে পরিষ্কার বার্তা যাবে,বাংলাদেশ এখন প্রস্তুত, বিনিয়োগের জন্য খোলা।

সামনের ছয়-সাত মাসই টার্নিং পয়েন্ট

শফিকুল আলম লিখেছেন, এই ছয়-সাত মাসই নির্ধারণ করে দেবে, বাংলাদেশ সত্যি কি পারবে রপ্তানিনির্ভর শিল্পশক্তি হিসেবে নিজেকে গড়ে তুলতে?আমাদের সামনে বড় একটা সুযোগ এসেছে। এখন দেখার বিষয় আমরা কি সেটা কাজে লাগাতে পারব?

আরএম/টিএ  

Share this news on:

সর্বশেষ

img
জাপানে সাপের কারণে থেমে গেল ব্যস্ততম বুলেট ট্রেন May 01, 2025
img
রাবি উপাচার্যের বাসভবন ঘেরাও ছাত্রশিবিরের May 01, 2025
img
সময় এসেছে তাদের খোঁজ নেওয়ার, সব তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে: ইলিয়াস হোসেন May 01, 2025
img
ইউপি চেয়ারম্যান-নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ-শ্রমিক লীগ নেতা গ্রেফতার May 01, 2025
img
ভারত থেকে দুই পাকিস্তানি তারকার ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টে ঢোকা যাচ্ছে May 01, 2025
img
পুলিশ বাহিনীকে রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত দেখতে চায় জনগণ May 01, 2025
img
বুয়েটের কনসার্ট থেকে বাদ পড়ে যা বললেন ন্যান্সি May 01, 2025
img
মববাজি দিয়ে দেশের মানুষের ওপর অত্যাচার মেনে নেব না: জিএম কাদের May 01, 2025
ভালো ও খারাপ মুহূর্তে যা করবেন May 01, 2025
img
সংস্কার ও নির্বাচনকে মুখোমুখি করে সরকারের একটি অংশ বিরোধ উসকে দিতে চায় : তারেক রহমান May 01, 2025