সরকারের প্রতি সমর্থন-ভালোবাসা আছে, তার মানে এটা নয় যা ইচ্ছে তাই করবেন: বললেন নুর

কক্সবাজারের ভূমি ব্যবহার করে রাখাইন রাজ্যে তথাকথিত সহায়তা পৌঁছানোর নামে যে মানবিক করিডরের আলোচনা চলছে, সরকারকে ওইখানেই ফুলস্টপ দিতে আহ্বান জানিয়ে আর এক পা'ও না আগাতে বলেছেন গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর।

বৃহস্পতিবার (০১ মে) সন্ধ্যায় আশুলিয়ার জিরাবোতে দেওয়ান ইদ্রিস উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজ মাঠে বাংলাদেশ শ্রমিক অধিকার পরিষদের আয়োজিত শ্রমিক সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।

এসময় তিনি আরও বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি সমর্থন-ভালোবাসা আছে, তার মানেই এটা নয় যা ইচ্ছে তাই করবেন, আর আমরা তা মেনে নেব।

তিনি বলেন, আমি ও আমার অপরাপর বন্ধু প্রতি সংগঠন গণঅভ্যুত্থানের অংশীদার রাজনৈতিক দল সমূহকে বলবো, বন্ধুগণ নির্বাচন কবে হবে আমরা কিন্তু জানি না। আমরা রাষ্ট্র সংস্কার চাই, প্রফেসর ইউনূসের প্রতি আমাদের পরিপূর্ণ শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা আছে। তবে সামগ্রিক পরিস্থিতি আমার কাছে বেশি সুবিধার মনে হচ্ছে না। এইটুকু এই মাঠে সোশ্যাল মিডিয়ায় বক্তব্য থাকবে বলে গেলাম, পরে মিলিয়ে নিবেন অসুবিধা কোথায় আজকে শ্রমিক সমাবেশ হলেও আমরা একটা কথা বলতে চাই দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের উপর ঝুকি তৈরী হয় এমন কোন সিদ্ধান্ত অন্তবর্তীকালীন সরকার কিংবা কোন সরকারকেই নিতে দেয়া হবে না।

এসময় নুর আওয়ামীলীগের রাজনীতি নিষিদ্ধে দাবি করে আরো বলেন, যে আওয়ামীলীগের দুর্বৃত্তরা এতো জঘন্য ইতিহাসের বর্বরতম গণহত্যা ঘটালো। এতো মানুষকে পঙ্গু করলো। এরপরে তাদেরকে নিষিদ্ধের বিষয়ে আমরা কোনো সরকারি সিদ্ধান্ত দেখি নাই। আমরা পরিষ্কারভাবেই এই সরকারকে বলতে চাই, অনতি বিলম্বে এই গণহত্যাকারী রাজনৈতিক দল আওয়ামীলীগকে নিষিদ্ধ করতে হবে। আওয়ামীলীগসহ গণহত্যার সহযোগী অন্যান্য অঙ্গসংগঠন মাফিয়া লুটেরাদের সম্পদ বাজেয়াপ্ত করতে করে আহত বা নিহতদের পরিবারের কল্যাণে ব্যয় করতে হবে।

এসময় তিনি আরো বলেন, কথা সত্য, কোনো কোনো উপদেষ্টার মধ্যে আমরা আপোষকামী মনোভাব লক্ষ্য করছি। তারা ওই প্রশাসনের সঙ্গে মিলে রিফাইন আওয়ামীলীগ নামে একটা আওয়ামীলীগ এখানে আনতে চাচ্ছে। আমরা বলতে চাই, আগুন নিয়ে খেলবেন না। আমরা কোনো স্বার্থের জন্য রাজনীতি করি না, আন্দোলন করি না । তবে একটা বিষয় পরিষ্কার করতে চাই, আওয়ামীলীগের প্রশ্নে গণঅধিকার পরিষদ বিন্দু মাত্র ছাড় দিবে না।
জুলাই গণঅভ্যুত্থান নিয়ে নুর বলনে, জুলাই গণঅভ্যুত্থানকে কেন্দ্র করে আমাদের মধ্যে জাতীয় ঐক্য ও সংহতি তৈরি হয়েছে। জাতীয় ঐক্য ও সংহতি বিনষ্ট হলে ওই ফ্যাসিবাদ ফিরে আসবে এবং বাংলাদেশ স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের ঝুঁকিতে পড়বে। আবার এটা ভারতীয় তাবেদার শ্রেণী তৈরি হবে। কাজেই গণঅধিকার পরিষদ এই গণঅভ্যুত্থানে তার অবদান কি সেটা আপনারা জানেন।

গণ অধিকার পরিষদের নেতাকর্মীদের উপর হামলা নিয়ে নুর বলেন, দুঃখ লাগে, কষ্ট হয়, উদ্বিগ্ন হই । এখনই যখন মাঝে মাঝে শুনি গণঅধিকার পরিষদের নেতাকর্মীদের সাথে কোথাও কোথাও ঝামেলা হচ্ছে। প্রোগামে বাঁধা দেওয়া হচ্ছে। ধরা কে সড়া জ্ঞান মনে করবেন না। নির্বাচনের তাল ঠিক নাই, নির্বাচন কবে হবে কেউ জানে না। আমরা সবাই বলছি সংস্কারের পাশাপাশি দ্রুত সময়ের মধ্যে নির্বাচন হবে। কিন্তু আমাদের বুঝতে হবে এই দাবি কোনো মাঠে আসছে? তার পিছনে ঘটনা আছে। কাজে কেউ কেউ ক্ষমতায় না গিয়ে এখনি যদি মানুষের উপর আধিপত্য বিস্তার, জুলুম-নির্যাতন করেন, মানুষ কিন্তু ভোটের মাঠে তার জবাব দিবে। ভুলে যাবেন না জনগণ এখন অনেক সচেতন। এই জনতা স্বাধীন চেতা আগামীর রাজনীতিতে আপনারা দেখবেন কিভাবে বৈপ্লবিক পরিবর্তন হয়। গণঅধিকার পরিষদ ফ্যাসিবাদ আন্দোলনে আপোষহীন আন্দোলনে লড়াই সংগ্রাম করেছে।আগামীতেও দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব, গণতন্ত্রের জন্য সুস্থ ধারার রাজনীতির প্রতিষ্ঠায় আপোষহীন ভাবে লড়াই সংগ্রাম করবে, জাতীয় ঐক্য ও সংহতি প্রতিষ্ঠায় সকল দলকে নিয়ে এক সাথে চলবে, এক সাথে কাজ করবে। অন্যান্য রাজনৈতিক দলের প্রতিও সেই আহ্বান রাখেন তিনি।

এসময় উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশ শ্রমিক অধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি আব্দুর রহমান, গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মো: রাশেদ খান, গণঅধিকার পরিষদের আইন বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট শেখ শওকত হোসেন ফরহাদসহ বিভিন্ন শিল্প কারখানার শ্রমিকরা।

আরআর/টিএ

Share this news on:

সর্বশেষ

img
অপর্ণা সেনের মেয়ে কঙ্কনার প্রশংসায় পরমব্রত চট্টোপাধ্যায় Dec 03, 2025
img
যমুনা অভিমুখে বিক্ষোভ আগামীকাল, মশাল মিছিল শুক্রবার Dec 03, 2025
img
তিন দফা দাবিতে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে তালা ঝুলিয়ে চলছে ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ Dec 03, 2025
img
পুঁজিবাজারে লেনদেন বেড়েছে সামান্য, অধিকাংশ শেয়ারে দরপতন Dec 03, 2025
img
স্মার্টফোনের আমদানি শুল্ক কমাতে কাজ শুরু করেছে সরকার Dec 03, 2025
img
সেটে দেরিতে আসা অহংকার নয়, এটি স্টারডমের প্রকাশ: শত্রুঘ্ন সিনহা Dec 03, 2025
img
চট্টগ্রামে গ্রেপ্তার আইনজীবী প্রদীপ চৌধুরীর মুক্তি দাবি Dec 03, 2025
img
সর্বোচ্চ নিরাপত্তার মধ্যে দেশে ফিরবেন তারেক রহমান Dec 03, 2025
img
জনপ্রিয় তারকাদের তালিকায় শীর্ষে নতুন দুই মুখ আহান পান্ডে ও অনীত পাড্ডা Dec 03, 2025
img
২৮ ডিসেম্বর খুলছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় Dec 03, 2025
img
জামায়াতের ভূমিকা নিয়ে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া মির্জা আব্বাসের Dec 03, 2025
img
বিচ্ছেদের পথে অঙ্কিতা-প্রান্তিক Dec 03, 2025
img
ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের যুক্ত করতে পে-প্যাল সাথে যোগাযোগ চলছে: গভর্নর Dec 03, 2025
img
সশরীরেই ট্রাইব্যুনালে আসতে হবে সেনা কর্মকর্তাদের Dec 03, 2025
img
রংপুরে চলছে ৮ দলের বিভাগীয় সমাবেশ Dec 03, 2025
img
ঢাকা কলেজের সামনে সড়ক অবরোধ, নিউমার্কেটসহ আশপাশে তীব্র যানজট Dec 03, 2025
img
নির্বাচনে সশস্ত্র বাহিনীকে ঐতিহাসিক ভূমিকা পালন করতে হবে : প্রধান উপদেষ্টা Dec 03, 2025
img
টানা ২০টি ওয়ানডেতে টস হারের বিশ্বরেকর্ড গড়লো ভারত Dec 03, 2025
img
প্রবাসীরা দেশে এসে ৬০ দিনের বেশি থাকলে করতে হবে মোবাইল রেজিস্ট্রেশন Dec 03, 2025
img
রাশিয়ার গ্যাস আমদানি বন্ধের ঘোষণা ইউরোপের Dec 03, 2025