‘ট্রাম্প...তোমাকে ভয় পাই না’, মুক্তির পরে হুঙ্কার ফিলিস্তিনি ছাত্রনেতা মহসেনের

যুক্তরাষ্ট্রের কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রিনকার্ডধারী ফিলিস্তিনি শিক্ষার্থী মহসেন মাহদাবি বুধবার জামিনে মুক্তি পেয়েছেন। অভিবাসন হেফাজতে (ইমিগ্রেশন কাস্টডি) দুই সপ্তাহ আটক থাকার পর ভারমন্ট রাজ্যের বার্লিংটনে এক আদালতের শুনানিতে যুক্তরাষ্ট্রের জেলা বিচারক জেফ্রি ক্রফোর্ড এই আদেশ দেন।

বিচারক বলেন, ফিলিস্তিনপন্থি বিক্ষোভে অংশ নেওয়ার কারণে তাকে যুক্তরাষ্ট্র থেকে বিতাড়িত করার ট্রাম্প প্রশাসনের প্রচেষ্টা আইনি লড়াইয়ের বিষয়। তাই মহসেনকে জামিনে মুক্তি দেওয়া উচিত।

মহসেনের জন্ম ও বেড়ে ওঠা পশ্চিম তীরের একটি শরণার্থী শিবিরে। এপ্রিল মাসের শুরুতে ফিলিস্তিনের পক্ষে আন্দোলন করায় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়, যদিও তার বিরুদ্ধে কোনো অপরাধের অভিযোগ ছিল না। এরপর গত ১৪ এপ্রিল ট্রাম্প প্রশাসন তাকে যুক্তরাষ্ট্র থেকে ফেরত পাঠানোর নির্দেশ দেয়। পাশাপাশি আদালত নির্দেশ দেয়, তাকে যুক্তরাষ্ট্র বা ভারমন্টের বাইরে পাঠানো যাবে না।

আদালত কক্ষ থেকে বেরিয়ে মহসেন বলেন, “আমি প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ও তার মন্ত্রিসভাকে স্পষ্ট করে বলছি—আমি আপনাদের ভয় পাই না।”

তার এই বক্তব্যে উপস্থিত জনতা ফিলিস্তিনি পতাকা উড়িয়ে ‘ভয় নেই’ স্লোগানে গর্জে ওঠে। মহসেন তার মুক্তির রায়কে যুক্তরাষ্ট্রের ন্যায়বিচার ব্যবস্থার প্রতি আস্থা এবং নতুন আশার প্রতীক বলে উল্লেখ করেন।

ট্রাম্প প্রশাসনের দাবি- গাজা যুদ্ধ নিয়ে ইসরায়েলের ভূমিকার সমালোচনা করা এবং ফিলিস্তিনের পক্ষে অবস্থান নেওয়া শিক্ষার্থীরা যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রনীতির জন্য ‘হুমকি’। এরই অংশ হিসেবে বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থীকে অভিবাসন হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।

সমালোচকরা বলছেন, এটি যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানের প্রথম সংশোধনীর আওতায় থাকা মতপ্রকাশের স্বাধীনতার ওপর সরাসরি আঘাত।

মহসেনের মুক্তি ট্রাম্প প্রশাসনের বিতাড়নের কৌশলে বড় ধাক্কা দিলেও, একই ধরনের ঘটনায় আটক রয়েছেন আরও শিক্ষার্থী। কলম্বিয়া ইউনিভার্সিটির মাহমুদ খলিল ও টাফটস ইউনিভার্সিটির রুমেইসা ওজতুর্ক এখনো কাস্টডিতে আছেন।

মহসেনের মুক্তি শুধু একজন শিক্ষার্থীর জয় নয়- এটি যুক্তরাষ্ট্রে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ও মানবাধিকারের পক্ষে দাঁড়ানো প্রত্যেকের জন্য এক অনুপ্রেরণা।

আরআর/টিএ

Share this news on:

সর্বশেষ

img
সংরক্ষিত নারী আসনেরও দরকার নেই: পাপিয়া Jul 07, 2025
img
‘এক কথায় দুর্দান্ত’, ‘ওয়ান নাইট স্ট্যান্ড’ প্রসঙ্গে অস্কারজয়ী অভিনেত্রীর স্বীকারোক্তি Jul 07, 2025
img
রাতে ঢাকায়, সকালে ভুটান- ঋতু ও মনিকার ক্লান্তিহীন যাত্রা Jul 07, 2025
img
অন্তর্বর্তী সরকার ড. ইউনূস সার্কেলের একটা পুনর্বাসন কেন্দ্র : রাশেদ খাঁন Jul 07, 2025
img
এজবাস্টন টেস্টে বাংলাদেশি আম্পায়ারের প্রশংসা করলেন হার্শা ভোগলে Jul 07, 2025
img
সিনেমার স্বার্থে ৮ কেন, ১২ ঘণ্টা কাজ করা যায়- দীপিকাকে খোঁচা রাশমিকার! Jul 07, 2025
img
সংশোধনী প্রস্তাব আনছে ঐকমত্য কমিশন: ড. আলী রীয়াজ Jul 07, 2025
গর্বের ইতিহাস পেছনে, এবার মিশন অস্ট্রেলিয়া: তাবিথ আউয়াল Jul 07, 2025
বাংলাদেশি মেয়েরা জানে কঠিন পরিস্থিতিতে ফাইট করতে: ঋতুপর্ণা চাকমা Jul 07, 2025
তুপর্ণাদের সংবর্ধনায় যা বললেন কোচ পিটার বাটলার! Jul 07, 2025
রাজশাহীতে মাওলানা ভাসানীকে ম্বরণ করে যা বললেন নাহিদ ইসলাম Jul 07, 2025
প্রশাসন ও গোয়েন্দা সংস্থার কে কড়া হুঁশিয়ারি Jul 07, 2025
বসুন্ধরা গ্রুপের মিডিয়া নিয়ে যা বললেন হাসনাত I Jul 07, 2025
জুলাই অভ্যুত্থানে ‘নাহিদ-মাহফুজের’ জটিল ডাইনামিকস তুলে ধরলেন আবু বাকের Jul 07, 2025
নির্বাচন প্রশ্নে জামায়াত ও ইসলামী আন্দোলনের ঐক্যমত Jul 07, 2025
img
হাসপাতালে ফরিদা পারভীন, আর্থিক সাহায্যের প্রয়োজন নেই জানালেন ছেলে Jul 07, 2025
img
বরিশালে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে প্রাণ গেল ২ জনের Jul 07, 2025
img
অবশেষে পুরোনো ছন্দে ফিরছে শুভ-সোহিনীর ‘লহু’! Jul 07, 2025
img
৪ দশকের শাসনকাল আরও বাড়ানোর সুযোগ উগান্ডার প্রেসিডেন্ট মুসেভেনির Jul 07, 2025
img
গণহত্যা মামলায় শেখ হাসিনাকে অব্যাহতির আবেদন স্টেট ডিফেন্সের Jul 07, 2025