আন্তর্জাতিক সীমান্ত পেরিয়ে অনুপ্রবেশের অভিযোগে পাকিস্তানি এক নাগরিককে গুলি চালিয়ে হত্যা করেছে ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ।
আজ শনিবার (২৪ মে) বিএসএফের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সদস্যরা ওই পাকিস্তানিকে থামানোর চেষ্টা করে ব্যর্থ হওয়ার পর গুলি চালিয়েছেন।
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বলেছে, সীমান্তে দায়িত্বরত সৈন্যরা বারবার সতর্ক করার পরও ওই ব্যক্তি থামেননি। তিনি সীমান্ত পেরিয়ে ভারতে ঢুকে পড়েছিলেন বলে অভিযোগ করেছে বিসএসএফ।
চার দিনের এক সংঘাত শেষে চিরবৈরী দুই প্রতিবেশী ভারত ও পাকিস্তান যুদ্ধবিরতিতে পৌঁছানোর মাত্র দুই সপ্তাহ পর সীমান্তে এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। চলতি মাসের শুরুর দিকের ওই সংঘাতে পাল্টাপাল্টি ক্ষেপণাস্ত্র, ড্রোন ও গোলাবর্ষণে ৭০ জনেরও বেশি মানুষ প্রাণহানি ঘটে।
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বলেছে, শুক্রবার সন্ধ্যার দিকে গুজরাট রাজ্যের বানাসকাঁঠা জেলার আন্তর্জাতিক সীমান্ত পেরিয়ে সন্দেহভাজন এক ব্যক্তিকে সীমান্তের কাঁটাতারের দিকে এগিয়ে যেতে দেখা যায়।
বিএসএফের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সদস্যরা ওই ব্যক্তিকে থামার নির্দেশ দেন। কিন্তু নির্দেশ উপেক্ষা করে তিনি এগিয়ে যেতে থাকেন। এই পরিস্থিতিতে সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সদস্যরা গুলি চালাতে বাধ্য হন। পরে ঘটনাস্থলেই মারা যান ওই ব্যক্তি।
ভারতীয় বাহিনী এই ঘটনায় নিহত ব্যক্তির ছবি প্রকাশ করেছে। এতে দেখা যায়, গুলিবিদ্ধ ওই ব্যক্তি মাটিতে পড়ে আছেন। তার মাথার চুল আংশিক পাকা।
গত ২২ এপ্রিল ভারত-নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে পহেলগামে বন্দুকধারীদের হামলায় ২৬ জনের প্রাণহানি ঘটে; যাদের বেশিরভাগই হিন্দু পর্যটক ছিলেন। এই হামলার ঘটনার পর ১৯৬০ সালে বিশ্বব্যাংকের মধ্যস্থতায় পাকিস্তানের সঙ্গে ভারতের স্বাক্ষরিত সিন্ধু নদ পানি বণ্টন চুক্তি স্থগিত করাসহ একাধিক পদক্ষেপ নেয় নয়াদিল্লি। পরে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য স্থগিত, স্থল সীমান্ত বন্ধ এবং ভিসা স্থগিত-সহ একে অপরের বিরুদ্ধে বিভিন্ন ধরনের পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপ নেয় ভারত ও পাকিস্তান।
কাশ্মীরে হামলার ঘটনায় পাকিস্তানের মদত রয়েছে বলে ভারত দাবি করলেও ইসলামাবাদ তা অস্বীকার করেছে। এই ঘটনার জেরে পরমাণু শক্তিধর দুই প্রতিবেশী দেশ কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে তীব্র সামরিক উত্তেজনায় জড়িয়ে পড়ে। পরবর্তীতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যস্থতায় গত ১০ মে উভয় দেশ এক যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে পৌঁছায়।
এসএম/টিএ