পাকিস্তান থেকে ছাড়া পেয়ে পরিবারের কাছে বিএসএফ জওয়ান

ভারত-পাকিস্তানের উত্তেজনাপূর্ণ সম্পর্কের মাঝে এক মানবিক দৃশ্যের সাক্ষী থাকল দুই দেশের সীমান্ত। পাকিস্তানি রেঞ্জার্সদের হেফাজত থেকে মুক্তি পেয়ে অবশেষে নিজের বাড়িতে ফিরলেন বিএসএফ জওয়ান পূর্ণম কুমার সাউ। তার ফিরে আসার খবরে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছে শুধু তার পরিবারই নয়, বরং গোটা দেশ।

ঘটনার সূত্রপাত গত ২২ এপ্রিল, জম্মু-কাশ্মীরের পেহেলগামে পর্যটকদের ওপর চালানো সন্ত্রাসী হামলার পর। হামলার পরবর্তী উত্তেজনার মাঝে পাঞ্জাবের ফিরোজপুর সীমান্ত এলাকায় কর্তব্যরত অবস্থায় অসাবধানতাবশত আন্তর্জাতিক সীমান্ত অতিক্রম করে ফেলেন পূর্ণম কুমার সাউ। এর পরপরই তাকে আটক করে পাকিস্তানি রেঞ্জার্স বাহিনী।

হুগলী জেলার রিষড়ার বাসিন্দা পূর্ণমের আকস্মিকভাবে সীমান্ত পার হওয়া এবং পরবর্তীতে আটক হওয়ার ঘটনাটি দুই দেশের মধ্যে চলমান উত্তেজনাকে আরও সংবেদনশীল করে তোলে। কিন্তু সব জটিলতার পরেও কূটনৈতিক উদ্যোগ এবং সীমান্ত বাহিনীর যৌথ আলোচনার মাধ্যমে বিষয়টির একটি শান্তিপূর্ণ সমাধান সম্ভব হয়।

দীর্ঘ প্রক্রিয়ার পর গত ১৪ মে পাকিস্তান তার হেফাজতে থাকা পূর্ণমকে অটারি-ওয়াঘা সীমান্তে ভারতীয় কর্তৃপক্ষের হাতে তুলে দেয়। এরপর শুক্রবার (২৩ মে) তিনি ফিরে আসেন নিজের ঘরে। তাকে ফিরে পেয়ে আনন্দে কেঁদে ফেলেন পরিবারের সদস্যরা। স্ত্রী, পিতা-মাতা, ভাইবোন সহ স্বজনদের চোখে তখন শুধুই আনন্দ আর স্বস্তির জল।

এক সাক্ষাৎকারে বার্তা সংস্থা এএনআই-কে পূর্ণম বলেন, বাড়ি ফিরে সত্যিই খুব ভাল লাগছে। আমার পরিবার নিয়ে আমি খুব চিন্তিত ছিলাম। এখন সবাইকে কাছে পেয়ে মনে হচ্ছে যেন এক দুঃস্বপ্নের শেষ হলো।

তিনি আরও জানান, অপারেশন সিঁদুর চলাকালীন আমি পাকিস্তানে হেফাজতে ছিলাম। সেই সময় পরিবারের অবস্থা কতটা উদ্বেগজনক ছিল, তা ভাষায় বোঝানো সম্ভব নয়। এখন সবার সঙ্গে দেখা করে মানসিক শান্তি পাচ্ছি।

এই ঘটনা বিএসএফ ও ভারতীয় সীমান্ত রক্ষীবাহিনীর পক্ষ থেকেও অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে নেওয়া হয়েছে। ভবিষ্যতে যেন এর পুনরাবৃত্তি না হয়, সেজন্য আরও সতর্কতা ও নজরদারি বাড়ানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছে বাহিনী।

পূর্ণম কুমার সাউয়ের নিরাপদ প্রত্যাবর্তন শুধুমাত্র একটি পরিবারের পুনর্মিলন নয়, বরং দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যে মানবিকতারও একটি বার্তা। এটি দেখিয়ে দিল- সব উত্তেজনার মাঝেও আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের পথ খোলা থাকে।

আরআর

Share this news on:

সর্বশেষ

img
ট্রাম্পের কাছ থেকে রাশিয়া ও ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে পরিষ্কার অবস্থান জানতে চান জেলেনস্কি Sep 17, 2025
img

এশিয়া কাপ

সুপার ফোরে যেতে শ্রীলঙ্কার দিকে তাকিয়ে থাকবে বাংলাদেশ Sep 17, 2025
img
রোজার আগে নির্বাচন দিয়ে পুরোনো কাজে ফিরে যাবেন প্রধান উপদেষ্টা Sep 17, 2025
img
প্রধান উপদেষ্টার নেতৃত্বের প্রশংসা করলেন আইএমএফ প্রধান ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভা Sep 17, 2025
img
নাসুম ও রিশাদরা দারুণ বোলিং করেছে, ওপেনিং জুটি দরকার ছিল: লিটন দাস Sep 17, 2025
img
রংপুরে পদ্মরাগ ট্রেনের পাঁচ বগি লাইনচ্যুত, ১১ ঘণ্টা পর উদ্ধার Sep 17, 2025
img
আওয়ামী লীগ ছাড়াও অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচন সম্ভব, প্রমাণ ডাকসু : আসাদুজ্জামান ফুয়াদ Sep 17, 2025
img

এশিয়া কাপ

আফগানিস্তানকে ৮ রানে হারিয়ে সুপার ফোরের আশা বাঁচিয়ে রাখলো টাইগাররা Sep 17, 2025
img
গাইবান্ধায় আওয়ামী লীগ নেত্রী সুইটি গ্রেপ্তার Sep 17, 2025
img
রাজউকের সাবেক চেয়ারম্যান ছিদ্দিকুরের বিরুদ্ধে মামলা দুদকের Sep 16, 2025
img
২৪ ঘণ্টায় পুলিশের বিশেষ অভিযানে গ্রেপ্তার ১৬৬১ Sep 16, 2025
img
কারাবন্দিদের মধ্যে ডোপ টেস্ট কার্যক্রম শুরু Sep 16, 2025
img
ভর্তি বাতিল গোলাম রাব্বানীর, অবৈধ হচ্ছে ডাকসুর জিএস পদও Sep 16, 2025
img
বিএনপি ছাড়া নারীবান্ধব দল বাংলাদেশে আর একটিও নেই : ফারজানা শারমিন Sep 16, 2025
img
বড় সংগ্রহের স্বপ্ন দেখিয়েও হতাশ করলেন লিটনরা Sep 16, 2025
img
সীতাকুণ্ডে শিপইয়ার্ডে আগুন, ৮ শ্রমিক দগ্ধ Sep 16, 2025
img
তামিমের ছক্কার রেকর্ড, এক বছরে সর্বাধিক ছয় বাংলাদেশের Sep 16, 2025
img
নারীদের ক্ষমতায়ন ছাড়া উন্নয়ন অসম্পূর্ণ : উপদেষ্টা Sep 16, 2025
img
দিল্লিতে বৈঠকে নতুন অধ্যায় খুলছে যুক্তরাষ্ট্র-ভারত সম্পর্কের Sep 16, 2025
img
ব্লক মার্কেটে ২১ কোটি টাকা লেনদেন Sep 16, 2025