বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপ ও বৃষ্টির প্রভাবে বাগেরহাটের বিভিন্ন নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। সুন্দরবনের অভ্যন্তরের নদীগুলোতে স্বাভাবিক জোয়ারের থেকে দুই-তিন ফুট পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে প্লাবিত হয়েছে সুন্দরবনের দুবলার চর, করমজলসহ বিস্তৃর্ণ এলাকা। গত বুধবার রাত থেকে বৃহস্পতিবার দিনব্যাপি বৃষ্টিতে এই অবস্থার সৃষ্টি হয়।
এদিকে সুন্দরবনের শেলার চর এলাকা থেকে নদীতে ভেসে যাওয়ার সময় একটি হরিণ শাবক উদ্ধার করেছে বনরক্ষীরা। প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে হরিণটিকে আবারও বনে অবমুক্ত করে দিয়েছে তারা।
সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের করমজল বন্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হাওলাদার আজাদ কবির বলেন, বঙ্গোপসাগরে নিম্নচাপ ও অমাবস্যার কারণে করমজল, দুবলার চর, কটকা, কচিখালী, শেলার চরসহ বেশ কিছু এলাকা প্লাবিত হয়েছে। সুন্দরবনের স্বাভাবিকের তুলনায় ২ থেকে ৩ ফুট পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে করমজল ও অন্য কোনো এলাকার বন্য প্রাণির ক্ষতি হয়নি। এছাড়া বনের অভ্যন্তরে বিভিন্ন জায়গায় বন্যপ্রাণীর আশ্রয়ের জন্য উঁচু টিলা তৈরি করা আছে। পানি বাড়লে ওইসব টিলায় বন্যপ্রাণী আশ্রয় নিতে পারবে।
অন্যদিকে, টানা বৃষ্টি ও জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হয়েছে বাগেরহাট পৌরসভার রাহাতের মোড়, পুরাতন বাজার, কাঁচাবাজার, মোরেলগঞ্জ পৌরসভার প্রদান বাজার, বিভিন্ন সড়ক, মোংলা শহরের বেশিরভাগ এলাকাসহ জেলার নিম্নাঞ্চল।
পানি উন্নয়ন বোর্ড বলছে, জেলার বিভিন্ন নদ-নদীর পানি বিপদ সীমার ওপর থেকে প্রবাহিত হয়েছে। এর মধ্যে দরাটানা নদীর পানি বিপৎসীমার ৯ সেন্টিমিটার ওপরে, বলেশ্বর নদী বিপদসীমা ছুঁয়েছে এবং পশুর নদীতে ১.১৫ মিটার ওপরে রেকর্ড করা হয়েছে। ফলে জোয়ারের সময় স্বাভাবিকের তুলনায় দুই থেকে আড়াই ফুট পানি বৃদ্ধি পেয়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আবু রায়হান মো. আল বিরুনী বলেন, নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পেলেও, জেলার কোথাও বেড়িবাঁধ ভাঙার খবর পাওয়া যায়নি।
মোংলা আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হারুন অর রশিদ বলেন, বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত সুস্পষ্ট লঘুচাপটি এখন নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে। এর প্রভাবে বাগেরহাট জেলাজুড়ে হালকা ও ভারি বৃষ্টিপাত অভ্যাহত রয়েছে।
এদিকে তিন নম্বর সতর্ক সংকেত চালু থাকলেও, মোংলা বন্দরের কার্যক্রম স্বাভাবিক রয়েছে বলে জানিয়েছেন মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের উপ-পরিচালক (বোর্ড ও জনসংযোগ বিভাগ) মো. মাকরুজ্জামান।
তিনি বলেন, তিন নম্বর সতর্ক সংকেত জারি থাকলেও আবহাওয়া এখন পর্যন্ত অনুকূলে রয়েছে। ফলে মোংলা বন্দরে পণ্য খালাস ও পরিবহন কার্যক্রম স্বাভাবিকভাবেই চলমান রয়েছে।
এফপি/এস এন