অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান বলেছেন, জুলাই বিপ্লবের চেতনা বৈষম্যহীন সমাজ ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার চেতনা। আওয়ামী লীগ গুম, খুন, মামলাবাজি, টেন্ডার বাণিজ্য ও নির্বাচন ব্যবস্থাকে ধ্বংসের মাধ্যমে ফ্যাসিবাদ কায়েম করেছিল। আওয়ামী লীগ আজ হারিয়ে গেছে। রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরা আবারও আওয়ামী লীগের পথে হাঁটলে ইতিহাস আপনাদেরও ক্ষমা করবে না।
ঝিনাইদহে ২৪ এর জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের শহিদ ও আহতদের পরিবারের সদস্যদের নিয়ে স্মৃতিচারণ ও ঈদ সামগ্রী বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
বুধবার (৪ জুন) বেলা ১১টায় ঝিনাইদহের জোহান ড্রিম ভ্যালি পার্কের অডিটোরিয়ামে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। দ্য হিরোস অব ঝিনাইদহ স্লোগানে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান বলেন, আওয়ামী লীগের আমলে ২০০৮ সালের পরে ৭০০ মানুষকে গুম করেছিল শেখ হাসিনার ফ্যাসিস্ট সরকার। গত ১৬ বছরে দেশে প্রায় সাড়ে ৪ হাজার মানুষকে বিনা বিচারে হত্যা করা হয়েছে। ৬০ লাখ মানুষকে গায়েবি মামলায় হয়রানি করেছিল আওয়ামী সরকার। আজ তারা দেশ ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে। আওয়ামী লীগের পথ ছিল কানাগলি পথ, আওয়ামী লীগের পথ ছিল অন্ধকার পথ। জুলাই বিপ্লবের পরে আপনারা যারা কথা বলার সুযোগ পেয়েছেন, ভয়হীনভাবে রাজনীতি করার সুযোগ পেয়েছেন, আপনারা আওয়ামী লীগের পথে হাঁটবেন না। আওয়ামী লীগের পথে হাঁটলে ইতিহাস কখনো ক্ষমা করবে না।
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে গণহত্যার বিচার ও সরকারের অবস্থান জানিয়ে তিনি বলেন, এই সরকার ক্ষমতা নেওয়ার পরে কেউ গুমের শিকার হয়নি। পুলিশ বাদী হয়ে একটিও গায়েবি মামলা করেনি। জুলাই বিপ্লবের চেতনা বৈষম্যহীন ন্যায়ভিত্তিক সমাজ বিনির্মাণের বাংলাদেশ গড়ে তোলার চেতনা।
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেয়া সংগঠনগুলোর উদ্দেশ্যে অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান বলেন, জুলাই আগস্টের কঠিন গিরিপথ পার করে ছাত্রজনতা জুলাই গণ-অভ্যুত্থান সফল করেছেন। বুকের তাজা রক্ত দিয়ে নতুন বাংলাদেশ গড়ে তোলার সুযোগ তৈরি করেছেন আপনারা। বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনের নেতৃবৃন্দরা যদি অসহিষ্ণু কথাবার্তা বলেন, উদ্দেশ্যমূলক ও উত্তেজনাকর কথাবার্তা বলেন, একে অপরকে অশ্রদ্ধা করেন, তাহলে জুলাই বিপ্লবের ঐক্য বিনষ্ট হবে। ঐক্য বিনষ্ট হলে জুলাই বিপ্লব ব্যর্থ হবে। সেদিকে সবাইকে খেয়াল রাখতে হবে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক রিফাত রশিদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ঝিনাইদহ শাখার সদস্য সচিব সাইদুর রহমান সঞ্চালনা করেন।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেলা বিএনপির সভাপতি অ্যাডভোকেট এমএ মজিদ। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন গণঅধিকার পরিষদের ঝিনাইদহ জেলা শাখার সভাপতি প্রভাষক সাখাওয়াত হোসেন এবং ইসলামী আন্দোলনের জেলা সভাপতি এইচএম মোমতাজুল করীম। অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন জেলা জামায়াতে ইসলামীর আমির ও ঝিনাইদহ চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি মো. মোয়াজ্জেম হোসেন। স্বাস্থ্যখাত থেকে অংশগ্রহণ করেন ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালের কনসালটেন্ট ডা. মো. মনিরুল ইসলাম।
অনুষ্ঠানে ঝিনাইদহে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দানকারী ও অংশগ্রহণকারী রাজনৈতিক সংগঠন, ছাত্র সংগঠন, সামাজিক ও সেচ্ছাসেবী সংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
পিএ/টিএ