স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, দেশে করোনার সংক্রমণ আবারও ঊর্ধ্বমুখী হলেও, হাসপাতালে আসা সব রোগীর করোনা পরীক্ষা করার প্রয়োজন নেই। ‘শুধুমাত্র উপসর্গযুক্ত ও জটিল রোগে আক্রান্ত রোগীদের ক্ষেত্রেই পরীক্ষা করা হবে’ বলে জানিয়েছেন সংস্থাটির মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. মো. আবু জাফর।
বুধবার (১১ জুন) দুপুরে রাজধানীর মহাখালীর স্বাস্থ্য অধিদপ্তর কার্যালয়ে আয়োজিত এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
অধ্যাপক জাফর বলেন, ‘সকল রোগীর করোনা পরীক্ষা করার কোনো প্রয়োজন নেই। কেবল যাদের জ্বর, কাশি, শ্বাসকষ্ট বা অন্যান্য উপসর্গ রয়েছে এবং যারা জটিল অবস্থায় রয়েছে, তারাই করোনা পরীক্ষা করাবে। চিকিৎসকেরাও সেই অনুযায়ী পরামর্শ দেবেন।’
তিনি জানান, হাসপাতালগুলোতে পরীক্ষা চালুর জন্য প্রয়োজনীয় আরটি-পিসিআর কিটের চাহিদা চাওয়া হয়েছে এবং আগামীকাল বৃহস্পতিবারের মধ্যেই সেগুলো সংশ্লিষ্ট হাসপাতালগুলোতে সরবরাহ করা হবে।
বিশেষ শ্রেণির রোগীদের জন্য টিকা ডোজের পরামর্শ
করোনার নতুন পরিস্থিতিতে গর্ভবতী নারী, ষাটোর্ধ্ব ব্যক্তি এবং যেসব রোগী বিভিন্ন জটিল অসুস্থতায় ভুগছেন—তাদের অতিরিক্ত ডোজ টিকা নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন স্বাস্থ্য মহাপরিচালক। তিনি জানান, এই শ্রেণির মানুষের জন্য পর্যাপ্ত টিকা সরকারের মজুত রয়েছে।
‘আতঙ্ক নয়, সচেতনতা জরুরি’
করোনার সংক্রমণ বাড়লেও জনগণকে আতঙ্কিত না হওয়ার আহ্বান জানিয়ে অধ্যাপক জাফর বলেন, আমরা আগেও করোনা মোকাবিলা করেছি। এবারও পারব। শুধু সচেতন থাকতে হবে। এই বিষয়ে গণমাধ্যমকে দায়িত্বশীল ভূমিকা রাখতে হবে।
তিনি জানান, কয়েকটি হাসপাতালে নতুন করে কোভিড ইউনিট খোলা হচ্ছে এবং প্রতিটি হাসপাতালকে কোভিড রোগীর জন্য প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে।
পরীক্ষা ও চিকিৎসায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের প্রস্তুতি
অধ্যাপক ডা. আবু জাফর বলেন, করোনা শনাক্তে আবারও আরটি-পিসিআর ও র্যাপিড অ্যান্টিজেন পরীক্ষার ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। পাশাপাশি করোনার টিকা, প্রয়োজনীয় ওষুধ, অক্সিজেন, হাই-ফ্লো ন্যাজাল ক্যানুলা, ভেন্টিলেটর, আইসিইউ ও এইচডিইউ সুবিধাসহ কোভিড ডেডিকেটেড হাসপাতালগুলো প্রস্তুত রাখতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
তিনি আরও জানান, সেবা প্রদানকারী স্বাস্থ্যকর্মীদের জন্য নিরাপত্তা সরঞ্জাম যেমন—কেএন-৯৫ মাস্ক, পিপিই ও ফেস শিল্ড নিশ্চিত করার নির্দেশনাও দেওয়া হয়েছে। স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়সহ সরকারের অন্যান্য সংশ্লিষ্ট সংস্থার সঙ্গে সমন্বয় করে এসব প্রস্তুতি চলছে বলেও জানান তিনি।
আন্তর্জাতিক ভ্রমণকারীদের নজরদারিতে জোর
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, আন্তর্জাতিক ভ্রমণকারীদের মাধ্যমে করোনা ভাইরাসের নতুন ভ্যারিয়েন্ট দেশে ছড়িয়ে পড়ার ঝুঁকি তৈরি হয়েছে। এ প্রেক্ষাপটে দেশের বিমানবন্দর, স্থলবন্দর ও নৌবন্দরে আন্তর্জাতিক স্বাস্থ্য বিধিমালার (আইএইচআর) আওতায় পরিচালিত ডেস্কগুলোকে আরও সক্রিয় করা হয়েছে।
একইসঙ্গে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এসএম/টিকে