যারা হান্নান মাসউদের রক্তকে অস্বীকার করছেন তাদের বলছি, জুলাইয়ের ইতিহাস বিকৃত কইরেন না: রিফাত রশিদ

জাতীয় নাগরিক পার্টির যুগ্ম সদস্য সচিব রিফাত রশিদ তার ব্যক্তিগত ফেসবুক অ্যাকাউন্টের এক স্ট্যাটাসে বলেছেন, জুলাইয়ের ১৭ তারিখ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্র‍্যাকডাউন চালাচ্ছিলো স্বৈরাচারী হাসিনার পুলিশ, বিজিবি ও সোয়াটের সম্মিলিত টিম। সেখানে আমাদের টিআরশেল, রাবার, ছররা বুলেট আর সাউন্ড গ্রেনেড মারতে মারতে অল্প কয়েকজনকে হলপাড়ায় বন্দি করে ফেলে। আমি (তখন আমি ডান হাতে রাবার বুলেট খাওয়া) আর আসিফ ভাই তখন জসিমউদদীন হলে আটকে পরেছি, নাহিদ ভাই সহ অন্যরা তখন বিজয় একাত্তর হলে আটকা। সংখ্যায় দু`জন হওয়ায় আমাদেরকে একাত্তর হলে যেতে হতো ইমার্জেন্সি মিটিং এর জন্য।

তখন হলগেটের সামনে থেকে পুলিশ ফোর্স পিছিয়ে সূর্যসেন হলের দিকে গিয়েছে। আমরা বের হয়ে একাত্তর হলের দিকে যখন যাচ্ছিলাম দেখি আব্দুল হান্নান মাসউদ ভাই পুলিশের দিকে তেড়ে যাচ্ছিলেন। তার দিকে তাক করা অনেকগুলো বন্দুক। অথচ সে হনহনিয়ে বন্দুকের দিকে ছুটে গিয়ে আবু সাঈদের মতো হাত প্রসারিত করে পুলিশকে বলতেছিলো, "করেন গুলি, গুলি করেন।" আমি পেছন দিক থেকে দৌড়ে গিয়ে হান্নান ভাইকে ডাকছিলাম যে ব্যাক করার জন্য, কিন্তু আমি পৌঁছানোর আগেই মাসুদ ভাইয়ের দিকে ছররা গুলি ছোড়ে পুলিশ। গিয়ে দেখি পুরো শরীর ছিন্নভিন্ন হয়ে গেছে ছররা বুলেটের আঘাতে।

কয়েকজন সাংবাদিক আর সিনিয়র দুই চারজন মানুষ এসে মাসুদ ভাইকে নিয়ে রিক্সায় তুলতে যায় হাসপাতালে নেয়ার উদ্দেশ্যে। তখন আমি মাসুদ ভাইকে ধরতে গেলে আমাকে আরিফ আদিব ভাই (তখন উনি ক্যাম্পাসে সাংবাদিকতায় নিয়োজিত ছিলেন) ধরে বললেন যে পুলিশের আশেপাশে থাকা অবস্থায় উনি একজন পুলিশ অফিসারকে কমান্ড দিতে শুনতে পেয়েছেন যে (সম্ভবত অফিসার ইমরুলের নাম বলেছিলেন) আসিফ আর রিফাতকে এখান থেকে এরেস্ট করতে হবে। এবং তিনি আমাকে আড়াল করে কোনো একভাবে মুহসিন হলে পৌঁছে দেন।

তারপরের গল্প অন্য একদিন বলা যাবে। এতো লম্বা গল্প বলার কারণ হলো আজ যারা হান্নান মাসুদের রক্তকে অস্বীকার করছেন, তার গুলি খাওয়ার ইতিহাসকে নিয়ে মজা ওড়াচ্ছেন তাদের বলছি, জুলাইয়ের ইতিহাস বিকৃত কইরেন না। জুলাইয়ের নেতৃত্বকে অস্বীকার কইরেন না। কেউ আপনার অপছন্দ হলেই তার সাথে বে-ইনসাফি কইরেন না। ইঞ্জুর্ড থাকা অবস্থাতেই হান্নান মাসুদ জুলাইয়ে নেতৃত্ব দিয়েছে এইটার সাক্ষী আমি। এতো এতো নোংরামি দেখে অবশেষে ঘটনাটা লিখতে বাধ্য হলাম। 

এফপি/টিএ 

Share this news on:

সর্বশেষ

img
মৌসুমীকে নিয়ে গুজব, জুনিয়র মিশাকে জুতাপেটা করতে চান ওমর সানি Jun 13, 2025
img
পটুয়াখালীতে বিএনপি ও গণঅধিকার পরিষদের মধ্যে সংঘর্ষ: রাত দেড়টা পর্যন্ত অবরুদ্ধ নুর Jun 13, 2025
img
রানাঘাটের স্মৃতিতে অমলিন রাখি গুলজার, আজও গর্বিত শহরবাসী Jun 13, 2025
img
প্রায় দুই বছর পর জাতীয় দলে ফেরা ইবাদতকে ‘বাড়তি শক্তি’ বললেন শান্ত Jun 13, 2025
img
রাজা তৃতীয় চার্লসের হাত থেকে ‘হারমোনি অ্যাওয়ার্ড’ গ্রহণ করলেন ড. ইউনূস Jun 13, 2025
img
এভাবে চললে বিএনপিও আওয়ামী লীগের পরিণতি ভোগ করতে বাধ্য হবে: এনসিপি নেতা শিশির Jun 13, 2025
img
“আমি আগে যা ছিলাম, এখনও তাই আছি” ঠোঁট নিয়ে সমালোচনার জবাবে বর্ষা Jun 13, 2025
img
মাত্র ১০ মিনিট দেরিতে ফ্লাইট মিস, মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে এলেন ভূমি চৌহান Jun 13, 2025
img
টিউলিপের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন না ড. ইউনূস Jun 13, 2025
img
পটুয়াখালীতে নুরুল হক নুরকে অবরুদ্ধ করে রাখার অভিযোগ Jun 13, 2025
img
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী যেখানে দেখাই করবেন না, আপনি গেলেন কেন: মাসুদ কামাল Jun 13, 2025
img
আহমেদাবাদে বিমান ভেঙে পড়ার ঘটনায় আমি বিষণ্ণ: শাহবাজ শরিফ Jun 13, 2025
img
ভারতের বিমান দুর্ঘটনা নিয়ে ট্রাম্পের দুঃখ প্রকাশ Jun 13, 2025
img
৫২ বসন্ত পাড় করলেন অমিতাভ ও জয়া Jun 13, 2025
img
স্বামীর কাছে পৌঁছানো হলো না, আহমেদাবাদেই শেষ হল খুশবুর পথ Jun 13, 2025
img
আস্থার প্রতিদান দেওয়ার ব্যাপারে আমি আত্মবিশ্বাসী : মিরাজ Jun 13, 2025
img
নতুন জীবনের স্বপ্ন নিয়ে বিমানে উঠেছিলেন চিকিৎসক দম্পতি, রয়ে গেলো শেষ মুহূর্তে তোলা ছবিটি Jun 13, 2025
img
'আরিফিন শুভকে বিয়ে করা সম্ভব না' বললেন মন্দিরা Jun 12, 2025
img
সন্ত্রাসবিরোধী মামলায় রিমান্ড শেষে কারাগারে আ.লীগের দুই কর্মী Jun 12, 2025
img
যৌতুক না পেয়ে কনের বাড়িতে হামলা, খাল সাঁতরে পালাল বরপক্ষ Jun 12, 2025