পদ্মা সেতুর মাওয়া প্রান্তে ভয়াবহ সড়ক দুর্ঘটনায় যাত্রীবাহী বাসের চালকসহ অন্তত দুজন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরো অন্তত ১০ যাত্রী।
নিহতদের মধ্যে একজনের নাম রকিব সমাদ্দার। তার গ্রামের বাড়ি খুলনা সদর উপজেলায়। তবে নিহত অপরজনের নাম-পরিচয় এখনো জানা যায়নি। পরে আহতদের ঢাকা ও স্থানীয় বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
দুর্ঘটনায় আহতরা হলেন- গোপালগঞ্জের কাশিয়ানি উপজেলার ফকরা এলাকার আইব খানের ছেলে মিল্টন (২৫), খুলনা সদরের রকিব সমাদ্দারের মেয়ে আয়শা সিদ্দিক (১০), একই উপজেলার শেখ শহিদুল ইসলামের ছেলে শেখ খালিদুর জামান, খুলনার ফুলতলা উপজেলার হারুন অর রশিদের ছেলে মো. মামুন, একই উপজেলার ইয়াছিন গাজীর ছেলে আজাদ গাজী, খুলনার মুংলার হাট এলাকার তুতা শেখের ছেলে মো. হাবিব শেখ, খুলনার তেরখাদা এলাকার হাসমত শেখের ছেলে আরিফুল শেখ, খুলনা সদরের জব্বার মৃধার ছেলে হাবিব মৃধা, খুলনার দৌলতপুর উপজেলার ফরিয়াদ ইসলামের স্ত্রী কামরুন্নাহর ও একই উপজেলার জাকারিয়ার ছেলে ফরিয়াদ ইসলাম।
ফায়ার সার্ভিস সূত্রে জানা গেছে, ঢাকাগামী ইমাদ পরিবহনের একটি বাস পেছন থেকে একটি ট্রাকের সঙ্গে সজোরে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। সংঘর্ষে বাসের সামনের অংশ দুমড়ে-মুচড়ে যায়। এতে চালক ঘটনাস্থলেই নিহত হন।
গুরুতর আহত অন্তত ১০ জন যাত্রীকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হলে সেখানে আরো একজনের মৃত্যু হয়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রাতের বেলায় ট্রাকটির গতি ছিল ধীর। বাসটি পেছন থেকে ধাক্কা দিলে ট্রাকের পেছনের অংশ ছিন্নবিচ্ছিন্ন হয়ে যায় এবং বাসের সামনের অংশ চূর্ণ-বিচূর্ণ হয়। ঘটনাটি এতটাই ভয়াবহ ছিল যে, চালকের আসনের ধাতব কাঠামো সম্পূর্ণভাবে ভেঙে যায়। এ সময় দুর্ঘটনাকবলিত ট্রাক থেকে বিপুল পরিমাণ তেল সড়কে ছড়িয়ে পড়ে, ফলে যান চলাচলে বিঘ্ন ঘটে এবং দুর্ঘটনার স্থানে পিচ্ছিল পরিস্থিতি তৈরি হয়।
রাত ১১টার পর থেকে পদ্মা সেতুর ঢাকামুখী লেনে যান চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে যায়।
মুন্সীগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের উপসহকারী পরিচালক সফিকুল ইসলাম জানান, দুর্ঘটনার পরপরই ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট উদ্ধার কাজে অংশ নেয়। বাসের সামনের অংশে আটকে পড়া চালককে উদ্ধার করতে বিশেষ যন্ত্র ব্যবহার করতে হয়েছে। আমরা আহতদের দ্রুত উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠিয়েছি। দুর্ঘটনার পর রাত ১২টার দিকে সড়কে ছড়িয়ে পড়া তেল অপসারণ এবং দুর্ঘটনাকবলিত যান সরানোর কাজ শুরু হয়।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছে যানবাহন নিয়ন্ত্রণে আনে। এরপরে ফায়ার সার্ভিস রাস্তা পরিষ্কার করে দিলে রাত পৌনে ১টার দিকে ফের যান চলাচল শুরু হয়।
এ বিষয়ে পদ্মা সেতুর উত্তর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জাকির হোসেন গণমাধ্যমকে বলেন, এই দুর্ঘটনায় এখন পর্যন্ত দুজন মারা গেছে।
একজন ঘটনাস্থলেই আর একজন হাসপাতালে। আরো যারা আহত রয়েছেন তাদেরকে ঢাকা পাঠানো হয়েছে।
আরএম