বগুড়ায় চাকরি দেওয়ার কথা বলে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) প্রধান সমন্বয়ক সাহীফুল ইসলাম বুলবুলের বিরুদ্ধে সাত লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। উকিল নোটিশ এবং মামলা করায় হুমকি-ধমকিসহ মামলা উঠিয়ে নিতে ভুক্তভোগীকে চাপ প্রয়োগ করছেন এনসিপি ওই অভিযুক্ত নেতা।
গত বৃহস্পতিবার (১২ জুন) জেলার সারিয়াকান্দি উপজেলার ফুলবাড়ী দক্ষিণপাড়া (বালুচরা) গ্রামের জামাল আকন্দের ছেলে আব্দুল মান্নান থানা এবং সেনাবাহিনী ক্যাম্পে লিখিত অভিযোগটি করেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, এনসিপি সমর্থক আব্দুল মান্নান এলাকায় চাতাল (ধান-চাল শুকানোসহ প্রাথমিক প্রক্রিয়াজাত উঠান) ব্যবসার সুবাদে সারিয়াকান্দি উপজেলার চরগোদাগাড়ী মোস্তাফিজার রহমানের ছেলে উপজেলা এনসিপির প্রধান সমন্বয়ক সাহীফুল ইসলাম বুলবুলের সঙ্গে তার সম্পর্ক তৈরি হয়।
কিছুদিন আগে বুলবুল নিজেকে উপজেলা এনসিপির প্রধান সমন্বয়ক দাবি করে আব্দুল মান্নানকে বগুড়া জেলা পরিষদে চাকরি নিয়ে দেওয়ার প্রলোভন দেন। চাকরি পাওয়ার আশায় সরল বিশ্বাসে তিনি গরু ও জমি বিক্রি করে বুলবুলকে নগদ সাত লাখ টাকা দেন। শর্ত ছিল চাকরি নিশ্চিত করতে না পারলে পরবর্তী ৭ দিনের মধ্যেই সম্পূর্ণ টাকা ফেরত দেবেন। কিন্তু চাকরি ও টাকা ফেরত কোনোটিই তাকে দেওয়া হয়নি।
পরবর্তীতে কিন্তু চাকরি নিয়ে দিতে ব্যর্থ হলে এনসিপি নেতা বুলবুলের কাছে টাকা ফেরত চাইলে মান্নানকে সাত লাখ টাকার রূপালী ব্যাংক করপোরেট বগুড়া শাখার একটি চেক দেওয়া হয়। পরে আব্দুল মান্নান চেকটি ব্যাংকে জমা দিলে পর্যাপ্ত পরিমাণ টাকা না থাকায় অপর্যাপ্ত অর্থ মজুদ হিসেবে ‘ডিজঅনার’ হয়।
এ ঘটনায় আইন অনুযায়ী প্রথমে উকিল নোটিশ এবং পরবর্তীতে সংশ্লিষ্ট আদালতে বিশ্বাস ভঙ্গ ও প্রতারণার অভিযোগ এনে দণ্ডবিধির ৪২০/৪০৬ ধারায় একটি মামলা হয়।
অভিযোগ প্রসঙ্গে এনসিপি নেতা সাহীফুল ইসলাম বুলবুল জানান, চাকরি দেওয়ার কথা বলে প্রতারণা পূর্বক টাকা নেওয়ার অভিযোগটি সঠিক নয়।
আব্দুল মান্নানের সঙ্গে তার ব্যাবসায়িক লেনদেন ছিল।
তিনি জানান, চলতি বছরের ৩০ জানুয়ারি আব্দুল মান্নান তাকে উকিল নোটিশ পাঠিয়েছেন। গত ঈদুল আজহার আগে তিনি সেটি হাতে পেয়েছেন। এনসিপির ভাবমূর্তি নষ্ট বা ক্ষুণ্ন করতে একটি মহল ব্যাবসায়িক বিষয়কে রাজনীতির দিকে নিয়ে যাচ্ছে।
সারিয়াকান্দি থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) জামিরুল ইসলাম আব্দুল মান্নানের পাওনা টাকা সম্পর্কে লিখিত অভিযোগ অস্বীকার করে কালের কণ্ঠকে জানান, টাকা পাওনা বা আত্মসাৎ নয়, বরং ভয়-ভীতি প্রদর্শন বিষয়ে আব্দুল মান্নান থানায় একটি অভিযোগ দিয়েছেন।
বিষয়টি তদন্ত করার জন্য থানার উপপরিদর্শক (এসআই) সমর বাবুকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। সত্যতা পেলে আদালতের অনুমতিক্রমে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
পিএ/টিকে