‘আমরা স্পষ্ট করে জানাচ্ছি আমরা কেউই ত্রাস সৃষ্টি করছি না। বরং আমরা মিডিয়া ট্রায়ালের শিকার হচ্ছি। মিরপুর এলাকার গণঅভ্যুত্থান, আন্দোলন এবং সামাজিক উদ্যোগগুলোর পেছনে আমাদের সক্রিয় অংশগ্রহণ ও ভূমিকা বহুজনের জানা।’ বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) রাজধানীর সেগুনবাগিচায় অবস্থিত ঢাকা রিপোর্টাস ইউনিটির সাগর-রুনী হলে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন ঢাকা মহানগরের যুগ্ম আহ্বায়ক রিফাতুল হক শাওন।
এ সময় তিনি বলেন, ‘সম্প্রতি কয়েকটি গণমাধ্যমে মিরপুর কেন্দ্রিক কিছু ঘটনা নিয়ে যে ধরনের সংবাদ পরিবেশন করা হয়েছে, তার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। প্রতিবেদনে ব্যক্তির সম্মানহানি, সামাজিক বিভ্রান্তি এবং জনমনে ভুল বার্তা প্রেরণের অপচেষ্টা করা হয়েছে। যা সাংবাদিকতার ন্যূনতম নীতিমালারও পরিপন্থী। আমরা স্পষ্টভাবে জানাতে চাই, ঘটনাবলী বিকৃত, মনগড়া এবং উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।
বাস্তব ঘটনাপ্রবাহ ছিল সম্পূর্ণ ভিন্ন।’
তিনি আরো বলেন, ‘ধানমন্ডি-৩২ এলাকায় ফ্যাসিস্ট খুনি হাসিনার বাড়ি ভাঙচুরের ঘটনার পর সারা দেশেই বিভিন্ন জায়গায় ফ্যাসিস্টদের কাছে নির্যাতিত জনতা বিভিন্ন আওয়ামী লীগ নেতাদের বাড়িতে ভাঙ্গচুর করে। সে সময়ে বৈষম্যবিরোধী শাহআলী থানার কয়েকজন সদস্য আমাদের অবহিত করে যে, মিরপুর শাহআলী থানার আলোচিত সেচ্ছাসেবকলীগ নেতার বাসায় স্থানীয় ছাত্র জনতা হামলা করে। এরই প্রেক্ষিতে আমরা মিরপুর থানার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা-কর্মীরা ঘটনাস্থলে যাই যেন মিরপুরে কোনোরূপ বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি না হয়।
কিন্তু দুই দিন পর আওয়ামী লীগের দুষ্কৃতিকারীরা তাদের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এই হামলাকে কেন্দ্র করে আমাদের নাম জড়িয়ে মিথ্যা প্রোপাগাণ্ডা ছড়ানোর চেষ্টা করে। যেখানে আমাদের কোনোপ্রকার সম্পৃক্ততা নাই।’
ব্যবসায়ীকে টর্চার সেলে মারধর ও চাঁদাবাজির অভিযোগ প্রসঙ্গে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের এই নেতা বলেন, ‘যে ব্যক্তিকে মারধরের অভিযোগ তোলা হয়েছে সেই ঘটনার সঙ্গে আমাদের কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই। শাহআলীর থানার সদস্য সচিব পারভেজের নানা মো. আমজাদ ও গোলাম মোস্তফা জনৈক আমিরুল নামক এক আওয়ামী ঠিকাদারের কাছ থেকে সাব টেন্ডার নিয়ে রাজবাড়ীর একটি রাস্তার কাজ করে। সেই কাজের প্রায় ২ কোটি টাকা পারভেজের নানা আমিরুলের কাছে পায়।
গত ২ বছর যাবত তিনি আওয়ামী প্রভাব দেখিয়ে টাকা পরিশোধ করছিলেন না। যার কারণে পারভেজের নানা আমজাদ হয়রানীর শিকার হয়ে আসছিলেন। পরবর্তীতে আমরা কথোপকথনের এক পর্যায়ে জানতে পারি ওই ব্যক্তি আমিরুল পল্লবী থানা বৈবিছার আহ্বায়ক জামিল তাজের দূরসম্পর্কের আত্মীয়। বিষয়টা আমাদেরই দুই সহযোদ্ধার পারিবারিক ইস্যু হয়ে যাওয়ায় আমরা ওই বিষয়ে তাদের নিজেদের মধ্যে সমাধান করে নিতে বলি। নিজেরা আলোচনার মাধ্যমে কিছুদিন সময় নেয়। এখানে মারামারির সঙ্গে আমাদের কোনো ধরনের সংশ্লিষ্টতাই ছিলো না।’
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের ডিজিকে ভয় ভীতি দেখিয়ে তদবির সংক্রান্ত অভিযোগের বিষয় শাওন বলেন, ‘প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের সঙ্গে আমাদের সাক্ষাৎ, তদবির সংক্রান্ত ব্যাপারে ভয় প্রদর্শন ও নাহিদের ছোট ভাই পরিচয় দিয়ে ফায়দা নেওয়া সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বিভ্রান্তিকর। আমরা ডিজির সঙ্গে কখনোই দেখা করিনি। তাকে চিনিওনা এবং কোনো প্রকার ব্যক্তিগত বা গোষ্ঠীগত তদবিরেও জড়িত ছিলাম না।’
সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ঢাকা মহানগরের যুগ্ম আহ্বায়ক সাদমান সানজিদ ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন শাহআলী থানার সদস্য সচিব মো. পারভেজ প্রমুখ।
এসএন