ইরানকে থামানো না হলে খুব কম সময়ের মধ্যে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করে ফেলতে পারে, ইরানে এবারের হামলা শুরুর কারণ হিসেবে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু এই মন্তব্য করেন। এটা এক বছরও হতে পারে। কয়েক মাসের মধ্যেও হতে পারে, হুঁশিয়ারি দেন তিনি।
নেতানিয়াহু এর আগে বহুবারই ইরানের পারমাণবিক সক্ষমতা প্রসঙ্গে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন; ২০১২ সালে জাতিসংঘে দেয়া ভাষণে বলেছিলেন মাত্র “কটি মাস” সময় রয়েছে।
এ বছর জুনে তিনি জানান, ইহুদি রাষ্ট্র ‘যুদ্ধ পুনরায় করতে দেবে না’—স্পষ্ট যে ইসরায়েল পারমাণবিক হুমকি মোকাবেলায় দেরি করতে রাজি না।
ইরানের পারমাণবিক ইতিহাস
ষাটের দশকে সাবেক রেজা শাহ পাহলভির আমলে শুরু হয়েছিল পরমাণু কর্মসূচি, ১৯৬৭ সালে মার্কিন সহায়তায় চালু হয় তেহরান গবেষণা কেন্দ্র । ১৯৬৮ সালে ইরান স্বাক্ষর করে নন-প্রলিফারেশন চুক্তিতে। ১৯৭৯ সালের ইসলামিক বিপ্লবের পর ইরান–ইসরায়েল–মার্কিন সম্পর্ক চরম দূরে চলে যায়। ১৯৮৪ সালে চীনের সহায়তায় ইসফাহানে প্রতিষ্ঠা পায় বড় পারমাণবিক গবেষণা কেন্দ্র। ২০০২ সালে বিরোধী দলগুলো ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কেন্দ্র ও ভারী পানি প্রকল্পের খবর সামনে আনে ।
আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা ও চুক্তির ইতিহাস
১৯৯০-এর দশকে মার্কিন কংগ্রেস নিষেধাজ্ঞা দিয়ে ‘ইরান-লিবিয়া নিষেধাজ্ঞা আইন’ পাস করে । ২০১৫ সালে ইউরোপ ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে JCPOA চুক্তিতে ইরান পারমাণবিক কার্যক্রম সীমিত করে, তবে ২০১৮ সালে যুক্তরাষ্ট্র চুক্তি থেকে প্রত্যাহার করে।
চুক্তির পরে আইএইএ নিশ্চিত করেছিল, ইরান প্রতিশ্রুতি পূরণ করেছে, কিন্তু ট্রাম্প প্রশাসনের হস্তক্ষেপের পর অভিযোগ উঠতে থাকে যে ইরান আবারও পারমাণবিক অস্ত্র সংক্রান্ত সক্ষমতা বাড়াচ্ছে।
নেতানিয়াহু বলছেন, ‘আমাদের সময়ই শেষ হয়ে আসছে’ এবং বর্তমান পরিস্থিতিতে ইরানের ৯০% সমৃদ্ধ ইউরেনিয়ামের বিপজ্জনক রূপ ধারণের সম্ভাবনা রয়েছে। তিনি মনে করেন, ইরানকে অবিলম্বে থামিয়ে না দিলে আগামী কয়েক মাসেই তা পারমাণবিক রাজ্যে পরিণত হতে পারে।
তবে আন্তর্জাতিকভাবে এই দাবির সমালোচনা রয়েছে। যেমন, আইএইএ এবং মার্কিন গোয়েন্দা সম্প্রতি জানিয়েছে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির প্রমাণ এখনো সামনে আসেনি–তবে নেতানিয়াহু’র সতর্কবার্তা ভিত্তিহীন নয়। যদিও এ পর্যন্ত ইরানের পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি নিয়ে অকাট্য কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি।
সূত্র- বিবিসি বাংলা।
টিকে/টিএ