ইরানে মাকে মেয়ের কল, জবাব দিচ্ছে রহস্যময় রোবট!

ইরান-ইসরায়েল যুদ্ধের মধ্যে এক অদ্ভুত অভিজ্ঞতা হলো ব্রিটিশ-ইরানিয়ান এলির। তিনি যুক্তরাজ্য থেকে মাকে ফোন করেন তেহরানে। কিন্তু ফোন ধরেন এক নারীকণ্ঠ, যিনি মানুষ নন, এক রোবট!

ওই কণ্ঠ বলে, ‘হ্যালো? কে ফোন করছেন? আমি আলিসিয়া। আপনি কি আমাকে চেনেন?’

৪৪ বছর বয়সী এলি বলেন, ‘আমি বুঝতেই পারছিলাম না কী হচ্ছে। আমি মাকে ফোন করছি, কিন্তু একটা যান্ত্রিক কণ্ঠ উত্তর দিচ্ছিল।’

এলি একা নন। যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রে থাকা আরও ৯ জন ইরানি জানিয়েছেন, তারাও একই রকম অভিজ্ঞতার মুখে পড়েছেন। তাদের দাবি, ইসরায়েল হামলা শুরু করার পর থেকে পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করতে গেলে মাঝে মধ্যেই এমন রোবট কণ্ঠ ফোন ধরছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এটি হতে পারে কম মানের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তি বা আগে রেকর্ড করা বার্তা। তবে কারা এই বার্তা দিচ্ছে, তা এখনো পরিষ্কার নয়।

পাঁচজন বিশেষজ্ঞের মধ্যে চারজন মনে করেন , এটি ইরান সরকারের কাজ। একজন বলেন, এটি ইসরায়েলের মানসিক যুদ্ধের কৌশলও হতে পারে। এদিকে ইরানে ইন্টারনেটও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। ফলে ভেতরে থাকা মানুষের সঙ্গে বাইরের আত্মীয়রা যোগাযোগ করতে পারছেন না।

এলি জানান , তার মা ডায়াবেটিসে আক্রান্ত। ইনসুলিন শেষ হয়ে যাচ্ছে। তিনি মাকে শহর ছাড়তে বলতে চাচ্ছিলেন; কিন্তু যোগাযোগ করতে পারছিলেন না।

শেষে তিনি এক পরিচিত ব্যক্তির সাহায্যে সীমান্তে থাকা এক ব্যক্তির মাধ্যমে কথা বলেন। ওই ব্যক্তি তুর্কি ও ইরানি দুটি সিম ব্যবহার করেন। তিনি এলির মাকে ফোন দেন, তারপর সেটি তুর্কি নম্বরে ফরোয়ার্ড করে এলির সঙ্গে কথা বলান।

এলি বলেন , ‘আমরা যখন বললাম মায়ের ফোনে রোবট উত্তর দিচ্ছে, মা বললেন—ফোন তো বাজেইনি।’

নিউইয়র্কে থাকা এক তরুণী বলেন , ‘মাকে ফোন করে যদি এমন কণ্ঠ শুনতে হয়, সেটা খুবই ভয়ের।’

আরেকজন জানান , তিনি শুনেছেন এক রোবট কণ্ঠ বলছে, ‘চোখ বন্ধ করো, ভাবো তুমি জঙ্গলে হাঁটছো, পাখির ডাক শুনছো, ঢেউয়ের শব্দ শুনছ।’

তারা বলছেন , এসব বার্তা প্রবাসীদের মনে আরও ভয়ের সৃষ্টি করছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন , ইরান সরকার এমন বার্তা আগেও ব্যবহার করেছে। ১৯৮০-এর দশকে যুদ্ধের সময়ও এমন প্রচারণা চালানো হতো। তবে এখনো কেউ নিশ্চিতভাবে বলতে পারছে না, এ রোবট কণ্ঠের পেছনে কে বা কারা আছে। কিন্তু এতটুকু নিশ্চিত—এই অদ্ভুত অভিজ্ঞতা ইরানি প্রবাসীদের আরও বেশি দুশ্চিন্তায় ফেলছে।

কেএন/এসএন

Share this news on:

সর্বশেষ

img
প্রশাসন নিশ্চুপ থাকলে পরিস্থিতি আরও জটিল হবে: গয়েশ্বর Nov 13, 2025
img

অ্যাটর্নি জেনারেল

ধর্ম যার যার উৎসব সবার, এই বিশ্বাস থেকে বিজয়া পুনর্মিলনীতে এসেছি Nov 13, 2025
img
'দর্শকের উন্মাদনাকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য আমি প্রচুর স্বার্থত্যাগ করি' Nov 13, 2025
img
একই দিনে গণভোট ও জাতীয় নির্বাচন জাতির সঙ্গে তামাশা: রেজাউল করীম Nov 13, 2025
img
হামজা উঠে যাওয়ায় সুবিধা হয়েছে : নেপাল কোচ Nov 13, 2025
img
চাঁদপুর-৫ আসনে এনসিপির মনোনয়ন ফরম কিনলেন মাহাবুব আলম Nov 13, 2025
img
শীত নিয়ে নতুন বার্তা দিলো আবহাওয়া দপ্তর Nov 13, 2025
img
আ.লীগ-যুবলীগের মধ্যে ঢুকে জামায়াতের লোকজন প্রাণ বাঁচিয়েছিল : হাফিজ ইব্রাহিম Nov 13, 2025
img
এনসিপি থেকে মনোনয়ন ফরম কিনলেন সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব সাইয়েদ জামিল Nov 13, 2025
img
তুরস্কের সুন্দরীকে বিয়ে করলেন 'থ্রি ইডিয়েটস' সিনেমার মিলিমিটার Nov 13, 2025
img
বিশ্ববাজারে আবারও বাড়লো স্বর্ণের দাম Nov 13, 2025
টেস্টে নতুন মাইলফলক চার টপঅর্ডারের ফিফটি Nov 13, 2025
img
চট্টগ্রামে ছাত্রলীগ নেতাকে ওসির হাতে তুলে দিয়ে বলা হলো, ‘আপনাকে গিফট দিলাম’ Nov 13, 2025
img
গোপন ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টে আলিয়াকেও ফলো করতে দেন না রণবীর Nov 13, 2025
img
“যশ-খ্যাতি চিরস্থায়ী নয়”- দেবের আত্মদর্শন Nov 13, 2025
img
দেশের ৯ জেলায় নতুন ডিসি নিয়োগ Nov 13, 2025
img
মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করার পর হাসনাতের বার্তা Nov 13, 2025
img
নাটকীয় ম্যাচে শেষ মুহূর্তে গোলে জয় হাতছাড়া বাংলাদেশের Nov 13, 2025
img
এ আর রহমানের মেয়ে খাতিজার নেতৃত্বে নারী ব্যান্ড ‘রূহ-ই-নূর’ Nov 13, 2025
img
এবারও ভারতের বাইরে আইপিএল নিলাম Nov 13, 2025