ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীম বলেছেন, “ভারতকে সাথে নিয়ে যারা ক্ষমতায় যেতে চান, শুনে রাখুন স্পষ্ট কথা—বাংলাদেশের বুকে যারা ভারতের দালালি করবেন, তাদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে কেউ যদি ক্ষমতায় যাওয়ার স্বপ্ন দেখেন, তবে দেশের জনগণ ঐক্যবদ্ধভাবে তাদের উৎখাত করে ভারতে পাঠিয়ে দেবে ইনশাআল্লাহ।”
শনিবার (২১ জুন) বিকেলে কুড়িগ্রাম সরকারি কলেজ মাঠে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, কুড়িগ্রাম জেলা শাখা আয়োজিত এক গণসমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।
গণসমাবেশে সভাপতিত্ব করেন জেলা সভাপতি শাহজাহান মিয়া। ‘প্রয়োজনীয় রাষ্ট্র সংস্কার, গণহত্যার বিচার এবং সংখ্যানুপাতে (পিআর) পদ্ধতিতে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন’ দাবিতে এ সমাবেশের আয়োজন করা হয়।
সমাবেশে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতৃবৃন্দের পাশাপাশি বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ও এনসিপির জেলা নেতারাও বক্তব্য রাখেন।
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ইসলামী ও সমমনা দলগুলোর ঐক্যের ইঙ্গিত দিয়ে ফয়জুল করীম বলেন, “সব নীতি-আদর্শ দেখা শেষ—এবার ইসলামের বাংলাদেশ। জীবন দেবো, রক্ত দেবো, তবু গোলামি করবো না ইনশাআল্লাহ। আন্দোলন শেষ হয়নি। এবার মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য আন্দোলন হবে।”
তিনি আরও বলেন, “যেভাবে ফ্যাসিস্ট সরকারকে দেশ ছাড়তে বাধ্য করেছি, তেমনি ঐক্যবদ্ধভাবে রাস্তায় নামলে চাঁদাবাজদেরও উৎখাত করতে পারব ইনশাআল্লাহ।”
শায়েখে চরমোনাই খ্যাত এই ইসলামী চিন্তাবিদ আরও বলেন, “ইসলামী দলের হাতে দেশ পরিচালনার দায়িত্ব থাকলে পুঁজিবাদী অর্থনীতির পরিবর্তে ইসলামী অর্থনীতি প্রতিষ্ঠা করা হবে। পুঁজিবাদ ধনীকে আরও ধনী আর গরিবকে আরও গরিব করে তোলে, কিন্তু ইসলামী অর্থনীতি সবার জন্য, বিশেষ করে গরিবদের জন্য।”
অতীতের সরকারগুলোর সমালোচনা করে তিনি বলেন, “চোর দিয়ে চুরি বন্ধ হয় না, খুনি দিয়ে খুন বন্ধ হয় না। মাদার গাছ লাগিয়ে আমের আশা করা যায় না। বাংলাদেশকে সত্যিকারের উন্নয়ন ও ন্যায়বিচারের পথে নিতে চাই আমরা—যেখানে থাকবে না কোনো বৈষম্য। সকল ধর্ম, বর্ণ ও পেশার মানুষের অধিকার নিশ্চিত করা হবে।”
সমাবেশে কুড়িগ্রামের চারটি সংসদীয় আসনে ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেন দলের আমির।
ঘোষিত প্রার্থীরা হলেন:
* কুড়িগ্রাম-১ (নাগেশ্বরী ও ভূরুঙ্গামারী): আলহাজ্ব হারিছুল বারী রনি
* কুড়িগ্রাম-২ (সদর, ফুলবাড়ী ও রাজারহাট): কুড়িগ্রাম আলিয়া কামিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওলানা মো. নূর বখত
* কুড়িগ্রাম-৩ (উলিপুর): ডা. মো. আক্কাস আলী সরকার
* কুড়িগ্রাম-৪ (চিলমারী, রৌমারী ও রাজিবপুর): সহকারী অধ্যাপক হাফিজুর রহমান
সমাবেশের শেষ দিকে তিনি সকলকে ঐক্যবদ্ধভাবে হাতপাখা প্রতীকের পক্ষে কাজ করার আহ্বান জানান।