কেনমাদ্ধমকেকে চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের বিভিন্ন স্তরের ৫ নেতা লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টিতে (এলডিপি) যোগ দিয়েছেন।
শনিবার চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা এলডিপির সভাপতি মো. এয়াকুব আলীর ব্যবসায়িক কার্যালয়ে প্রাথমিক সদস্য ফরম পূরণ করেন এবং আনুষ্ঠানিকভাবে আওয়ামী লীগ ছেড়ে এলডিপিতে যোগ দেন।
এ নিয়ে সাতকানিয়া আওয়ামী লীগে চলছে তোলপাড়। দলত্যাগী একজন বলেছেন, ‘মনের দুঃখে আওয়ামী লীগ ছেড়েছি।’
এলডিপিতে যোগ দেওয়া আওয়ামী লীগের নেতারা হচ্ছেন- বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ধর্মবিষয়ক উপকমিটির সদস্য শামসুল ইসলাম। তিনি সবার আগে এলডিপি যোগদান করেছেন। এছাড়াও রয়েছেন উত্তর সাতকানিয়া সাংগঠনিক থানা আওয়ামী যুবলীগের সহ-সভাপতি ও ১০ নম্বর কেঁওচিয়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সাবেক চেয়ারম্যান মনির আহমদ, কেওচিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের সাধারণ সম্পাদক ও একই ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আবু তালেব সিকদার, ৮ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ নেতা ও একই ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য সাহেব মিয়া এবং উত্তর সাতকানিয়া আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের মহিলাবিষয়ক সম্পাদক ও একই ইউনিয়নের ৭, ৮ ও ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সংরক্ষিত (মহিলা) ইউপি সদস্য রোকেয়া বেগম।
ওই অনুষ্ঠানে দক্ষিণ জেলা এলডিপির সভাপতি মো. এয়াকুব আলী, সাধারণ সম্পাদক গোলাম কিবরিয়া শিমুল, সাতকানিয়া উপজেলা সভাপতি মাহমুদুল হক চৌধুরী চেয়ারম্যানসহ চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলার নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
সংশ্লিষ্টরা জানান, ৫ জনের মধ্যে চারজনই জনপ্রতিনিধি। তারা দীর্ঘ সময় ধরে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। ইউপি সদস্য আবু তালেব সিকদার ৫ আগস্টের পর আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে সাতকানিয়া থানায় হওয়া মামলার এজাহারভুক্ত আসামি। এ মামলায় গ্রেফতার হয়ে তিনি কারাগারেও যান। পরে জামিনে বের হন।
সাহেব মিয়া দলের যেকোনো কর্মসূচিতে সবার আগে থাকতেন। সামশুল ইসলাম আওয়ামী লীগের কোনো পদে ছিলেন না। তিনি ছিলেন সাতকানিয়া উপজেলার ইটভাটার মালিক। আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়ার সুপারিশে তার ঠাঁই হয় আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় ধর্মবিষয়ক উপ-কমিটির সদস্য হিসেবে।
মনির আহমদ উত্তর সাতকানিয়া যুবলীগের নেতা থাকার সময় দলীয় কোন্দল কাজে লাগিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে ২০১৬ সালের ৪ জুন কেওচিয়া ইউপি চেয়ারম্যান পদে জয়ী হন। পরের নির্বাচনে একই সংগঠনের উত্তর সাতকানিয়ার সভাপতি ওচমান আলী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। এরপর থেকে তার সঙ্গে আওয়ামী লীগের দূরত্ব তৈরি হয়। তবে তাকে আওয়ামী লীগের বিভিন্ন কর্মসূচিতে দেখা গেছে।
এলডিপিতে যোগদানের বিষয়টি নিশ্চিত করে মনির আহমদ গণমাধ্যমকে বলেন, ‘মনের দুঃখে আওয়ামী লীগ থেকে এলডিপিতে যোগদান করেছি। আওয়ামী লীগের সমর্থক ছিলাম। আমার কোন পদ-পদবী ছিল না। আমাকে সব সময় দলটির (আওয়ামী লীগের) বিরুদ্ধে গিয়ে নির্বাচন করতে হয়েছে। আমার গণতান্ত্রিক অধিকার হিসেবে যেকোনো পার্টি করতে পারি। এখন আমার এলডিপি ভালো লেগেছে তাই এ পার্টিতে চলে আসছি।’
দক্ষিণ জেলা এলডিপির সভাপতি মো. এয়াকুব আলী গণমাধ্যমকে বলেন, যেকোনো রাজনৈতিক দলের ‘ক্লিন ইমেজধারী' ব্যক্তি আমার পার্টিতে আসতে কোনো বাধা নেই। তারা স্বেচ্ছায় এলডিপিতে যোগদান করেছেন। তারপরও যারা যোগদান করেছেন তাদের বিরুদ্ধে অপরাধমূলক কোনো কর্মকাণ্ডের অভিযোগ পাওয়া গেলে পরবর্তীতে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
আওয়ামী যুবলীগের একজন নেতা গণমাধ্যমকে, ‘যারা আওয়ামী লীগের নীতি আদর্শ বুকে ধারণ করেন। বঙ্গবন্ধুর আদর্শ লালন করেন তারা এই দুঃসময়ে কখনো দল ছেড়ে অন্য দলে যাওয়ার কথা নয়। যারা অন্যদলে চলে গেছেন তারা হয়তো স্বার্থের জন্য আওয়ামী লীগ করেছিলেন। সুবিধাভোগী আওয়ামী লীগ করেছেন। যেখানে এ দুঃসময়ে আওয়ামী লীগের পাশে দাঁড়ানোর কথা সে জায়গায় তারা দূরে সরে যাচ্ছেন। তারা হয়তো আওয়ামী লীগই করেনি।’
পিএ/টিকে