জুলাই যোদ্ধারা জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান: জামায়াত আমীর

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, আন্দোলনে দু’হাজারের অধিক মানুষ রাজপথে বুকের তাজা রক্ষ ঢেলে দিয়েছেন। হাজার হাজার আহত ও পঙ্গুত্ব বরণ করেছেন। অনেককেই হাত-পা চোখ হারিয়েছেন। আমরা শহীদ ও ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে সাধ্যমত সাহায্য সহযোগিতা করেছি। কোন কোন এতিমের আমরা ভরণ-পোষনের দায়িত্ব নিয়েছি। মূলত,জুলাই যোদ্ধারা জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান।

বুধবার (২৫ জুন) বিকালে রাজধানীর কাফরুলে কাফরুল থানা জামায়াত আয়োজিত এক নির্বাচনী পথ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।

ডা. শফিকুর রহমান বলেন, জুলাই বিপ্লবের মাধ্যমে আমরা আওয়ামী অপশাসন-দুঃশাসন থেকে মুক্তি পেয়েছি। মূলত, ছাত্র-জনতার ইস্পাত কঠিন ঐক্যের মাধ্যমে এ ঐতিহাসিক বিপ্লব সাধিত হয়েছে। কিন্তু তা নির্বিঘ্ন হয়নি বরং আমাদেরকে চড়ামূল্যে কিনতে হয়েছে। এ আন্দোলনে দু’হাজারের অধিক মানুষ রাজপথে বুকের তাজা রক্ষ ঢেলে দিয়েছেন। হাজার হাজার আহত ও পঙ্গুত্ব বরণ করেছেন। অনেককেই হাত-পা চোখ হারিয়েছেন।

আমরা শহীদ ও ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে সাধ্যমত সাহায্য সহযোগিতা করেছি। কোন কোন এতিমের আমরা ভরণ-পোষনের দায়িত্ব নিয়েছি।

মূলত,জুলাই যোদ্ধারা জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান। তাদের আত্মত্যাগের মাধ্যমেই আমরা ফ্যাসীবাদ মুক্ত হয়েছি। তাই দেশ ও জাতির জন্য তাদের অবদানের কথা স্মরণ করেই তাদেরকে জাতীয় বীরের মর্যাদায় অভিষিক্ত করতে হবে। তিনি জুলাই বিপ্লবের সুফল পুরোপুরি ঘরে তুলতে সকল ভেদাভেদ ভুলে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহবান জানান।

তিনি বলেন, আমরা দেশে এমন এক ইনসাফপূর্ণ সমাজ কায়েম করতে চাই, যে সমাজ বিশ্বনবী (সা.)-এর আদর্শ অনুযায়ী পরিচালিত হবে। যেখানে মানুষে মানুষে কোন ভেদাভেদ থাকবে না। রাষ্ট্রই প্রত্যেক নাগরিকের সকল সমস্যার সমাধান করবে। রাষ্ট্রের সকল ক্ষেত্রেই আইনের শাসন ও সামাজিক ন্যায়-বিচার নিশ্চিত হবে।

রাসূল (সা.) এমন এক ইনসাফপূর্ণ সমাজ কায়েম করেছিলেন যে সমাজে সানা থেকে হাজরামাউত পর্যন্ত নারীরা নির্বিঘ্নে- নিরাপদে ও সম্ভ্রম নিয়ে চলাফেরা করতে পারতেন। আমরা তেমনি এক শান্তির সমাজ প্রতিষ্ঠায় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। মূলত, আল্লাহর আইনই নির্ভূল। তাই দুনিয়ায় শান্তি ও আখেরাতে মুক্তির দেশে আল্লাহর আইন ও সৎলোকের শাসন প্রতিষ্ঠার কোন বিকল্প নেই । কারণ, মানুষের তৈরি বিধান দিয়ে মানুষের কল্যাণ কোন ভাবেই সম্ভব নয়। তিনি দেশকে কুরআন-সুন্নাহর আদর্শের কল্যাণ রাষ্ট্রে পরিণত করতে দলমত নির্বিশেষে সকলকে সম্মিলিত প্রয়াস চালানোর আহবান জানান।

আমীরে জামায়াত বলেন,দ্বীন কায়েমের প্রচেষ্টা চালানো ঐচ্ছিক কোন বিষয়টি নয়; বরং প্রত্যেক মোমিনের ওপরই অত্যাবশ্যকীয় বা ফরজ করে দেওয়া হয়েছে। মূলত, আমাদের জন্য ইসলামকেই জীবনবিধান হিসাবে মনোনীত করা হয়েছে। আর কালামে হাকীমকে আমাদের জীবন চলার পাথেয় হিসাবে প্রেরণ করা হয়েছে। বস্তুত, মোত্তাকীদের পথ পদর্শনের জন্যই পবিত্র কুরআন জীবন বিধান হিসাবে প্রেরণ করা হয়েছে।

আর যারা প্রকৃত পক্ষেই মোস্তাকি তারাই শুধু কুরআন থেকে লাভবান বা উপকৃত হতে পারে। তাই দুনিয়ায় শান্তি ও আখেরাতে মুক্তির জন্য আমাদের সকলকে আল্লাহর বিধান ও রাসূল (সা.)-এর আদর্শের ছায়াতলে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। তিনি দ্বীন প্রতিষ্ঠার প্রত্যয়ে সকলকে ময়দানে ইস্পাত কঠিন ঐক্য গড়ে তোলার আহবান জানান।

থানা আমীর অধ্যাপক আনোয়ারুল করিমের সভাপতিত্বে পথসভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমীর ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মুজিবুর রহমান এবং কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের আমীর মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিন,ঢাকা মহানগরী উত্তরের সহকারী সেক্রেটারি ডা.ফখরুদ্দিন মানিক। উপস্থিত ছিলেন মহানগরী জামায়াতের কর্মপরিষদ সদস্য ও মিরপুর পুর্ব থানার আমীর শাহ আলম তুহিন, মহানগরীর কর্মপরিষদ সদস্য মো. শহীদুল্লাহ, আলাউদ্দিন, তুহিন রেজা তুহিন প্রমুখ।

আরএম 

Share this news on:

সর্বশেষ

img
পঞ্চায়েত সিজন ফোর: নির্বাচনের ছাপ ফুলেরার সরলতায় Jun 26, 2025
img
আল নাসরেই থাকছেন রোনালদো! Jun 26, 2025
দেবের বিপরীতে দেখা যাবেনা তাসনিয়া ফারিনকে Jun 26, 2025
img
শুরু হলো ২০২৫ সালের এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা Jun 26, 2025
img
মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে ২০ মাসে ৩৫ হাজার হামলা চালিয়েছে নেতানিয়াহুর দেশ Jun 26, 2025
img
শুরু হচ্ছে এইচএসসি পরীক্ষা, কেন্দ্রে প্রবেশ করছেন পরীক্ষার্থীরা Jun 26, 2025
img
নেতানিয়াহুকে ‘মহান নায়ক’ বললেন ট্রাম্প Jun 26, 2025
img
১০০ বছরের স্বপ্ন, ১০ বছরের পরিকল্পনা, পোলো খেলতে গিয়েই থেমে গেল সঞ্জয়ের জীবন Jun 26, 2025
img
কেনিয়ায় সরকারবিরোধী বিক্ষোভ, নিহত ১৬ Jun 26, 2025
img
ফেব্রুয়ারিতেই রোজা শুরুর সম্ভাবনা, জানাল আমিরাত Jun 26, 2025
img
বিদায় অনুষ্ঠানে অশালীনতা, কলেজ ক্লাসরুমে ধোঁয়া ও নাচানাচি Jun 26, 2025
img
গাছের সঙ্গে প্রাইভেটকারের ধাক্কায় প্রাণ গেল ২ জনের Jun 26, 2025
img
ব্রিজটাউন টেস্টের প্রথম দিন শেষেই পড়ল ১৪ উইকেট Jun 26, 2025
img
এইচএসসি পরীক্ষার দুটি কেন্দ্র আজ পরিদর্শন করবেন শিক্ষা উপদেষ্টা Jun 26, 2025
img
সাইয়ারা’র সুরেই বলিউডে ঝড় তুললেন দুই নবাগত Jun 26, 2025
img
ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপের শেষ ষোলোতে ইন্টার মিলান Jun 26, 2025
img
ইসরায়েলকে রক্ষা করেছে যুক্তরাষ্ট্র, বললেন ট্রাম্প Jun 26, 2025
img
বক্স অফিসে মুখ থুবড়ে পড়ল মণি রত্নমের ‘ঠগ লাইফ’ Jun 26, 2025
img
হজ শেষে ৫১ হাজার ৬১৫ জন হাজির দেশে ফেরা সম্পন্ন Jun 26, 2025
img
জেনে নিন আজকের বাজারের স্বর্ণ ও রুপার দাম Jun 26, 2025