তারেক রহমানের ফেরার জন্য লন্ডন ও বাংলাদেশে প্রস্তুতি চলছে : এ্যানি

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান খুব শিগগিরই দেশে ফিরবেন বলে জানিয়েছেন দলটির যুগ্ম মহাসচিব শহীদউদ্দীন চৌধুরী এ্যানি।তিনি বলেন, তারেক রহমানের ফেরার জন্য লন্ডন এবং বাংলাদেশে প্রস্তুতিও চলছে। তাকে বরণ করে নেওয়ার প্রস্তুতি চলছে।

বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) রাজধানীর সেগুনবাগিচার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে মিট দ্য রিপোর্টার্স অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।

বিএনপি আগামীতে ক্ষমতায় গেলে দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি নেওয়া হবে বলে জানান এ্যানি। তিনি বলেন, দুর্নীতি, দুঃশাসন আমাদের সমাজ ব্যবস্থাকে ধ্বংস করে দিয়েছে। স্বাধীনতার পর থেকে দেশের প্রশাসনের লাল ফিতার দৌরাত্ম্য দেখে আসছি কম-বেশি। সমাজের কিছু ব্যক্তি অথবা রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিরা এই ধরনের কর্মকাণ্ডে জড়িত হয়েছে বিধায় দুর্নীতি বেড়েছে। কিন্তু গত ১৭ বছরে দুর্নীতি ছিল আকাশচুম্বী।

হাজার-হাজার কোটি টাকা পাচার হয়েছে। আজকে বাংলাদেশ খাদের কিনারায় চলে গেছে। এখান থেকে উদ্ধার হতে হলে দুর্নীতি বন্ধ করতে হবে।

সবাই মিলে দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।

বিএনপির এই কেন্দ্রীয় নেতা বলেন, আমরা বিএনপি ঘোষিত ৩১ দফায় উল্লেখ করেছি- দুর্নীতি বন্ধ করার জন্য কঠিন পদক্ষেপ নিতে হবে। দুর্নীতি দূর করতে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নেতৃত্বে আমরা এখন থেকেই কাজ শুরু করেছি। এটা বিএনপির জন্য একটা কঠিন চ্যালেঞ্জ। এই কঠিন চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করার জন্য আমরা প্রস্তুত আছি। শুধু প্রশাসনে নয়, তার বাইরেও যাতে কেউ দুর্নীতি করতে না পারে এবং তা নিয়ন্ত্রণে সর্বোচ্চ কঠিন ভূমিকা নেবে বিএনপি।

তিনি বলেন, আগে দুর্নীতি যা ছিল, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে তা হাজারগুণ বেশি হয়েছিল। তিনি (শেখ হাসিনা) তার বাবার চাইতে কয়েক শতগুণ বেশি ফ্যাসিবাদী এবং কর্তৃত্ববাদী শাসন চালিয়েছেন। এরশাদের চাইতে কয়েকশত ডিগ্রি বেশি।

আগামী নির্বাচনে কারা বিএনপির মনোনয়নের জন্য উপযুক্ত হবেন, এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে শহীদউদ্দীন এ্যানি বলেন, আমাদের দলের চেয়ারপারসন, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ও স্থায়ী কমিটির পরামর্শ নিয়ে দল পরিচালিত হচ্ছে। তাদের কাছে অনুরোধ করেছি- সারা দেশে নিজস্ব জরিপের মধ্য দিয়ে যিনি সবচেয়ে জনপ্রিয়, এলাকায় নির্বাচন করার জন্য উপযোগী হবেন, দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা আছে, ত্যাগী- তাকে দল বাছাই করে নেবে।

২০০১ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত বিএনপি রাষ্ট্রক্ষমতা থাকাকালে অনেক ষড়যন্ত্র হয়েছে বলে দাবি করেন দলটির এই যুগ্ম মহাসচিব। তিনি বলেন, পার্শ্ববর্তী দেশের ষড়যন্ত্র ছিল। পার্শ্ববর্তী দেশ খালেদা জিয়াকে টার্গেট করেছিল। তারা তারেক রহমানের রাজনীতিকে টার্গেট করেছিল। তার নামে নানান অপপ্রচার করেছে, হাওয়া ভবন দিয়ে তার রাজনৈতিক ভাবমূর্তি নষ্ট করতে চেয়েছিল- যাতে তারেক রহমান তার নিজস্ব চিন্তা-চেতনা দেখাতে না পারেন।

বিএনপি ক্ষমতায় গেলে বহির্বিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উন্নয়নে কী ধরনের উদ্যোগ নেবে, জানতে চাইলে এ্যানি বলেন, বিদেশে আমাদের বন্ধু থাকবে, প্রভু থাকবে না। জিয়াউর রহমান সার্ক গঠন করেছিলেন। আমাদের পার্শ্ববর্তী ৭টি দেশ মিলে এটা একটা অ্যাসোসিয়েশন। যেকোনো সমস্যার আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে সুন্দর সমাধান হয়ে যায়। কিন্তু বিগত আওয়ামী লীগ সরকার সার্ককে পুরোপুরি অকার্যকর করে দিয়েছে।

তারা একটা দেশকে প্রাধান্য দিয়েছে। আশা করছি, ভবিষ্যতে সার্ক পুরোপুরি কার্যকরভাবে সক্রিয় হবে। সেজন্য আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের যে পররাষ্ট্রনীতি- সেখানে চায়নার জন্য একটা পররাষ্ট্রনীতি থাকবে, আমেরিকার জন্য একটা, যুক্তরাজ্যের জন্য আরেকটা এবং পার্শ্ববর্তী দেশের জন্য আলাদা পররাষ্ট্রনীতি থাকবে।

মিট দ্য রিপোর্টার্স অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন- ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি আবু সালেহ আঁকন, সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হাসান সোহেল, সহ-সভাপতি গাজী আনোয়ার, যুগ্ম সম্পাদক নাদিয়া শারমিন, কার্যনির্বাহী সদস্য মো. জুনায়েদ হোসাইন (জুনায়েদ শিশির) প্রমুখ।

আরএম 

Share this news on:

সর্বশেষ

img
হজ শেষে দেশে ফিরেছেন ৫৪ হাজার ৩৯৭ হাজি Jun 27, 2025
img
ভারতের সঙ্গে বড় বাণিজ্য চুক্তির ইঙ্গিত ট্রাম্পের Jun 27, 2025
img
ম্যানচেস্টার সিটির দুরন্ত জয়, জুভেন্টাসকে ৫-২ গোলে উড়িয়ে গ্রুপ সেরা হয়ে পরের রাউন্ডে Jun 27, 2025
img
আকাশেই জীবন অবসান কেবিন ম্যানেজারের Jun 27, 2025
img
ইরানের ইউরেনিয়াম সরানোর প্রমাণ নেই বলল যুক্তরাষ্ট্র Jun 27, 2025
img
জুলাই থেকে আন্তর্জাতিক রূপ পাচ্ছে কক্সবাজার বিমানবন্দর Jun 27, 2025
img
১৭ থেকে ২৫ এই জার্নিটা বেশ চ্যালেঞ্জিং ছিল : তাশরীফ খান Jun 27, 2025
img
টেস্টের সুবর্ণজয়ন্তীতে বাংলাদেশ নিয়ে বিসিবি সভাপতির প্রত্যাশা Jun 27, 2025
img
গায়িকা কনার বিচ্ছেদ নিয়ে সালমার ফেসবুক পোস্ট Jun 27, 2025
img
ভেনিসে বেজোসের রাজকীয় বিয়েতে তারকাদের মেলা Jun 27, 2025
img
কেমন থাকবে আজকের আবহাওয়া Jun 27, 2025
img
পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন মাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া সেই পরীক্ষার্থী Jun 27, 2025
img
ডাকসু নির্বাচন: ১৮টি ছাত্রসংগঠনের প্রতিনিধিদের সঙ্গে রিটার্নিং কর্মকর্তাদের বৈঠক Jun 27, 2025
img
রাজশাহীতে এনসিপির এক নেতাকে মেরে হাসপাতালে পাঠালেন আরেক নেতা Jun 27, 2025
img
‘নিজের দল ও আদর্শ নিয়ে কিছু বলার সামর্থ্য না থাকলে অন্তত চুপ থাকুন’ Jun 27, 2025
img
তারেক রহমানের ফেরার জন্য লন্ডন ও বাংলাদেশে প্রস্তুতি চলছে : এ্যানি Jun 27, 2025
img
হঠাৎ চিনি খাওয়া বন্ধে কী হয় শরীরে? জেনে নিন Jun 27, 2025
img
এবার নারীকেন্দ্রিক অ্যাকশন ছবিতে অভিনেত্রী রাশমিকা মান্দান্না! Jun 27, 2025
img
ফিলিস্তিনিদের ত্রাণ সরবরাহের সরাসরি পথ বন্ধ করল ইসরায়েল Jun 27, 2025
img
'শাহরুখের মতো তারকা হতে পারবেন না রণবীর কাপুর', বললেন জয়দীপ আহলাওয়াত Jun 27, 2025