নড়াইলের লোহাগড়া লক্ষীপাশা আদর্শ মহিলা ডিগ্রি কলেজে ২০২৫ সালের এইচএসসি পরীক্ষার বাংলা দ্বিতীয় পত্রের সেট পরিবর্তন করে পরীক্ষা নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
এ ঘটনায় পরীক্ষার কেন্দ্র সচিব ও লোহাগড়া আদর্শ লক্ষীপাশা মহিলা ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ কাজল কুমার সিকদার ও ট্যাগ অফিসার সহকারী কৃষি কর্মকর্তা রফিকুল ইসলামকে কারণ দর্শনের নোটিশ দেওয়া হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন লোহাগড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো. আবু রিয়াদ।
জানা গেছে, রোববার (২৯ জুন) লোহাগড়া লক্ষীপাশা আদর্শ মহিলা ডিগ্রি কলেজে বাংলা ২য় পত্র পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। কেন্দ্রটিতে যথা সময়ে পরীক্ষা শুরু হয়। তবে পরীক্ষা শেষে পরীক্ষার্থীরা বের হয়ে জানতে পারে তাদের পরীক্ষা ২ নম্বর সেটে হয়েছে। তারা খোঁজ নিয়ে জানতে পারে অন্যান্য কলেজে ৪ নম্বর সেটে পরীক্ষা হয়েছে। এ নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা শুরু হলে বিষয়টি প্রশাসনের নজরে আসে।
এ বিষয়ে ইতনা স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ সঞ্চিত সাহা বলেন, এই ভুলের জন্য দায়ী কেন্দ্র সচিব। তিনি আরও বলেন, পরীক্ষা দেওয়ার আধাঘণ্টা আগে প্রশাসন থেকে মেসেজ আসে। আজ কোন সেটে পরীক্ষা হবে। জেলা প্রশাসক উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে জানান। উপজেলা নির্বাহী অফিসার কেন্দ্র সচিব বা তার প্রতিনিধিকে জানান।
তিনি আরও বলেন, পরীক্ষার দিন কেন্দ্রে দুটি সেটই আসবে। ২ নম্বর সেট, আর ৪ নম্বর সেট। আধাঘণ্টা আগে সিদ্ধান্ত হবে কোন সেটে পরীক্ষা হবে। আজ ৪ নম্বর সেটে পরীক্ষা হওয়ার কথা। কিন্তু লক্ষিপাশা কেন্দ্রে ২ নম্বর সেটে পরীক্ষা নেওয়া হয়েছে।
লোহাগড়া সরকারি কলেজের এক শিক্ষক বলেন, তারা যেটি করেছে এটি কোনোভাবে যুক্তিসংগত নয়। ৪ নম্বর সেটে পরীক্ষা নেওয়ার কথা থাকলেও তারা ২ নম্বর সেটে পরীক্ষা নিয়েছে। এটা তাদের দায়িত্বে অবহেলা ছাড়া আর কিছু না।
লোহাগড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো. আবু রিয়াদ বলেন, অন্য সেটে পরীক্ষা নেওয়া হয়েছে। এটা তাদের ভুল হয়েছে। তারা সেটি সমাধানের চেষ্টা করছে। এটি বোর্ড দেখবে। পরীক্ষার্থীদের কোনো সমস্যা হবে না। তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলোক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ইতোমধ্যে তাদের কারণ দর্শনোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে লোহাগড়া লক্ষীপাশা আদর্শ মহিলা ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ কাজল কুমার সরকারের সঙ্গে একাধিকবার ফোন দিলেও তিনি রিসিভ করেননি।
লক্ষীপাশা আদর্শ মহিলা ডিগ্রি কলেজের তদারকি কর্মকর্তা ও ইতনা ইউনিয়ন উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম দেশের একটি গণমাধ্যমকে বলেন, আমাকে কারণ দর্শনোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে বলে জানতে পেরেছি। চিঠি হাতে পাই নাই। মেসেজ দেখার ভুলের কারণে এই ভুল হয়েছে।
মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড যশোরের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক প্রফেসর ড. মো. আব্দুল মতিন দেশের একটি গণমাধ্যমকে বলেন, এই ভুলের দায়ভার কেন্দ্র সচিবের। তার বিরুদ্ধে ইতোমধ্যে জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার ব্যবস্থা নিচ্ছেন। সেইসঙ্গে আমরা বোর্ড থেকে যা যা ব্যবস্থা নেওয়ার সেগুলো নেওয়া হচ্ছে।
আরআর/টিকে/টিএ