রাজশাহী মহানগর যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক তৌরিদ আল মাসুদ রনিকে ধরতে একটি ভবন ঘেরাও করা হয়। বুধবার (২ জুলাই) দুপুর ১টার দিক থেকে মহানগর ও জেলা যুবদল, ছাত্রদল ও স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতাকর্মীরা নগরীর পারিজাত এলাকায় সাবেক এক যুবলীগ নেতার বাড়ি ঘেরাও করেন।
স্থানীয় সূত্র জানায়, রনি ওই বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন বলে পুলিশের উপস্থিতে যুবদল, ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা তল্লাশি শুরু করেন। ঘণ্টা দুইয়েক তল্লাশির পরেও হত্যাসহ অন্তত সাতটি মামলার আসামি রনিকে তারা পাননি।
পরে যুবদলের এক নেতাকে ফোন করে রনি বলেন, ‘এত কষ্ট করছেন, আমি আপনাদের থেকে অনেক দূরে। আমাকে খুঁজে লাভ হবে না, পাবেন না ভাই।’
জেলা যুবদলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক ফয়সাল সরকার ডিকোকে ফোন করেন যুবলীগ নেতা রনি আরো বলেন, ‘ডিকো ভাই, আপনারা এত কষ্ট করে অভিযান করছেন। আমি আপনাদের থেকে অনেক দূরে। আমাকে খুঁজে লাভ হবে না, পাবেন না। ঠিক সময়মতো আমি নিজেই আত্মসমর্পণ করব, ধরা দেব।’
জবাবে ডিকো বলেন, ‘আইনের প্রতি শ্রদ্ধা দেখিয়ে আপনি আত্মসমর্পণ করেন। নিজের দোষ স্বীকার করেন। আমরা আপনার জন্য দোয়া করি।’
সময় হলেই আত্মসমর্পণ করবেন বলে জানান রনি। এ সময় ডিকো জানতে চান, ‘সিটি করপোরেশনের অস্ত্র আপনার ছিল নাকি মেয়র (এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন) সাহেবের ছিল? আপনার ভিডিও ফুটেজ আছে।’ জবাবে রনি বলেন, ‘ভাই, কোথায় আমার হাতে অস্ত্র দেখেছেন? ভিডিও দেখান। ছবিতে দেখান। আমার হাতে অস্ত্র নাই।’
ডিকো বলেন, ‘রাজশাহীতে অস্ত্রের রাজনীতি শুরুই করেছেন আপনি, ভাইয়া।’ রনি বলেন, ‘বাজে কথা।’ ডিকো বলেন, ‘ঠিক আছে। ওপরে আল্লাহ আছে। সত্য-মিথ্যা আল্লাহই জানেন।’ রনি বলেন, ‘আমরা মুসলমান মরতে হবে। যদি অন্যায় করি, আল্লাহ বিচার করবেন। ভালো থাকেন ভাই, দেখা হবে ইনশাআল্লাহ।’
রনির এই ফোনের পর অভিযান শেষ করে পুলিশ ও যুবদল নেতারা ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন।
জানতে চাইলে যুবদল নেতা ডিকো বলেন, ‘রনি আমাকে ফোন করেছিল। যুবদল, ছাত্রদল, স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতারা এখানে আছেন। বুঝতে পারলাম, এই বাড়িতে অভিযান হওয়ায় তিনি খুব কষ্ট পাচ্ছেন।’
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, আওয়ামী সরকারের পতনের দিনই আত্মগোপনে চলে যান যুবলীগ নেতা রনি। ইতিমধ্যে তিনি দেশ ত্যাগও করেছেন। তিনি মালয়েশিয়ায় অবস্থান করছেন বলে একটি সূত্র জানায়।
ঘটনার পর সন্ধ্যায় যুবলীগ নেতা রনিকে তার ব্যবহৃত হোয়াটসঅ্যাপ নম্বরেই পাওয়া গেছে। তিনি জানান, সরকার পতনের তিন-চার মাস পর তিনি দেশের বাইরে চলে গেছেন।
রনি বলেন, ‘এরা কোনো দিন সামনে আসার সাহস পায়নি। এখন ফাঁকা মাঠে না জেনেশুনে অযথা একটি বাড়ি এভাবে ঘেরাও করেছে। তাদের ভিন্ন উদ্দেশ্য থাকতে পারে। তাদের এসব কর্মকাণ্ডের জন্য দেশের মানুষ এখন আওয়ামী লীগ ও বিএনপি-জামায়াতের মধ্যে পার্থক্য বুঝতে পারছে।’
রনি বলেন, ‘এখন দেশে সুবিচার নেই। আমাদের নেত্রী শেখ হাসিনা ও নেতা এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন যেদিন বলবেন সেদিনই দেশে ফিরব। যদি অন্যায় করে থাকি, সুশাসন ফিরলে শাস্তি হবে। অল্প সময়ের মধ্যেই সবার সঙ্গে দেখা হবে।’
আরআর/টিএ