পুশইন করতে হলে শেখ হাসিনা ও তার দোসরদের পাঠান : নাহিদ

গণঅভ্যুত্থানের পর নতুন দেশ গড়তে জুলাই পদযাত্রার অংশ হিসেবে পঞ্চগড়ে পদযাত্রা করেছে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতাকর্মীরা। এর অংশ হিসেবে ৩য় দিনের পদযাত্রা শেষে এক সভায় জাতীয় নাগরিক পার্টির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, গত ৫০ বছরে কোনো সরকার সীমান্ত হত্যা বন্ধ করতে পারেনি।

এ সময় নাহিদ বলেন, এখনও পঞ্চগড়সহ বিভিন্ন সীমান্তে গুলি করে মানুষ হত্যা করা হচ্ছে। এখন প্রেক্ষাপট পরিবর্তনের পর সীমান্তে পুশইন করা হচ্ছে। আমরা স্পষ্ট করে বলতে চাই, এটা হাসিনার বাংলাদেশ নয়, ছাত্র-জনতার বাংলাদেশ। যদি পাঠাতেই হয় হাসিনা ও তার দোসরদের পাঠান। আমরা তাদের বিচারের আওতায় নিয়ে আসবো। কোনোভাবেই এ পুশইন আর মেনে নেয়া হবে না।

আমরা দলমত নির্বিশেষে ভারতীয় আগ্রাসনের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ আছি। আমাদের সঙ্গে থাকুন আমরা যে স্বাধীনতা এনেছি আপনাদের সঙ্গে নিয়ে তা রক্ষা করবো। তেঁতুলিয়া উপজেলার তেঁতুল তলায় এনসিপির আয়োজিত পদযাত্রা শেষে এক পথ সভায় এসব কথা বলেন তিনি।

এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম আরও বলেন, সারাদেশে এনসিপির উদ্যোগে পহেলা জুলাই থেকে শুরু হয়েছে জুলাই পদযাত্রা। আর অভ্যুত্থানের পর থেকে এবং এই পদযাত্রায় আপনাদের এলাকার কৃতি সন্তান এনসিপির উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম পঞ্চগড়ের নানা সমস্যা তুলে ধরেছেন। পঞ্চগড়ের স্বাস্থ্যসেবা নানা দুর্নীতির অনিয়ম নিয়ে কথা বলেছেন। আমরা চেষ্টা করছি আপনাদের সমস্যা নিয়ে কাজ করতে।

এর আগে সভায় নাগরিক পার্টির মুখ্য সমন্বয়কারী নাসিরুদ্দিন পাটোয়ারী বলেন, পঞ্চগড়বাসীর সমস্যা ইনশাল্লাহ এনসিপির হাত ধরেই সমাধান হবে। পঞ্চগড়বাসীর জন্য বিশ্ববিদ্যালয়, স্বাস্থ্যসেবা সবই এনসিপির হাত ধরেই শুরু হবে আর যা অনিয়ম হচ্ছে তা সংস্কার হবে এবং নতুন অবস্থার তৈরি হবে। আপনাদের এলাকার কৃতি সন্তান সারজিস আলমের হাতকে শক্তিশালী করুন। আগামী তিন আগস্ট ছাত্র-জনতার সামনে আমরা জুলাই সনদ ঘোষণা করবো ইনশাআল্লাহ। আর এ কর্মসূচিতে ঢাকা কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে সবাইকে অংশগ্রহণ করার আহ্বান জানাই।

এনসিপির উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম বলেন, পঞ্চগড়ে কোনো মানুষ আহত হলে তাকে রংপুর বা অন্য জেলায় পাঠানো হয়। অনেককে নিয়ে যেতে পথেই মারা যায়।

পঞ্চগড়ের মানুষ স্বাস্থ্যসেবাই অবহেলিত। কিছুদিন আগে এখানে পাথর উত্তোলন শুরু হলেও চাঁদাবাজি শুরু হয়েছে। রাতের আঁধারে শতশত ড্রেজার দিয়ে অবৈধভাবে পাথর তোলা হচ্ছে। স্থানীয়দের হুমকির মুখে ফেলা হচ্ছে। এসব কারা করছে আপনারা জানেন। পঞ্চগড়ের চিনিকল চালু হওয়ার কথা ছিল এ বছরেই। কিন্তু কাদের জন্য চালু হয়নি আপনারা জানেন। আগামী ২০২৬ সালেই আমরা পঞ্চগড় চিনিকল চালু চাই এবং সব অনিয়ম নির্মূল করে সুন্দর একটি পঞ্চগড় জেলা হিসেবে উপহার দিতে চাই।

সারজিস আলম আরও বলেন, অনেক পুলিশ আছে যারা আগে টাকা পরে কথা বলে। অন্যায় দেখলে প্রতিবাদ করতে হবে। কেউ ভাবেনি হাসিনার মতো ফেরাউনের ৩৬ দিনে পতন হবে। পঞ্চগড়ে হাসিনার চেয়ে বড় ফেরাউন নেই। আমাদের সাহস নিয়ে প্রতিবাদ করতে হবে। পঞ্চগড়ে দুর্নীতি, চুরি, বাটপারি বন্ধ করতে হবে। আমরা ঝামেলা করতে চাই না।

দলটির দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, সবকিছুর পরিবর্তন হলেও পঞ্চগড়ে চাঁদাবাজি দখলদারি বন্ধ হয়নি। কারা করছে আপনারা জানেন। আওয়ামী লীগের সবাই চাঁদাবাজি করে তো ভারতে পালিয়ে গেছে। আপনারা কোথায় পালাবেন। আমরা বলে দিচ্ছি আপনারা পালানোর পথ পাবেন না।

পঞ্চগড়বাসীকে সাক্ষী রেখে বলছি, যেই প্রশাসন দিয়ে, পুলিশ দিয়ে মধ্যরাতের নির্বাচন হয়েছিল। আওয়ামী ভারসেস ডামি নির্বাচন হয়েছে। সেই প্রশাসন ও পুলিশকে সংস্কার না করা পর্যন্ত আমরা কোনো নির্বাচনে যাচ্ছি না।

এর আগে এনসিপির কেন্দ্রীয় নেত্রী ডা. তাসনিম জারা বলেন, রাষ্ট্রের পুলিশ বাহিনী ও নিরাপত্তা বাহিনী সবার হয়ে কাজ করবে। কোনো দলের বা পক্ষের হয়ে কাজ করবে না। আমরা এমন ব্যবস্থায় আর ফেরত যাব না যেখানে রাষ্ট্র ব্যবস্থা নিজেই তার নাগরিককে খুন-গুম করে।


পিএ/এসএন

Share this news on:

সর্বশেষ

img
যারা দেশই চায়নি তাদের আবার সততা কী? : দুদু Sep 15, 2025
img
বিজয়া দশমীতে মুক্তি পাচ্ছে বরুণের নতুন রোমান্টিক-কমেডি Sep 15, 2025
img
দোকানিকে তিন হাজার টাকা জরিমানা করেছেন সূর্যসেন হলের ভিপি Sep 15, 2025
img
ম্যাচ রেফারিকে অপসারণে আইসিসিকে চিঠি দিল পাকিস্তান! Sep 15, 2025
img
দাওয়াত না পাওয়ায় মাদ্রাসার অনুষ্ঠানের খাবার খেয়ে নষ্ট করে দিলেন বিএনপি নেতাকর্মীরা Sep 15, 2025
img
সেলেনা গোমেজের নতুন গান ‘সিঙ্গেল সুন’ আসছে শিগগিরই! Sep 15, 2025
img
ভিসি স্যারের প্রতি আমার সম্মান বর্তমানেও আছে ভবিষ্যতেও থাকবে: সাহস Sep 15, 2025
img
অ্যাওয়ার্ড অনুষ্ঠানে ‘দৃষ্টিকটু’ পোশাক, ক্ষোভ প্রকাশ করলেন মুক্তি Sep 15, 2025
img
সাকিবের পরিবর্তে দলে যুক্ত হলেন স্কটল্যান্ডের কারি! Sep 15, 2025
img
প্রচলিত ধারার বাইরে গিয়ে সিনেমা শেখাতে চান আমির Sep 15, 2025
img
শেখ হাসিনার মামলায় আর দু’একজনের সাক্ষ্য নেয়া হবে: চিফ প্রসিকিউটর Sep 15, 2025
img
মধ্যপ্রাচ্যে যাচ্ছে ১১ হাজার টন ইলিশ Sep 15, 2025
img
আওয়ামী লীগ আর হিন্দুস্তান একই পথের সাথী: জয়নুল আবদিন ফারুক Sep 15, 2025
“মানুষ সচেতন না হলে, পাসপোর্ট অফিসের দালাল থামবে না!” Sep 15, 2025
img
আপেলের সঙ্গে কমলার তুলনা, ‘সাইয়ারা’ প্রসঙ্গে আমিশা পাটেল Sep 15, 2025
img
পদোন্নতি পাওয়া পুলিশের ৬২ কর্মকর্তাকে একযোগে পদায়ন Sep 15, 2025
img
আ. লীগ ফিরে এলে তোমাদের হাড্ডিও খুঁজে পাওয়া যাবে না : ইলিয়াস Sep 15, 2025
img
শপথ নিলেন নেপালে সুশীলা কার্কির ৩ মন্ত্রী Sep 15, 2025
img
আজানের শব্দে কবর থেকে নড়ে উঠলো নবজাতক, পরিবার পলাতক Sep 15, 2025
img
ইতালিতে ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতার শিকার হন সোহা আলি খান Sep 15, 2025