ইসরায়েলকে সশস্ত্র বাহিনী বড় ধরনের শিক্ষা দিয়েছে: পেজেশকিয়ান

ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসউদ পেজেশকিয়ান বলেছেন, ১২ দিনব্যাপী ইসরায়েলের আগ্রাসনের জবাবে সশস্ত্র বাহিনী দেশটিকে বড় ধরনের শিক্ষা দিয়েছে এবং যুদ্ধের বিস্তার পুরো অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়া থেকে রোধ করেছে।

শুক্রবার (৪ জুলাই) আজারবাইজানের খানকেন্দিতে অনুষ্ঠিত ১৭তম ইকো শীর্ষ সম্মেলনে এক ভাষণে তিনি এ মন্তব্য করেন।

প্রেসিডেন্ট পেজেশকিয়ান বলেন, ‘ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের সশস্ত্র বাহিনী জাতিসংঘ সনদের ৫১ নম্বর অনুচ্ছেদের ভিত্তিতে আত্মরক্ষামূলক সামরিক পদক্ষেপ নিয়েছে।’

তিনি জানান, ইসরায়েল আন্তর্জাতিক আইন এবং জাতিসংঘ সনদের ২(৪) নম্বর অনুচ্ছেদ লঙ্ঘন করে যুদ্ধ শুরু করে। এতে যুক্তরাষ্ট্রও অংশ নেয় এবং ইরানের ছুটিতে থাকা সামরিক কর্মকর্তা, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক, বেসামরিক নাগরিক, শান্তিপূর্ণ পরমাণু স্থাপনা এবং জনগণের অবকাঠামোর ওপর অপরাধমূলক হামলা চালায়। এসব পরমাণু স্থাপনা আন্তর্জাতিক পারমাণবিক শক্তি সংস্থার (আইএইএ) তত্ত্বাবধানে ছিল।

পেজেশকিয়ান ইরানের বিরুদ্ধে ইসরায়েলি আগ্রাসনের সময় ইকো সদস্য দেশগুলোর ‘দায়িত্বশীল অবস্থান’ গ্রহণের জন্য ধন্যবাদ জানান এবং বলেন, চলমান শীর্ষ সম্মেলন আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে ইসরায়েলের যুদ্ধোন্মত্ততার প্রভাব তুলে ধরার একটি গুরুত্বপূর্ণ সুযোগ।

তিনি আজারবাইজানের প্রেসিডেন্ট ইলহাম আলিয়েভের আমন্ত্রণে ইকো সম্মেলনে অংশ নিতে পৌঁছালে তাকে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানানো হয়।

প্রসঙ্গত, ইসরায়েল গত ১৩ জুন রাতে ইরানের ওপর অকারণ ও একতরফা সামরিক আগ্রাসন চালায়। এতে ইরানের বেশ কয়েকজন শীর্ষ সামরিক ও নিরাপত্তা কর্মকর্তা, পরমাণু বিজ্ঞানী এবং সাধারণ মানুষ নিহত হন। ইরানের আবাসিক ভবন ও শান্তিপূর্ণ পরমাণু স্থাপনাও হামলার লক্ষ্যবস্তু হয়।

ওইদিনই ইরান প্রতিশোধের হুঁশিয়ারি দিয়ে ইসরায়েল অধিকৃত ভূখণ্ডে পাল্টা হামলা শুরু করে। তেলআবিব, জেরুজালেম ও হাইফায় একযোগে ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা চালানো হয়।

২২ জুন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ইরানের আকাশসীমা লঙ্ঘন করে তিনটি পরমাণু স্থাপনায় হামলা চালায়। পরদিন ইরান কাতারে অবস্থিত যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় সামরিক ঘাঁটিতে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায়। পরে ২৪ জুন যুদ্ধবিরতিতে যায় দুই দেশ।

ইরানি সরকারের হিসাব অনুযায়ী, ইসরায়েলি হামলায় অন্তত ৯৩৫ জন ইরানি নাগরিক নিহত হন, যাদের মধ্যে ১৪০ জন নারী ও শিশু। আহত হন আরও ৫ হাজার ৬৪০ জনের বেশি।

সূত্র: আইআরএনএ

এমআর 

Share this news on:

সর্বশেষ

img

মোস্তফা ফিরোজ

সবাইকে খুশি রাখতে গিয়ে কারো মন পেলেন না ড. মুহাম্মদ ইউনূস Nov 09, 2025
রাজশাহীর ফুটপাত উচ্ছেদে ব্যবসায়ীদের ক্ষোভ Nov 09, 2025
img
‘কফি উইথ করণ’-এ বিরাট কোহলির না থাকার কারণ জানালেন করণ জোহর Nov 09, 2025
img
বদলে গেল আয়ুশ্মান-শর্বরীর সিনেমার নাম Nov 09, 2025
img
‘রাউডি রাঠোরের’ সিক্যুয়েল আসছে ১২ বছর পর Nov 09, 2025
img
জোহরান মামদানির নাগরিকত্ব বাতিলের দাবি তুলছে ট্রাম্পের দল Nov 09, 2025
img
জলবায়ু সম্মেলনে আমন্ত্রণ না পেয়ে হতাশ আফগান সরকার Nov 09, 2025
img
ধানের শীষ আর দাঁড়িপাল্লার মধ্যে আপনাদের বেছে নিতে হবে: মির্জা ফখরুল Nov 09, 2025
img
চাঁদপুরে নদীর পাঙাশ প্রতি কেজি ৯০০ টাকা Nov 09, 2025
img
মেট্রোরেল কর্মীদের সব ছুটি বাতিল, বাড়তি সতর্কতা জারি Nov 09, 2025
img
শিল্পবোধ সম্পন্ন মানুষ ধ্বংসের পক্ষে থাকে না : মোশাররফ করিম Nov 09, 2025
img
গভর্নরের পাঁচ ব্যাংক শেয়ার শূন্যের ঘোষণা চূড়ান্ত নয় : অর্থ উপদেষ্টা Nov 09, 2025
img
তামিম ও শান্তকে দলে ভেড়াল রাজশাহী ওয়ারিয়র্স Nov 09, 2025
img
সরকারের আশ্বাসে আপাতত স্থগিত প্রাথমিক শিক্ষকদের কর্মবিরতি Nov 09, 2025
img
জাহানারার অভিযোগের সুষ্ঠু তদন্ত চায় টিআইবি Nov 09, 2025
বিএনপির মনোনয়ন বঞ্চিত ইয়াসিনের মনোনয়ন দাবিতে সংবাদ সম্মেলন Nov 09, 2025
বিএনপির রাজনীতি সেগুন গাছ—নাসীরুদ্দীনের রাজনীতি কলাগাছ Nov 09, 2025
img
পলিথিন-শব্দ-বায়ুদূষণ কমাতে পরিবেশ অধিদপ্তরের অভিযান Nov 09, 2025
img
‘আমরা আপনাদের থেকে ক্ষমা চাচ্ছি’ Nov 09, 2025
img
রাজনাথ সিংয়ের বক্তব্যের কড়া জবাব ঢাকার Nov 09, 2025